জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে আজ রাতে বৈঠকে বসেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৈঠকে দলের ষষ্ঠ কাউন্সিল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন ও গঠনতন্ত্র সংশোধনসহ কাউন্সিলের আগে করণীয়সহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয় শেষ হয় রাত ১১টায়। বৈঠকের আলোচনার বিষয় ও সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার জানানো হবে। বেলা একটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকের আলোচনার বিষয় ও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হবে।
তবে গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সুষ্ঠুভাবে কাউন্সিল সম্পন্নের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া গঠনতন্ত্র সংশোধন ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত ৫ম কাউন্সিলের আদলে এবারও ১২টি উপকমিটি করা হবে। আগের কমিটির নেতৃত্বে যারা ছিলেন এবার তাতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।[ad id=”28167″]
তবে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা দেশের বাইরে থাকায় তার জায়গায় অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এছাড়া কাউন্সিলের আগে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস মুক্তি না পেলে তার জায়গায় অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।
বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যু্ক্ত দলটির একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘আজকের বৈঠকে উপকমিটিগুলো চূড়ান্ত করা হবে। একইসঙ্গে যেসব জেলা কমিটি কাউন্সিলের আগে করা সম্ভব, তা কিভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ১২ উপকমিটির খসড়া তালিকায় গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র সংশোধন উপকমিটির প্রধান করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামকে। অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।
ব্যবস্থাপনা উপকমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। চেয়ারপারসন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে পারেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান টিএইচ খান। তার শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন এ দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা উপকমিটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, আপ্যায়ন উপকমিটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস নেতৃত্বে থাকছেন বলে জানা গেছে। যদিও তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া প্রচার উপকমিটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উপকমিটিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান ও গঠনতন্ত্রের খসড়াসহ যাবতীয় ড্রাফটিংয়ের দায়িত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে রাখা হয়েছে।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান প্রকাশনা উপকমিটিতে, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু অর্থ উপকমিটিতে, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন স্বাস্থ্য ও সেবা উপকমিটির আহ্বায়ক থাকছেন।
দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অফিস ও যোগাযোগ উপকমিটির আহ্বায়ক পদে রাখা হয়েছে। সংস্কৃতি উপকমিটিতে রাখা হয়েছে বিএনপির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক গাজী মাজহারুল আনোয়ার।
এছাড়া যোগাযোগসহ আরও কিছু উপকমিটিতে দায়িত্ব বণ্টনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে খালেদা জিয়া উপকমিটিগুলো চূড়ান্ত করবেন বলে জানা গেছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) বলেন, ‘কাউন্সিলের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে কাউন্সিলরদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে যেসব টিম কাউন্সিল সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবে শিগগিরই তা চূড়ান্ত করা হবে। আশা করি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
Posted by earthnews24 on Wednesday, February 10, 2016