৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

“ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ে আরো দুই বছর সময় দেয়া উচিত”

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে শেয়ারবাজারের বিকাশ ও স্থিতিশীলতার বিকল্প নেই। বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ে আরো দুই বছর সময় দেয়া উচিত বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াতে দেশীয় কোম্পানির পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে  এখানে নিয়ে আসা দরকার বলে মনে করছেন তিনি।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল শনিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তোফায়েল আহমেদ। বিএবির আহ্বায়ক আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহ্মাদ, ডিএসইর সভাপতি সাবেক বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক স্বপন কুমার বালাসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সেবা খাতে ৫৪ শতাংশ ও শিল্প খাতে ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। এ দুই খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বেসরকারি বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বেসরকারি বিনিয়োগের প্রধান মাধ্যম শেয়ারবাজার। ২০১০ সালে বাজারের বিরূপ আচরণের কারণে অধিকাংশ লোক এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ প্রত্যাহার করায় এ সংকট আরো তীব্র হয়েছে। বিভিন্ন উদ্যোগ ও আইনি পদক্ষেপের ফলে বাজার অনেকটা স্থিতিশীল। বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের সময়সীমা ২০১৬ সালে শেষ না করে আরো দুই বছর বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশে ইউনিলিভার, নেসলেসহ বহুজাতিক অনেক কোম্পানি ব্যবসা করছে। দেশীয় কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসার ভাগ শেয়ারবাজারের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দিলেও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এসব কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে নিয়ে এলে একদিকে যেমন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মুনাফার অংশীদার হতে পারবে, অন্যদিকে বাজারের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে।

অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন বলেন, উন্নত মনিটরিং সেল, সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার, ডিমিউচুয়ালাইজেশন চালুসহ বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ায় শেয়ারবাজার এখন যেকোনো সময়ের তুলনায় স্থিতিশীল। বিশ্বের উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। স্থিতিশীল অবস্থার কারণে বিদেশীরাও এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি অনেক বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে শেয়ারবাজার বিকাশের বিকল্প নেই।

ডিএসই সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে ব্রোকারসদের নিয়ে একটি সংগঠনের প্রয়োজন ছিল। বাজারের স্থিতিশীলতা ও নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন বাজারে বেচাকেনার পাশাপাশি সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবেন বলে আশা করেন তিনি।

সভাপতির বক্তৃতায় সংগঠনটির সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বাজার সম্পর্কে সচেতন করতে এ সংগঠন কাজ করবে। এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে ৬৪টি জেলায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ