অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর অনিশ্চয়তায় পড়ার পর থেকেই আলোচনাটা শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেকেই রসিকতা করে বলা শুরু করেছিলেন কথাটা—অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছে না, কারণ তারা ভয় পাচ্ছে মুশফিক-বাহিনীকে। সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর এমন আলোচনা অন্যমাত্রা পেলেও চিন্তাশীল ক্রিকেটপ্রেমীরা একে সমর্থকদের বাঁধভাঙা আবেগের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছিলেন।
অনেকেই ব্যাপারটায় বোধ করেছেন বিরক্ত, ‘বলে কী! অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে ভয় পাচ্ছে! ছেলেমানুষিরও একটা সীমা আছে!’
কিন্তু বাংলাদেশের ‘আবেগী’ সমর্থকদের কথারই যে প্রতিধ্বনি তুলেছেন সাবেক অস্ট্রেলীয় গ্রেট ডিন জোনস। শুক্রবার সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে লেখা এক কলামে তিনি বিস্ফোরণই ঘটিয়েছেন। লিখেছেন, বাংলাদেশে না এসে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দল রীতিমতো লজ্জা এড়িয়েছে।’
তিনি তাঁর কলামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক ফর্মের প্রসঙ্গেই এ কথা বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ সফরে গেলেই অস্ট্রেলিয়াকে হারতে হতো। বাংলাদেশ সম্প্রতি সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে আছে। উপমহাদেশে অস্ট্রেলীয় দলের পারফরম্যান্সের ইতিহাস বিবেচনা করেই আমি মনে করি অনভিজ্ঞ দল নিয়ে বাংলাদেশে গেলে বিব্রতই হতে হতো অস্ট্রেলিয়াকে।’
বাংলাদেশ সফরের জন্য ঘোষিত দলটি নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্টি আছে জোনসের। তাঁর মতে, ‘ঘোষিত অস্ট্রেলীয় দলটির মিডল অর্ডারে সমস্যা আছে। টপ অর্ডারে ডেভিড ওয়ার্নার আর ক্রিস রজার্সের থাকার কথা ছিল না। স্টিভেন স্মিথই মিডল অর্ডারে একমাত্র নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। শন মার্শের উপমহাদেশে টেস্ট সেঞ্চুরি থাকলেও সে যথেষ্ট অধারাবাহিক। বাংলাদেশের উইকেটে এই দল অবশ্যই বিপদে পড়ত।’
বোলিং লাইন আপে মিচেল স্টার্ক, নাথান লায়ন বাংলাদেশে কী করতেন সেটা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ আছে জোনসের, ‘স্টার্কের গোড়ালিতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। উপমহাদেশে লায়নের বোলিং গড় ৫০-এর কাছাকাছি। অ্যান্ড্রু ফেকেটের সামর্থ্য পরীক্ষিত নয়। আর স্টেফান ও’কিফ ও অ্যাস্টন অ্যাগার তো দলেই থিতু নয়।’
বাংলাদেশ সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার সামনে এখন নিউজিল্যান্ডের চ্যালেঞ্জ। সিরিজটি অস্ট্রেলিয়ার নতুন চেহারার দলটির জন্য যথেষ্ট পরীক্ষার হবে বলেই মনে করেন জোনস, ‘অস্ট্রেলিয়া দলটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। সিরিজটি অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের জন্য যথেষ্ট কঠিনই হবে। নতুনদের জন্য এটি অগ্নিপরীক্ষা। তারা কতটা ভালো, সেটার একটা বোঝা যাবে এই সিরিজে। আমার মনে হয়, এবারের নিউজিল্যান্ড দলটি অস্ট্রেলিয়া সফরে আসা সবচেয়ে সেরা কিউই ক্রিকেট দল।’
