[english_date]

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো প্রধান শিক্ষক পদে ৮৯৮ জন শিক্ষক নিয়োগে পিএসসি‘র সুপারিশ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে ৮৯৮ জন শিগগিরই নিয়োগ পাচ্ছেন এবং  সরকারি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় তিন হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে ৮৯৮ জন শিগগিরই নিয়োগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) প্রথমবারের মতো দেশের অভিভাবকহীন বিদ্যালয়ে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে। নন-ক্যাডার পদের এ নিয়োগ কার্যক্রম আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হবে। এবং তা আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে।  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিপিই সূত্র জানায়, সারা দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৪ হাজার ৮২০টি। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশেই প্রধান শিক্ষক নেই। অর্থ্যাৎ ২০ হাজার ৫১৬টি স্কুলে এ পদটি শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদের সংখ্যাও ৩০ হাজারে পৌঁছেছে।
সূত্র জনায়, অভিভাবকহীন এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষকের অভাবে এসব স্কুলগুলো যথাযথভাবে চলছে না। নিয়মিত পাঠদান হচ্ছে না। শিক্ষার মানোন্নয়নে কার্যত কোনো পদক্ষেপও নেই। প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে সহকারী শিক্ষককে প্রশাসনিক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। এতে স্কুলগুলোতে নানামুখী সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
বিষয়টি আমলে নিয়ে পিএসসির সুপারিশকৃতদের মধ্য থেকে প্রথমবারের মত ৮৯৮ জনকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আগে ৩৪তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ৮৯৮ জনকে গত বছরের ১০ আগস্ট নন-ক্যাডার হিসেবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)।
এ বিষয়ে ডিপিই মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, পিএসসির সুপারিশ করা ব্যক্তিদের প্রধান শিক্ষকের পদে আগামী দুই মাসের মধ্যে নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, সেখানে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে। সে লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহ থেকে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা ২০১৩ সালের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী ১১-১২ গ্রেডে নিয়োগ পাবেন। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী ৬০ শতাংশ পিএসসির সুপারিশে এবং ৪০ শতাংশ শিক্ষকতার জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। মহাপরিচালক বলেন, দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সারাদেশের শূন্যপদ পূরণ করা হবে। জানা গেছে, বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে (যারা ক্যাডার পায়নি) দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে ২০১৪ সালের ১৬ জুন নন-ক্যাডার পদের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে সরকার।
সূত্র জানায়, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায়  ৩০ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। শিক্ষক সঙ্কট নিরসনে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শিক্ষক নিয়োগ দিতে ২০১৬ সালের ২৪ মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ডিপিই। সে বছরের ২৯ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৫০ হাজার আবেদনকারী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৭ হাজার প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। দেশের আট বিভাগে মোট দুই হাজার ৯১৪ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন। চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হলেও কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে সরকারি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় তিন হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্বাচিত প্রার্থীদের আগামী দুই মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দেয়া হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে।নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান সনদ যাচাইয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করেছে। বর্তমানে নিয়োগ দিতে আর বাধা নেই। নিয়োগ বাস্তবায়নে অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক সভা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

(ডিপিই) সূত্র বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হলেও মুক্তিযোদ্ধা সনদ যাচাই প্রক্রিয়ার কারণে নির্বাচিত প্রার্থীদের এখনও নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। নিয়োগ বাস্তবায়নে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে।

গত ১৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কাগজপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। সেটিকে আমলে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্বাচিত প্রার্থীদের শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে পূনরায় নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলে জানান ডিপিই মহাপরিচালক।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ