[english_date]

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা রূপায়নে “বন্দর মুজিব প্রকল্প” হতে পারে এক বৃহৎ মাধ্যম

ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল আলম: বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা রূপায়ন ও চট্টগ্রামকে প্রকৃত বাণিজ্যিক রাজধানী বিনির্মানে “বন্দর মুজিব প্রকল্প”।সূদর প্রসারী চিন্তা করলে বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশের জন্য বে-টার্মিনাল নয় একটি সমুদ্র বন্দর জরুরী।সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে নিজস্ব অর্থায়নে নৌ ও সমুদ্র বন্দর সংস্কারপূর্বক সম্প্রসারণ করা সম্ভব। সম্প্রতি বে টার্মিনাল নিয়ে যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই টার্মিনালটি হতে চলছে। অদুর ভবিষ্যত চিন্তা করলে আমার বোধগম্য হচ্ছেনা প্রচুর অর্থব্যায়ে নির্মিত এই টার্মিনাল জনগনের কতটুকু উপকারে আসবে। অস্বীকার করছিনা সাময়িক একটু উপকৃত হবে। কিন্তু জনবহুল এই দেশে সাময়িক উপকারের জন্য প্রচুর অর্থব্যায় করে, আমার মতে অস্থায়ী একটি উদ্যেগ গ্রহণ করা বোকামী । বরঞ্চ যে জায়গায় বে- টার্মিনাল পরিকল্পনা করা হয়েছে উক্ত জায়গাটিতে সূদুর প্রসারী স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করে জনবান্ধব ও ব্যবসা বান্ধব একটি “নতুন বন্দর করা যায়”। যা নির্মাণ করতে বিদেশী কোন সাহায্যর প্রয়োজন হবেনা। নিজস্ব অর্থায়নে এবং নিজস্ব মেধায় তা নির্মাণ করা সম্ভব। যাতে দেশ পাবে অহেতুক অর্থব্যায় থেকে নিস্কৃতি এবং স্থায়ী একটি সমাধান। এমনকি পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ বন্দরগুলির একটি হবে চট্টগ্রামের পরিকল্পিত “বন্দর মুজিব”

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম মুলক উন্নয়ণ কর্মকান্ডের সদিচ্ছা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একজন দেশের নাগরিক হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াসে -আমি আমার নিজস্ব মেধার ভিত্তিতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, যেখানে দ্বিতীয় বা অন্য কারো মতামত বা পরামর্শের প্রতিফলন ঘটে নাই। আমার প্রকল্পটির নাম করণ করেছি “বন্দর মুজিব প্রকল্প”।
কেন “বন্দর মুজিব” নামকরণ করলাম? এইজন্যই করলাম, যেহেতু-

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান শুধু একক একটি নাম নয়,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একক কোন ব্যক্তির নন,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একক কোন পরিবারের নন,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একক কোন গোষ্ঠির নন,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একক কোন দলের নন,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সমগ্র অতীত বাংলায় বর্তমান বাংলার ও ভবিষ্যৎ বাংলার আপামর জনগণের প্রতীক, বাঙ্গালী জাতির জনক – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান,

“বন্দর মুজিব”প্রকল্প পরিকল্পনা
বন্দর মুজিব কি?-
“বন্দর মুজিব”একটিসামুদ্রিক বন্দর। এই সামুদ্রিক বন্দরে কম পক্ষে পঞ্চাশটি (৫০) হতে উর্দ্ধে তিনশতটি (৩০০) ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক জাহাজ একসঙ্গেঁ পণ্য ভর্তি ও খালাস করতে পারবে, সেইভাবে তিন (০৩) পদ্ধতিতে পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বিজ্ঞজনরা পরিকল্পনাটি বিবেচনা করে দেখতে পারেন।

কেন নতুন বন্দরের প্রয়োজনঃ
এই বাংলাদেশে বর্তমানে দুইটি (০২) সামুদ্রিক বন্দর কার্যক্ষম আছে – একটি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর এবং অন্যটি মঙ্গলা সমুদ্র বন্দর। বর্তমানে আরও দুইটি (০২) গভীর সমুদ্র বন্দর তড়িঘড়ি করে নির্মাণ করা হয়েছে। তার যৌক্তিকতা ও কার্য্যকারীতা কতটুকু আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতের লাভজনক ভাবে চাহিদা মেটাতে পারবে তাহা প্রশ্নাতীত। আমার মতে যে সকল সমুদ্র বন্দর আছে তাতে আমাদের আমদানি-রপ্তানি পণ্য মাত্র তিন (০৩) ভাগের এক (০১) ভাগ পণ্য সরবরাহের ক্ষমতা ধারণ করে। এর প্রমাণ স্বরূপ উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতার পর হতে আমাদের দুইটি (০২) সামুদ্রিক বন্দর যথাক্রমে চট্টগ্রাম বন্দর ও মঙ্গলা বন্দররে জাহাজের জন্য জেটির কোন উন্নতি হয়নি।
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নঙ্গরে প্রতিনিয়তই প্রায় চল্লিশ (৪০) হতে পঞ্চাশোর্দ্ধ (+৫০) জাহাজ পণ্য ভর্তি ও খালাসের অপেক্ষায় থাকে।
চট্টগ্রাম বন্দরের কর্ণফুলী নদীতে সমুদ্রগামী জাহাজের জন্য মোট জেটি ত্রিশটি (৩০), যাহা সংস্কারের পর বর্তমানে বিভিন্ন ক্যটাগরীতে আছে সাধারণ পণ্যবাহী তেরোটি (১৩), কন্টেইনারবাহী চারটি (০৪), তেল বা রাসায়নিকবাহী ট্যাংকার চারটি (০৪), সাইলো দুইটি (০২),সিমেন্ট একটি (০১), মুরিং তিনটি (০৩) টিএসপি একটি (০১) এবং নদীর অপর পাড়ে কাফকো দুইটি (০২) জেটি নির্ধারিত আছে।
বর্তমানে কর্ণফুলী নদীতে স্থানাভাবের ও অবকাঠামো স্থাপনের কারণে আর কোন জেটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়ে উঠে নাই। ভবিষ্যতে নদীর তলদেশের টানেল রোডের বদৌলতে যদি বর্তমান জেটির অপর পাড়ে হয়তো কয়েকটি জেটি নির্মাণ সম্ভব হতে পারে। তবুও স্বাধীনতার পর হতে এখন পর্যন্ত যতগুলি জাহাজ প্রতি নিয়ত চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নঙ্গরে অবস্থান নেয় ততগুলি জাহাজের বা তার তিন ভাগের এক ভাগের জন্যও নয়, বহির্নঙ্গরে দীর্ঘ সময় অবস্থানের কারণে বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সাথে সময়ের তাল মিলিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজগুলি তাদের শিডিউল ঠিক রাখতে পারে না, যার আর্থিক লোকসানের ক্ষতিপূরণ গুনতে হয় এদেশের সরকার ও জনগণকে।

এখানে আরেকটি বিষয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, সদ্য নির্মিত বিপুল অর্থ ব্যয়ে গভীর সমুদ্র বন্দরদ্বয় আমাদের ভোক্তাদের কোন লাভ বা সুফল আনতে পারবে না, বরং লাভ ও সুফল হবে দেশী-বিদেশী পণ্য বহনকারী ব্যবসায়ীদের। স্বল্প মূল্যে ও সহজে কোন পণ্যই ভোক্তাদের অর্থাৎ এদেশের জনগণের নিকট পৌঁছতে পারবে না, অর্থনীতিবিদগণ হিসাব নিকাশ করে ইহার সুন্দর ব্যখ্য দিতে পারেন।
তবে আমাদের দেশের জনগণের দৈনন্দিন জীবনের জন্য আরো বর্ধিত কর ও ব্যবহারিক সামগ্রী যেমন গ্যস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বৃদ্ধি ঘটিয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপনে বাধ্য হতে হবে। কারণ হিসেবে উপমা দিতে পারি যে একটি LPG ট্যংকার মহেশখালীতে গ্যস নির্গত করলে ঐ মহেশখালীতেই গ্যস ট্যাংক নির্মাণ করতে হবে এবং ব্যবহারকারী চট্টগ্রাম শহর অধিবাসীর জন্য শহরেই গ্যস ট্যংক নির্মাণ করতে হবে। এই দুই স্থানে ট্যংক টু ট্যংক পাইপ লাইন দ্বারা অথবা লরি বা ট্রেন দ্বারা সরবরাহ নিশ্চিত করতে কতগুলো অবকাঠামোর প্রয়োজন হবে। তাহা এই ব্যপারে অভিজ্ঞ বিশ্লেকগণ নির্ধারণ করবেনএবং পাইপ লাইনে সরবরাহ নিশ্চিত করলে পাইপে কতটুকু গ্যস থেকে যাবে বা প্রতি ট্যংকারে কতটুকু সিস্টেম লস থাকবে এবং তার মূল্য ভোক্তাকে বহন করতে হবে। যাহা হউক, চট্টগ্রাম গভীর সমুদ্র বন্দর এদেশের জনগণের এমন কোন উপকারে আসবেনা, যতটুকু অনেক বেশী উপকারে আসবে এই “বন্দর মুজিব” নির্মাণে।

বে-টার্মিনাল প্রসঙ্গেঃ
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবরণে জানতে পারলাম একটি বে টারমিনাল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকগণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পেশ করেছেন। যতটুকু জানতে পেরছি, যে স্থানে বে টারমিনাল করার প্রস্তাব করা হয়েছে ঐ স্থানে অর্থাৎ চট্টগ্রাম ই.পি.জেড. সংলগ্ন নব নির্মিত চার লেন রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বে প্রায় এক কিলোমিটার প্রসস্থ সমুদ্র তট নিয়ে মহীসোপানকে ঘিরে ব্রেক ওয়াটার সিস্টেমে সমুদ্রগামী প্রায় তিনশত (৩০০) জাহাজের একটি বন্দর নামকরণে “বন্দর মুজিব”-এর পরিকল্পনা গত নভেম্বর ২০১৫ সালে করা হয়েছে। যদি ঐ একই স্থানে বে-টার্মিনাল করার প্রস্তাব হয়ে থাকে, তাহলে আমি সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবক ও নীতি নির্ধারকদের নিকট অনুরোধ করবো- তুলনামূলকভাবে ভবিষ্যৎ এই জনবহুল দেশের জন্য বে-টার্মিনাল প্রয়োজন, নাকি তিনশত (৩০০) জাহাজের জন্য পৃথিবীর অদ্বিতীয়একটি সমুদ্র বন্দর প্রয়োজন, তাহা বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশা রাখি।
যদিও প্রচুর বৈদেশিক অর্থায়ণে এই বে-টার্মিনাল নির্মাণে প্রস্তাব করা হয়েছে, ইহা কি একটি ষড়যন্ত্রমূলক নয়?
যাহা অনেক আগেই স্বদেশী অর্থায়ণে পর্যায়ক্রমে “বন্দর মুজিব” নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং যাহা বিভিন্ন ভাবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল, এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকটও এর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছিল। সুতরাং পৃথিবীতে এদেশকে সম্মানের সাথে শক্তিশালী একটি দেশে রূপান্তরিত করার মানসে “বন্দর মুজিব” নির্মাণে সহায়তা করবেন। কারণ একটি দেশ ও জাতি পৃথিবীতে দ্রুত সুপরিচিতি লাভ করার একটি মাত্র পথ – সমুদ্র বন্দর, যেখানে সমগ্র পৃথিবীর সকল জাতিরই আগমন ঘটে নাবিকের মাধ্যমে, ইহা স্বতঃসিদ্ধ, ইতিহাস সাক্ষী।

বন্দর মুজিব পরিকল্পনাঃ

এই“বন্দর মুজিব”-এর প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত জরূরী, এখনই সময় এসেছে এই বন্দর নির্মাণের। প্রকৃতিগতভাবে বাংলাদেশের এমন কোন অঞ্চল বা জায়গা নাই এত বড় বন্দর প্রতিষ্ঠা করার। একটি বন্দরের জন্য যে সকল সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন তাহা চট্টগ্রামের মহেশখালী বা পটুয়াখালীর পায়রাতে পাওয়া যাবে না, যাহা আমার পরিকল্পনায় চট্টগ্রামের সি.ই.পি.জেড. (CEPZ) ) বরাবর পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে সমান্তরালভাবে উত্তর পতেঙ্গা থেকে অন্তত আট(৮) বা সাড়ে আট(৮”১” /”২” )কিলোমিটার উত্তর হালিশহর পর্যন্ত জায়গা নিয়ে অতি সহজ পদ্ধতিতে নির্মাণ করা যাবে।

বঙ্গোপসাগরের পূর্ণভাটিতে পানির গভীরতা যেখানে বিশ(২০) মিটার থেকে পঁচিশ(২৫)মিটার, সেখান হতে দুইশত(২০০)মিটার থেকে তিনশত(৩০০)মিটার চওড়া করে অগভীর স্থানে ড্রেজিং এর সাহায্যে সমুদ্র নির্দেশনা চিহ্ন পূর্বক বন্দরের ব্রেক ওয়াটার হারবারের মুখ পর্যন্ত একটি প্রনালী তৈরী করে সরাসরি আগমন ও বহিরাগমন সমুদ্রগামী জাহাজের পথ নির্দেশনা করে দেওয়া যেতে পারে। ইহার জন্য একটি ভাসমান সমুদ্র পাইলট পয়েন্ট স্থাপন করা যেতে পারে।

তিন পদ্ধতিতে ব্রেক ওয়টার সিস্টেমে “বন্দর মুজিব”-এর পরিকল্পনা করা হয়েছে-

“বন্দর মুজিব”পদ্ধতিঃ

১ঃ এই পদ্ধতিতে সমুদ্রতীরের সমান্তরালভাবে পাঁচ (০৫)-টি জেটি ও চার (০৪)-টি হারবারনামকরণ সহ২৫০মি. ৩০০মি. দৈর্ঘ্যের মোট ৫৩টিজাহাজ এবং ১০০মি. – ১৫০মি. দৈর্ঘ্যের সর্বনিম্ন ছোট জাহাজ মোট ১৫৯টি জাহাজের জন্য জেটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইহা দৈর্ঘ্যে উত্তর পতেঙ্গা থেকে তিন হাজার (৩০০০)মিটার দৈর্ঘ্যে এবং শেড ও অবকাঠামোর জন্য উত্তরে সংযোগে আরও দেড় হাজার (১৫০০)মিটার মোট চার হাজার পাঁচশত (৪৫০০)মিটার ও প্রস্থেপূর্বে নব নির্মিত চার লেনের সড়কের পশ্চিম পার্শ্ব হতে পশ্চিমে সমুদ্রতট পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ করে পূর্ব-পশ্চিমে নয়শত থেকে এক হাজার (৯০০-১০০০)মিটার, আনুমানিক ৪.৫ বর্গকিলোমিটার,

১নং জেটির নামকরণ- “শহীদ সৈয়দ নজরূল ইসলাম জেটি”।
ইহার দৈর্ঘ্যতিন হাজার (৩০০০)মিটার, প্রস্থ পঞ্চাশ (৫০)মিটার ও ধারণক্ষমতা- ৩০০মিটার হতে ২৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায়১০টি জাহাজ, ২৫০মিটার হতে ২০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায়১৫টি জাহাজ,২০০মিটার হতে ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যরেপ্রায় ২০টি জাহাজ ও১৫০মিটার হতে ১০০মিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ৩০টি জাহাজ।
১নং হারবারঃ “হোসেন শহীদ সরোয়ার্দ্দী হারবার” বা “শহীদ শেখ কামাল হারবার”।
ইহার দৈর্ঘ্যদুই হাজার চারশত (২৪০০)মিটার, প্রস্থতিনশত (৩০০)মিটার ও গভীরতা বিশ হতে পঁচিশ (২০-২৫)মিটার।
২নং জেটির নামকরণ- “শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ জেটি”।
ইহার দৈর্ঘ্য দুই হাজার চারশত (২৪০০)মিটার, প্রস্থ পঞ্চাশ (৫০)মিটার ও ধারণক্ষমতা- ৩০০মিটার হতে ২৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ১৬টি জাহাজ, ২৫০মিটার হতে ২০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ২৪টি জাহাজ,২০০মিটার হতে ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায়৩২টি জাহাজ ও১৫০মিটার হতে ১০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ৪৮টি জাহাজ।

২নং হারবারঃ “শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকহারবার” বা “শহীদ শেখ জামাল হারবার”।
ইহার দৈর্ঘ্যদুই হাজার চারশত (২৪০০)মিটার, প্রস্থদুইশত (২০০)মিটার ও গভীরতা বিশ হতে পঁচিশ (২০-২৫)মিটার।
৩নং জেটির নামকরণ- “শহীদ কামরূজ্জামান জেটি”।
ইহার দৈর্ঘ্য দুই হাজার চারশত (২৪০০)মিটার, প্রস্থ পঞ্চাশ (৫০)মিটার ও ধারণক্ষমতা- ৩০০মিটার হতে ২৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ১৬টি জাহাজ, ২৫০মিটার হতে ২০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ২৪টি জাহাজ,২০০মিটার হতে ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায়৩২টি জাহাজ ও১৫০মিটার হতে ১০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ৪৮টি জাহাজ।

৩নং হারবারঃ “মাওলানা ভাসানী হারবার” বা “শহীদ শেখ রাসেল হারবার”।

ইহার দৈর্ঘ্যদুই হাজার চারশত (২৪০০)মিটার, প্রস্থ দুইশত (২০০) মিটার ও গভীরতা বিশ হতে পঁচিশ (২০-২৫)মিটার।

৪নং জেটির নামকরণ- “ক্যপটেন মনসুর আলী জেটি”।
৪নং জেটি ৩নং হারবারের পশ্চিম পার্শ্বে হবে।ইহার দৈর্ঘ্য দুই হাজার চারশত (২৪০০)মিটার, প্রস্থ পঞ্চাশ (৫০)মিটার ও ধারণক্ষমতা- ৩০০মিটার হতে ২৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ০৮টি জাহাজ, ২৫০মিটার হতে ২০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ১২টি জাহাজ,২০০মিটার হতে ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায়১৬টি জাহাজ ও ১৫০মিটার হতে ১০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ২৪টি জাহাজ।

৪নং হারবারঃ “বিদ্রোহী কবি কাজী নজরূল ইসলাম হারবার”।
ইহার দৈর্ঘ্যপূর্ব-পশ্চিমে নয়শত (৯০০)মিটার, প্রস্থ উত্তর-দক্ষিণে ছয়শত (৬০০)মিটার ও গভীরতা বিশ হতে পঁচিশ (২০-২৫)মিটার।
৫নং জেটির নামকরণ- “কবি কাজী নজরূল ইসলামজেটি”।
ইহার দৈর্ঘ্য পূর্ব-পশ্চিমে নয়শত (৯০০)মিটার, প্রস্থ উত্তর-দক্ষিণে পঞ্চাশ (৫০)মিটারও ধারণক্ষমতা- ৩০০মিটার হতে ২৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ০৩টি জাহাজ, ২৫০মিটার হতে ২০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ০৪টি জাহাজ, ২০০মিটার হতে ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায়০৬টি জাহাজ ও ১৫০মিটার হতে ১০০মিটার দৈর্ঘ্যরে প্রায় ০৯টি জাহাজ।

“বন্দর মুজিব”পদ্ধতিঃ ২
এই পদ্ধতিতে সমুদ্র তট থেকে আড়াআড়িভাবে তেরো(১৩)টি জেটি ও বারো(১২)টি জেটি-হারবার এবং পাঁচ(০৫)টি কার্গো শেডসহ অবকাঠামোর জন্য খোলা জায়গা তৈরী করে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছেগুপ্রতিটি জেটির দৈর্ঘ্যপূর্ব-পশ্চিমে নয়শত (৯০০)মিটার ও প্রস্থ উত্তর-দক্ষিণে পঞ্চাশ (৫০)মিটার। হারবার১নং হতে ১০নং এর দৈর্ঘ্যপূর্ব-পশ্চিমে নয়শত (৯০০)মিটার, প্রস্থ উত্তর-দক্ষিণে দুইশত (২০০)মিটার ও গভীরতা বিশ হতে পঁচিশ (২০-২৫)মিটার এবং হারবার ১১নং ও ১২নং এরদৈর্ঘ্য পূর্ব-পশ্চিমে নয়শত (৯০০)মিটার, প্রস্থ উত্তর-দক্ষিণে তিনশত (৩০০)মিটার ও গভীরতা বিশ হতে পঁচিশ (২০-২৫)মিটার।এই পদ্ধতিতে ৩০০মি. দৈর্ঘ্যরে মোট জাহাজ প্রায় ১২টি, ১০০মি. দৈর্ঘ্যরে মোট জাহাজ প্রায় ১৮০টি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বন্দর।
শেড ও অবকাঠামোর জন্য-১নং থেকে ৪নং শেড (৪০০মিঢ৬০০মি), ৫নং শেড (৬০০মিঢ৮০০মি), শেডের মাঝে চওড়া ২০০মিটার করে ৩টি পথ, ১০০মিটার করে ২টি পথ ও (৬০০মিঢ৮০০মি) বন্দর অবকাঠামোর জন্য একটি খোলা জায়গাগু ইহার সীমা উত্তর-দক্ষিণে তিন হাজার ছয়শত (৩৬০০) মিটার ও পূর্ব-পশ্চিমে আটশত (৮০০) মিটার, মোট ২.৮৮ কিলোমিটার স্থান।

“বন্দর মুজিব”পদ্ধতিঃ ৩
এই পদ্ধতিতে পদ্ধতি-১ ও পদ্ধতি-২ সংযুক্তে পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইহাতে মোট আঠারো(১৮)টি জেটি ও ষোল(১৬)টি জেটি-হারবার তৈরী করে এই বন্দরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইহাতে সর্ববৃহৎ ৩০০মি. দৈর্ঘ্যরে মোট ৬৩টি জাহাজ এবং সর্বনিম্ন ১০০মি. দৈর্ঘ্যরে মোট ৩১৫টি জাহাজ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বন্দর।
ইহার সীমারেখা- উত্তর পতেঙ্গা থেকে তিন হাজার (৩০০০)মিটার দৈর্ঘ্যে এবং শেড ও অবকাঠামোর জন্য উত্তরে সংযোগে আরও দেড় হাজার (১৫০০)মিটার মোট চার হাজার পাঁচশত (৪৫০০)মিটার এবং পূর্বে নবনির্মিত চার লেনের সড়কের পশ্চিম পার্শ্ব হতে পশ্চিমে সমুদ্রতট পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ করে পূর্ব-পশ্চিমে ষোলশত(১৬০০) মিটার হারবার ও জেটির জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ব্রেক ওয়াটার হারবারের সীমানা নঙ্গর বাঁধের সাহায্যে জেটি হতে আরও পশ্চিমে এক হাজার (১০০০)মিটার দূরে করা যেতে পারে অথবা নিমজ্জিত মহীসোপানের সমুদ্র সীমানায় করা যেতে পারে।এই পদ্ধতিতে ইহা নির্মাণে বাংলাদেশের “বন্দর মুজিব”পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সমুদ্র বন্দরের একটিতে পরিণত হবে। ইহার নির্মাণ কাজ সহজ পদ্ধতিতে নিজস্ব অর্থায়নে ও স্ব-মেধায় বিদেশী পরামর্শক ব্যতিরেকে ইনশাআল্লাহ করা সম্ভব। এই বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত সমুদ্রগামী জাহাজের জন্য উত্তর দিকে ডক ও শীপ ইয়ার্ডের জন্য আরও প্রায় দুই কিলোমিটার এবং দক্ষিণে নৌ বাহিনীর ড্রাইডক, শীপ ইয়ার্ড ও স্লিপওয়েজের জন্য আরও প্রায় দুই কিলোমিটার, মোট সাড়ে আট হাজার (৮৫০০) মিটার লম্বালম্বি জায়গা সংরক্ষণ করে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সাড়ে আট হাজার (৮৫০০) মিটার উত্তর-দক্ষিণে ওহারবারের ভিতর পূর্ব-পশ্চিমে মোট দুই হাজার চারশত(২৪০০) মিটার ব্রেক ওয়াটার সিস্টেম-এর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই বন্দরে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জাহাজ সহ সরাসরি সকল জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করার অনুকূলে পরিকল্পনা করে“বন্দর মুজিব”নির্মাণ করলে বৈদেশিক ট্রানজিটের সুবিধাসহ সকল প্রকার অবকাঠামো প্রতিস্থাপন করণে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশের অগ্রগতির ভিত মজবুত হবে এবং দেশকে বর্তমান বিশ্বের নানান জটিলতা থেকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হবে।
বিশেষ আকর্ষণঃ

এখানে উল্লেখ্য যে, যেহেতু এই বন্দর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রবন এলাকায় পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেহেতু এই বন্দরের জেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ১০ মিটার বা ৩০ ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করার প্রয়োজন বলে মনে করি। ১নং ও ৩নং পদ্ধতিতে জেটির কার্গো শেড সহ অন্যন্য অবকাঠামোর তেমন কোন জায়গা রাখা হয় নাই। সুতরাং এই পদ্ধতির জেটি সমূহকে জাহাজের কার্গো হোল্ডের অনুকরণে সমুদ্র পৃষ্ঠ হতে ৩০ফুট উচ্চতায় চতুর্দিকে কার্গো হোল্ডের হোল্ডের (Cargo Hold or, Bulk Hold) অনুকরণে কঙ্ক্রীটের ৩ফুট চওড়া ৩০ফুট উচ্চতার দেওয়াল তুলে উপরে ছাদ দিয়ে প্রত্যেক বার্থে কম করে ৫টি করে Water Tight Hatch Cover -এর ন্যয় তৈরী করলে বন্দরের সকল অবকাঠামো সহ গুদামজাত কার্গো যেকোন ঘূর্ণিঝড়ও জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে ইনশাআল্লাহ রক্ষা পাবে। ছাদের নীচের প্রবেশ পথগুলিতে সরূ করে তৈরী করা যেতে পারে, যাতে ১টি ট্রাক বা ১টি ট্রেনের যাতায়াতের জন্য যতটুকু চওড়া জায়গার প্রয়োজন, তাতে Water Tight Tunnel Door ন্যয় Door ও Non-Return Valve দিয়ে ড্রেইনের পাইপ এবং সার্বক্ষণিক বায়ু সঞ্চালনের জন্য Supply I Exhaust Fan প্রয়োজনীয়ভাবে বসানো যেতে পারে। ইহাতে পদ্ধতিগতভাবে স্থাপনা অতি ব্যয়বহুল, কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে অধিক সুফল ও লাভজনক। তাই বন্দর ও বন্দরের যাবতীয় অবকাঠামোসহ গুদামজাত সকল পন্য সামগ্রী সুরক্ষার প্রয়োজনে ইহা অত্যন্ত জরূরী। গৃহীত হলে প্রয়োজনে নকশা সহ পরিকল্পনা করে দেওয়া যাবে। পর্যায়ক্রমে নিজস্ব অর্থআয়নে ইহা স্থাপন করা সম্ভব।
পরিশেষে, বর্তমানে কর্ণফুলীর সমুদ্র বন্দরের জেটির অপ্রতুলতা, বহির্নঙ্গরের বিড়ম্বনা ও আমদানী রপ্তানীর পণ্যের সঞ্চালনের সমস্যা নিয়ে, বিভিন্ন মিডিয়া ও পত্রিকার মাধ্যমে, দেশের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী মহল, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ ও বিশেষজ্ঞজনদের অনেক আলোচনা-সমালোচনাসহ বিভিন্ন মতামতের প্রতিফলন ঘটতে দেখা যায়। কিন্তু এহেন ভোগান্তির থেকে চিরতরে কিভাবে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দেওয়া যায় তার কোন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা আজ পর্যন্ত মিলেনি। তাই আমি আমার এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে উক্ত সকল বিজ্ঞ ও জ্ঞানীজনদের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক জানাচ্ছি যে, আপনারা এই “বন্দর মুজিব”প্রতিস্থাপন বা নির্মাণের মাধ্যমে আপনাদের বন্দর জাতীয় সকল সমস্যর সমাধান খুঁজে পাবেন। সুতরাং “বন্দর মুজিব”নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে তাহা বাস্তবায়নের জন্য সচেষ্ট হউন। এজন্য যাবতীয় যে কোন সহযোগীতা চাহিলে, দেশের স্বার্থে দিতে প্রস্তুত।

গবেষক ও পরিকল্পনাবিদ

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ