[english_date]

বলিভিয়া এবং ব্রাজিলের মিলনস্থলে গভীর জঙ্গলের ভিতরে গোপন রহস্যময় শহর !

ইনকাদের রান্না করার বাসনেও নাকি বসানো থাকত দুর্মূল্য পাথর | দক্ষিণ আমেরিকার গহনে ছিল এই সূর্যসন্তানদের একান্ত সভ্যতা | কিন্তু একদিন সেখানেও পড়ল সাম্রাজ্যবাদীদের লোলুপ দৃষ্টি | স্প্যানিশ অভিযাত্রীদের লুঠ থেকে বাঁচাতে নিজেদের স্বর্ণ এবং রত্ন ভাণ্ডার কোনও এক গোপন রহস্যময় শহরে লুকিয়ে রেখেছিল ইনকারা | সেই শহরের নাম অভিযাত্রীদের মুখে মুখে হয়ে যায় পাইতিতি | যুগ যুগ ধরে সেই গুপ্তধনের নগরী খুঁজে বেড়াচ্ছে অভিযাত্রীরা |

কোথায় সেই সোনার শহরের অবস্থান ? নির্দিষ্ট ভাবে কেউ জানে না | তবে মনে করা হয়‚ পেরু‚ বলিভিয়া এবং ব্রাজিলের মিলনস্থলে গভীর জঙ্গলের ভিতরে ছিল সেই গোপন শহর | যেখানে ধনসম্পত্তি লুকিয়ে রেখেছিল ইনকারা | স্থানীয় কোহেচুয়া ভাষায় পাইতিতি কথার অর্থ হল ‘ হোম অফ দ্য জাগুয়ার ফাদার‘ | এই শহরই কি কিংবদন্তির এল ডোরাডো ? সে বিষয়েও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারে না কিছুই |

২০০১ সালে রোমের এক পাঠাগারে আবিষ্কৃত হয় ধুলোমাখা একটি নথি | ১৭ শতকের সেই নথি লিপিবদ্ধ করেছেন জনৈক ধর্মযাজক আন্দ্রিয়া লোপেজ | সেখানে তিনি লিখেছেন পাইতিতি শহরের কথা | প্রভাবশালী রাজার শাসনে থাকা সেই শহরের অমিত ধনসম্পত্তির কথা | কিন্তু কোথায় সেই শহর‚ যেখানে লুকোনো আছে রাশি রাশি সোনা ? নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান দিতে পারেননি যাজক | শুধু বলে গেছেন পেরু থেকে ১০ দিনের হাঁটাপথ | কিন্তু কোন দিকে ? পেরুর কোন শহর থেকে ? কিছুই বলে যাননি তিনি |

গুপ্তধন সন্ধানীদের একাংশ বলে‚ ভ্যাটিকান জানে কোথায় আছে এই শহর | কিন্তু তারা প্রকাশ করতে দেয় না | যদি সেই স্বর্ণভাণ্ডার মানুষের হাতে এসে পড়ে তাহলে ভালর থেকে মন্দি বেশি হবে বলে মনে করা হয় | তবে সোনা ঝরা সেই দিনে ফিরে যেতে অভিযান কিছু কম হয়নি | ব্যক্তিগত উদ্যোগ তো বটেই | এল ডোরাডোর সন্ধান পেতে গত ১০০ বছরে নানা দেশের সংগঠিত অভিযানই হয়েছে অন্তত ১৪ টি | অভিযানের ফলে ঘন বৃষ্টি অরণ্যের মাঝে পাওয়া গেছে ইনকা সভ্যতার বহু নিদর্শন | কিন্তু দেখা পাওয়া যায়নি গুপ্তধন ভাণ্ডার সমেত ‘এল ডোরাডোর‘ বা ‘পাইতিতির‘ | আবার অনেক সময়েই ঘন জঙ্গল থেকে আর বেরোতে পারেননি অভিযাত্রীরা | ১৯৭১ সালে গহিন জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছিলেন ফরাসি এবং মার্কিন অভিযাত্রীরা | ১৯৯৭ তে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নরওয়ের অভিযাত্রীরা |

তবু আমাজন অরণ্যের মাঝে চলে অভিযান | অভিযাত্রীদের উৎসাহ বাড়িয়েছে মাচুপিচু | ১৯১১ সালে  আবিষ্কৃত হয় হারিয়ে যাওয়া এই ইনকা-শহর | উরুবাম্বা নদী অববাহিকায় খাড়াই পাহাড়ের উপর তাকে খুঁজে পান অভিযাত্রী বিংহ্যাম | কী কারণে এই পবিত্র স্থান নির্মাণ করেছিল ইনকারা‚ আজও রহ্স্যাবৃত | তাই‚ অভিযাত্রীদের বক্তব্য‚ কিংবদন্তির মাচুপিচু যদি আবিষ্কৃত হয়‚ তাহলে সোনার শহর এল ডোরাডো বা পাইতিতিকেই বা খুঁজে পাওয়া যাবে না কেন ? অতএব খ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশপাথর |

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ