১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশক দীপনের তিন হত্যাকারীকে শনাক্ত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা

ব্লগার অভিজিতের বইয়ের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের তিন হত্যাকারীকে শনাক্ত করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তারা আজ বা কালকের মধ্যেই এই তিনজনের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা বিভাগে জমা দেবে বলে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা  বলেন, শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের দুইটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে তিন ঘাতকের ছবি শনাক্ত করা হয়েছে।

‘বেশ কিছু ছবি পর্যবেক্ষণ করে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন, তিনজন সেদিনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তাদের কেউই পাজামা-পাঞ্জাবি পরা ছিল না। তাদের মাথায়ও টুপি ছিল না’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই দিন তাদের আজিজ সুপার মার্কেটে প্রবেশ করা ও বাইরে পালিয়ে (তাড়াহুড়ো করে) যাওয়ার ছবি দেখে সন্দেহ করা হয়। এরপর তাদের আরো বেশ কিছু ছবি পর্যবেক্ষণ করে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন, এই তিনজনই সেদিনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ওই তিন জনের কেউই পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত ছিল না। তাদের কারো মাথায় টুপিও ছিল না। তারা স্বাভাবিক পোশাক পরে কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে এ ঘটনা তদন্ত করছে। ঘটনা তদন্তে সবকটি গোয়েন্দা বিভাগকে নিয়োজিত করা হয়েছে। কোনো একটি গোয়েন্দা বিভাগ এ ঘটনায় তিন ঘাতককে শনাক্ত করলেও করতে পারে, তবে এ ব্যাপারে আমাকে এখনো জানানো হয়নি।

দীপনের হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে আজিজ সুপার মার্কেটের সিসি ক্যামেরায় ধারণ হওয়া বিভিন্ন ফুটেজ বিশ্লেষণ করছেন গোয়েন্দারা। তবে সরাসরি খুনের ঘটনায় কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। যে ফুটেজ জব্দ করা হয়েছে তাতে ছবি স্পষ্ট দেখা গেছে।

আজিজ সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘আজিজ সুপার মার্কেটের নিচতলার বিভিন্ন স্থানে মোট আটটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ছিল। কেউ যদি নিচতলা দিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন, তাহলে অবশ্যই তার ছবি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়বে’।

অন্যদিকে, একটি গোয়েন্দা সংস্থার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে নানা প্রশ্ন তোলা হয়েছে যার মধ্যে আছে, জিহাদি গুপ্ত ঘাতক দলের সদস্য নিয়ে। তারা সংখ্যায় কত ? তাদের প্রকৃত পরিচয় ও পরিচালনায় আছে কারা ? হত্যাকাণ্ডের পর তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে কিভাবে ? হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে তারা অবস্থান করে কোথায় ? তাদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না কেন ? দু’একজন ধরা পড়লেও তাদের সহযোগীদের শনাক্ত করে ধরতে বাধা কোথায় ? তাদেরকে অর্থায়নই করছে কারা ? এসব প্রশ্নের সঠিক সমাধান করতে না পারায় ঘটনার তদন্তের গভীরে যেতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ ডিসেম্বর তারিখ ঠিক করে দিয়েছে আদালত। মামলা দুটির এজাহার গ্রহণ করে মঙ্গলবার ঢাকার ?দুটি আদালত এই তারিখ ঠিক করে দেয় বলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। দীপন হত্যা মামলার এজাহার গ্রহণ করে মহানগর হাকিম মো. ইউনুস খান ৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ঠিক করে দেন বলে আদালত পুলিশের এসআই কুতুবুল আলম জানিয়েছেন। শুদ্ধস্বরের প্রকাশক টুটুলের মামলাটি ওঠে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম লুত্ফর রহমান শিশিরের আদালতে। তিনি ২ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন বলে আদালত পুলিশের এসআই মাহমুদুর রহমান জানিয়েছেন।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ