পাওয়া, না পাওয়ার মিশ্র সমীকরণের মধ্য দিয়ে রোববার রাতে দু’দিনের বাংলাদেশ সফর শেষ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সফরে দু’দেশের মধ্যে মোট ২২টি দ্বিপক্ষীয় দলিল স্বাক্ষর, বিনিময় ও হস্তান্তর হয়েছে। সফরে বাংলাদেশের অর্জন নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি ছিল অনেক কম। তবে প্রাপ্তি কম হলেও মোদির এই সফরকে দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন তারা।
আবেগ, ভালবাসা আর সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা নিয়ে দু’দিনের বাংলাদেশ সফর শেষ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফর ঘিরে সাধারণ মানুষের আগ্রহ আর কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। এখন সবার প্রশ্ন, এই সফরে কতটুকু অর্জন, বাংলাদেশের? ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে দু’দেশের মধ্যে মোট ২২টি দ্বিপক্ষীয় দলিল স্বাক্ষর, বিনিময় ও হস্তান্তর হয়েছে। স্থলসীমান্ত চুক্তি, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি, ট্রানজিট ও বাণিজ্য প্রটোকল এবং উপকূলীয় নৌ-পরিবহন চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ছিল এ তালিকায়।
এছাড়া দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সবশেষ বক্তব্যে অনেক অমীমাংসিত বিষয়ে আশার আলো দেখিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তবে তার এই সফর বাংলাদেশের প্রত্যাশা পূরণে খুব বেশি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেনি বলেই মনে করছেন দেশের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান বলেন, ‘আমাদের প্রাপ্তিটা খুব বেশি হলো বলে মনে হয় না। আমরা চেয়েছিলাম আমাদের বেশ কিছু ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে মোদি দেখবেন, কিন্তু তা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ব্যাপারে কোনো আশ্বাস আমরা দেখিনি। আমরা চেয়েছিলাম বাংলাদেশি পণ্যের ভারতে অবাধ সুযোগ তৈরি হোক সেটাও হয়নি। সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা আমরা পাইনি। আমরা আশা করি, মোদির বক্তব্যকে ধারণ করে এই অঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিসরে যেন সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি।’
অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বিশ্লেষক মোহাম্মদ জমির মনে করেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যেসকল চ্যালেঞ্জ ছিল সেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর সেগুলোর মাধ্যমে কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই কাজটি করতে হবে। এদিকে, মোদির সফরকে শুধুমাত্র প্রত্যাশা পূরণের পাল্লায় মাপছেন না বিশ্লেষকরা। আঞ্চলিক উন্নয়নে বাংলাদেশের ভূমিকা আরও বাড়বে বলেই অভিমত তাদের।
দু’দেশের এই সুসম্পর্ক বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে সহায়তা করবে বলেও মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।