চট্রগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “শুদ্ধ প্রতিকৃতিতে“ ভালবাসা দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা আর ভালবাসা জানিয়ে ছবি বিকৃতির প্রতিবাদ জানিয়েছে জাগ্রত ছাত্র যুব জনতা। দেশ বরণ্যে শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক বালাগাত উল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম সুজন সহ বিশিষ্ট জনেরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেন।
সংসদ সদস্য এম.এ লতিফের ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি নিয়ে চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে প্রতিবাদের মধ্যে এবারের ভালবাসা দিবসে জাগ্রত ছাত্র ও যুব জনতা এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালণ করেছে। কর্মসূচির মূল প্রতিপাদ্য ‘আমাদের ভালবাসা, আমাদের জাতির পিতা। খ্যাতিমান আলোকচিত্রী পাভেল রহমানের তোলা বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ ৮ ফুট প্রতিকৃতি দিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পাশে বানানো মঞ্চে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় জাগ্রত ছাত্র যুব জনতার আহ্বায়ক এ এস এ জাহিদ হোসেন এর সভাপতিত্বে ও আবদুর রহিম জিল্লুর সঞ্চালনায় কর্মসূচি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। মিছিলে গুলি চালিয়ে জয়নাল, কাঞ্চন, মোজাম্মেল, দিপালি সহ অনেককে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেদিন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতা রুখে দাঁড়িয়েছিল। সেদিন যারা আত্মাহুতি দিয়েছিল আমরা তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
তিনি বলেন, পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে ভালবাসা দিবস। আপনারা জানেন বর্তমান সংসদে থাকা এক কুলাঙ্গার সাংসদ এম এ লতিফ আমাদের জাতির পিতাকে অপমান করেছে। সে নিজের শরীরে বঙ্গবন্ধুর মুখ লাগিয়ে পুরো জাতিকে অপমান করেছে। আমাদের জাতির পিতাকে যেভাবে অবমাননা করা হয়েছে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সন্তান তাদের সবার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা আবেগাক্রান্ত হয়েছি। তাই ভালবাসা দিবসে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণের মধ্য দিয়ে আমাদের হৃদয়ের ভালবাসা জানানোর আয়োজন করেছি।
এর পর ড. অনুপম সেন আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় শেখ শেখ শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম সেøাগান দেওয়া হয়। এরপর সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ মেলান। ড.অনুপম সেন বলেন, বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে একজন মানুষ বাঙালিকে তার আত্মপরিচয় এনে দিয়েছেন, এনে দিয়েছেন স্বাধীন সত্তা। রাজতন্ত্র নয়, তিনি জনগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আমাদের জাতির পিতা। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালি জাতিকে যা দিয়েছেন এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারে না। “আমরা আর কাকে বেশি ভালবাসব”? যে মানুষটি মানুষকে ভালবেসে জীবনের ১২টি বছর কারা অন্তরালে কাটিয়েছেন, যে মানুষটি সারা জীবন মানুষকে ভালবেসে গেছেন, মানুষকে ভালবেসে যিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রতিক্রিয়াশীলদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন তাকে ছাড়া আমরা আর কাকে বেশি ভালবাসবো। আজকের ভালবাসার দিনে আমাদের সব ভালবাসা আমরা তাকে উৎসর্গ করেছি। মঞ্চে “যারা জাতির পিতার প্রতিকৃতি বিকৃত করে আমরা তাদের ঘৃণা করি।” লেখা একটি সাদা ব্যনার রেখে গণ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। ড. অনুপম সেন স্বাক্ষর দিয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
দিনব্যাপী এই আয়োজনে বিকাল ৫টা থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা পাঠের আসর। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে রঙ্গীন মোমবাতি প্রজ্ব¦লন করা হয়। সামাজিক সংগঠন নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক এ কে এম বেলায়েত হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক বালাগাত উল্লাহ, সোহেল সাকুর, এডভোকেট শংকর প্রসাদ দে, ৮০’র দশকের সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মোহাম্মদ শমসের, জামশেদুল আলম চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন, মাহবুবুল হক চৌধুরী এটলী, মাহবুবুল হক সুমন, নুরুল কবির, মো: সেলিম, মোরশেদ আলম, ফরহান আহমেদ, শওকত হোসাইন, মাঈনুল হক লিমন, রেজাউল করিম সোহেল, আব্দুস সালাম মাসুম, এনামুল হক মিলন, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সাইফুল্লাহ আনসারী, রাকিবুল আলম সাজ্জি, ইমরান আহমেদ ইমু, আবদুল খালেক, নাঈম রনি, একরামুল হক রাসেল, জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, আ ফ ম সাইফুদ্দিন, নোমান চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম শহিদ, নাঈমুল হাসান, সুজন বর্মণ, দীপঙ্কর সোম শান্তু, মনিরুল হক মুন্না।