১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলার ছাড়িয়েছে, ইতিহাসে এই প্রথম

নতুন উচ্চতায় উঠেছে বিটকয়েন। ইতিহাসে এই প্রথম বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলার অতিক্রম করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিটকয়েনের পালে যে হাওয়া লাগা শুরু হয়, তার ধারাবাহিকতা চলছে।
বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলারে ওঠার পেছনেও ট্রাম্পের একটি ঘোষণা অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলে বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে। সেটা হলো, ওয়াল স্ট্রিটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক কমিশনার পল অ্যাটকিন্সের নাম ঘোষণা। এই ব্যক্তি ক্রিপ্টোকারেন্সি বান্ধব হিসেবে পরিচিত। এখন যিনি এসিইসির কমিশনার, সেই গ্যারি জেন্সলারের তুলনায় তিনি অধিকতর বিটকয়েক বান্ধব।
বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলারে উঠে যাওয়ায় ক্রিপ্টোকারেন্সি ভক্তরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
বিটকয়েনের দাম সব সময় ওঠানামা করে। সে কারণে মানুষের মধ্যেও বিটকয়েনের প্রতি আকর্ষণ আছে। বিটকয়েনের বিনিয়োগকারীরা দাম বাড়লে যেমন উল্লাস প্রকাশ করেন, তেমনি দাম কমলে ধৈর্যের পরিচয় দেন।
সামগ্রিকভাবে বিটকয়েনের দাম ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধির অর্থ হলো, ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ছে। বিটকয়েনের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিকভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার মূলধন বেড়েছে। কয়েন মার্কেট ক্যাপের তথ্যানুসারে, ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার মূলধন এখন ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন বা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার।
২০২১ সালেও ডোনাল্ড ট্রাম্প বিটকয়েনকে একধরনের জালিয়াতি মনে করতেন। এরপর ট্রাম্পের মতি পাল্টেছে। এবারের নির্বাচনের অঙ্গীকারে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের ক্রিপ্টোকারেন্সির রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছেন।
বিটকয়েনের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা উল্লেখযোগ্য ঘটনা বটে। এখন বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলার অতিক্রম করে যাওয়ার অর্থ হলো, গত ৫ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনের দিন থেকে এই মুদ্রার দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। সেই সঙ্গে চলতি বছরের প্রথম ভাগের তুলনায় এই মুদ্রার দাম দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
বিটকয়েনের এমন উল্কার গতিতে উত্থান সত্ত্বেও এক গভীর রহস্য অনুদ্ঘাটিত থেকে গেছে। সেটা হলো, এর প্রতিষ্ঠাতা রহস্যময় সাতোশি নাকামোটোর প্রকৃত পরিচয় এখনো কেউ জানেন না।
অনেক মানুষ এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন, যদিও এখন পর্যন্ত কেউ সফল হতে পারেননি। গত অক্টোবরে এই রহস্য নিয়ে এইচবিও চ্যানেলে বড় পরিসরের তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়, যেখানে দাবি করা হয়, কানাডার বিটকয়েন বিশেষজ্ঞ পিটার টডই সম্ভবত সাতোশি নাকামোটো। কিন্তু সমস্যা সেই একটি, পিটার টড নিজেই এ দাবি অস্বীকার করেন এবং ক্রিপ্টো দুনিয়ার মানুষেরাও এইচবিওর এই দাবিতে গুরুত্ব দেয়নি।
যুক্তরাজ্যের এক জরিপে দেখা গেছে, এখন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যেমন শিক্ষক, ব্যাংকার, নার্স ও আইটি পেশাদারেরা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে একসময় কারেন্সি যে শুধু প্রযুক্তি জগতের মানুষের বিনিয়োগ ক্ষেত্র হিসেবে মনে করা হতো, সেই ধরাবাঁধা চিত্রটা পাল্টে গেছে। এই শ্রেণির মানুষেরা মনে করছেন, বিপুল পরিমাণে ব্যক্তিগত সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের সেরা মাধ্যম। মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই বলেছেন, প্রথাগত আর্থিক ব্যবস্থায় তাঁদের আস্থা কমে গেছে। সে কারণে তাঁরা নিজেদের জীবনের লক্ষ্য পূরণের জন্য এই মুদ্রা কেনার দিকে ছুটছেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ