একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতনের শিকার নারী এবং যুদ্ধ শিশুদের তালিকা তৈরি করে সরকারকে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল।
একই সঙ্গে তাদের যথাযথ সম্মান এবং সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আদালত। মানবতাবিরোধী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব কথা বলেন ট্রাইব্যুনাল।
এই পর্যবেক্ষণকে যুগান্তকারী বলে মত দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। আর তদন্ত সংস্থা বলছে, দু-একদিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের বিধানটি ট্রাইব্যুনালের আইনে অন্তর্ভুক্ত করে আইন সংশোধনের দাবি জানাবেন তারা।
২০১০ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। প্রতিটি মামলার রায়ে ট্রাইব্যুনাল বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিলেও, সর্বশেষ জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মোহাম্মাদ কায়সারের রায়ে, মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষণের শিকার নারী এবং যুদ্ধশিশুদের নিয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান ট্রাইব্যুনালের আইনে নেই। তবে নির্যাতিত এসব নারী এবং যুদ্ধ শিশুদের তালিকা তৈরি করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে।
এ সম্পর্কে আইনজীবী তুরিন আফরোজ বলেন, ‘বুলেটের আঘাতের চেয়ে ধর্ষণের আঘাত অনেক বেশি স্থায়ী এবং একজন ধর্ষিতাকে শুধু ৭১-এ নয় আজীবন এই ক্ষত তাকে বয়ে বেড়াতে হয়। আর যুদ্ধশিশুদের ব্যাপারে সমাজ সকল সময়ই নিরব থেকেছে। এদের উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প ঠিক করে তার মাধ্যমে এই সকল নারী শিশুদের প্রতি যেন আমরা যোগ্য সম্মান দেখাতে পারি তার জন্য কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে।’
দু-একদিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের এমন পর্যবেক্ষণের আলোকে ক্ষতিপূরণের বিধানটি ট্রাইব্যুনালের আইন অন্তর্ভুক্ত করে আইন সংশোধনের দাবি জানাবে বলে জানান ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান।