[english_date]

প্রাথমিকের পরীক্ষা বাণিজ্য বন্ধ করার আহ্বান

 

প্রাথমিক শিক্ষক অধিকার সুরক্ষা ফোরামের এক জরুরি সভা আজ ২৭ অক্টোবর সকাল ১০টায় সংগঠনের উত্তর মানিকদিয়া, সবুজবাগ, ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক মো. সিদ্দিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্যতম শিক্ষানুরাগী, শিক্ষক সমাজের বন্ধু বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম কমল। বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা (ঠাকুরগাঁও), যুগ্ন আহ্বায়ক মো. গোলাম মোস্তফা (ময়মনসিংহ), ঢাকা মহানগরী আহ্বায়ক এম.এ ছিদ্দিক মিয়া, সদস্য রেজিয়া সুলতানা তরফদার (হবিগঞ্জ), মো. মাসুদুর রহমান (আহ্বায়ক গাইবান্ধা জেলা), বিশিষ্ট শিক্ষক নেতা মো. কামরুল ইসলাম (কুমিল্লা), সুব্রত রায় (পিরোজপুর), জাফর উল্যা সরকার (ঠাকুরগাঁও) প্রমুখ। সভায় সারা দেশের ৮৯জন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দ সারাদেশে সমাপনীর ২টি মডেল টেস্ট ও প্রাথমিকের প্রশ্নপত্রের প্রতি উপজেলায় লক্ষ লক্ষ টাকা বাণিজ্য রোধের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আশু পদক্ষেপ কামনা করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, মাধ্যমিকে ২টি পরীক্ষা অথচ শিশু শিক্ষার্থীদের ৩টি ও ৫ম শ্রেণিতে অতিরিক্ত ২টি মডেল টেস্ট যা শিশু মনোবিজ্ঞান ও অবৈতনিক শিক্ষার পরিপন্থী। ২০১৭ খ্রি. সারাদেশে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের রেইট ২/৩ গুণ বৃদ্ধি করায় প্রায় সকল উপজেলায় লক্ষাধিক টাকা উদ্ধৃত থাকে। এছাড়াও মডেল টেস্টের নামে সারাদেশে চলছে বিশাল পরীক্ষা বাণিজ্য। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে নি¤œমানের কাগজে ভুলে ভরা প্রশ্নপত্র, খাতা সাপ্লাই দেওয়া এখতিয়ার না থাকার পরও উপজেলা শিক্ষা অফিসার প্রতি মডেল টেস্টে অধিকাংশ স্থানে ৪০ টাকা বা তার অধিক টাকা নগদ গ্রহণ করছেন। সাময়িক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের টাকা শিক্ষকেরা ব্যাংক একাউন্টে জমা দেন। বহু স্থানে কিন্ডারগার্টেন বা বেসরকারি স্কুলকে বাধ্যতামূলক মডেল টেস্টে অংশগ্রহণ করানো হয়। যেখানে নি¤œমানের প্রশ্নপত্র ও খাতাসহ সর্বোচ্চ খরচ আনুমানিক ১৮ টাকা। সেখানে ২ গুণের চেয়ে বেশি টাকা নিয়ে বাণিজ্য করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকতারা ব্যবসায়ীদেরও হার মানিয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণের মূল্য উদ্দেশ্য এ দেশের গরিব মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা। পরীক্ষা ব্যবস্থার কারণে নোট গাইড ও কোচিং সেন্টারের রমরমা ব্যবসা ও পরীক্ষা বাণিজ্য চলছে। ফলে জাতীয়করণের মূল উদ্দেশ্য চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে নেতৃবৃন্দ পরীক্ষা প্রসঙ্গে কতিপয় সুপারিশ প্রদান করছেন।
ক্স প্রাথমিকে একটি বার্ষিক পরীক্ষা ও সারা বছর আদর্শ মূল্যায়ন ব্যবস্থা সকল সরকারি/বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক চালু করতে হবে।
ক্স অনেক দরিদ্র অভিভাবকের পরীক্ষার ফি দিতে কষ্ট হয়। তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য পরীক্ষার ফি মওকুফ করতে হবে।
ক্স বিদ্যালয় ভিত্তিক পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু করে গরিব শিক্ষার্থীদের উদ্ধৃত্ত টাকা থেকে ফি মওকুফ করে কষ্ট লাঘব করা এবং বিদ্যালয়ের ছোটখাটো কাজে তাৎক্ষণিক খরচ করার সুযোগ দিতে হবে।
ক্স ৫ম শ্রেণির সমাপনীর বিশাল কর্মযজ্ঞ শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত করে। তাই জেএসসি, এস.এস.সির মতো পরীক্ষা বোর্ডের আওতায় আনতে হবে।
ক্স স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় বেশিরভাগ কেন্দ্রে পরীক্ষার হলে উত্তর বলে দেওয়ার প্রবণতা চরমে পৌঁছেছে। বিষয়টি শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষকদের নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় বিধায় অবিলম্বে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ক্স প্রধান শিক্ষকদের চলতি দায়িত্বের নামে ঘুষ আদায়ের বাণিজ্য রোধের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান সরকারের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নোট গাইড, কোচিং ও পরীক্ষা বাণিজ্য বন্ধের প্রত্যাশা রেখে সভা সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ