৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পোষাক শিল্পে শ্রমিকদের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে তথ্য ভান্ডার হচ্ছে

পোশাক শ্রমিকদের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে পরিচয়, বয়স, অভিজ্ঞতাসহ পরিপূর্ণ কর্মজীবনের পূর্ণ বৃত্তান্ত সম্বলিত নতুন তথ্য ভান্ডার হচ্ছে পোষাক শিল্পে।

 বিজিএমইএতে নিবন্ধিত ও নিবন্ধনহীন কারখানা এবং কারখানা মালিকের নাম-ঠিকানারও বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে তথ্য ভান্ডারে। এ ছাড়া কারখানার ধরন, ক্যাটাগরি, শ্রমিকের সংখ্যাও সর্বশেষ পরিদর্শনের ফলাফলসহ প্রয়োজনীয় তথ্য থাকবে এ তথ্যভাণ্ডারে। দ্বিতীয়বারের মতো এমন তথ্য ভান্ডার তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে পোশাক উৎপাদক ও রফতানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। এ জন্য বিজিএমইএর সঙ্গে স্থানীয় দুই কোম্পানি টাইগার আইটি জিইএস ডিজিটাল এবং সিসটেক ডিজিটালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হবে আগামী মঙ্গলবার। এর আগেও একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরির উদ্যোগ নেয় বিজিএমইএ। কিন্তু মাঝপথে ওই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

 ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি স্থগিত করার পর সে দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয় (ইউএসটিআর) যে ১৬ দফা শর্ত দেয়, তথ্যভাণ্ডার তৈরি তার অন্যতম। শ্রম মন্ত্রণালয় গত বছর একটি তথ্যভাণ্ডারের কাজ শুরু করে। ওয়েবভিত্তিক ওই তথ্যভাণ্ডারে পোশাক শিল্পের তিন হাজার ৪৯৮টি পোশাক কারখানা এবং ২৫ লাখ শ্রমিকের তথ্য রয়েছে। বাকি কারখানা এবং শ্রমিকরা এর বাইরে রয়ে গেছেন। সরকারি ওই তথ্যভাণ্ডারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

 ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট বিভিন্ন সময়ে তার বক্তব্যে একে যুগোপযোগী করার কথা বলেছেন। মূলত: যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির মুখেই নতুন করে তথ্যভাণ্ডারের উদ্যোগ নিল বিজিএমইএ। এ লক্ষ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ ও শ্রমিক নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে শিগগিরই। ১৫ নভেম্বর এ কার্যক্রম চালু হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী জুন নাগাদ তথ্যভাণ্ডারের কাজ শেষ হবে।

  বর্তমানে পোশাক শিল্পে ৪০ লাখ শ্রমিক রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু তার ভিত্তি কতটুকু তা কারোরই জানা নেই। তথ্যভাণ্ডার না থাকায় কারখানায় দুর্ঘটনা হলে শ্রমিকদের শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। তাদের বেতন-ভাতা এবং ক্ষতিপূরণ দিতে সমস্যা হয়। এসব বিবেচনায় রানা প্লাজা ধসের পর পরই ২০১২ সালে তথ্যভাণ্ডার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল বিজিএমইএ।

 তবে সেই বছরই স্থগিত জিএসপি পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের শর্তের পর শ্রম মন্ত্রণালয় তথ্যভাণ্ডারের দায়িত্ব নেয়। এ কারণে বিজিএমইএর এই কার্যক্রম মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।  উদ্যোক্তারা বলছেন, শ্রম বিধিমালায় শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে প্রতিটি রফতানির বিপরীতে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হারে অর্থ দেওয়ার যে নির্দেশনা রয়েছে, তা কার্যকর করতেও শ্রমিকদের প্রকৃত সংখ্যা জানা প্রয়োজন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় পোশাক খাতের সংশ্লিষ্ট তথ্যের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ খাতের ওপর স্বচ্ছ কোনো তথ্য সরকার, মালিক কিংবা শ্রমিকপক্ষ কারও কাছে নেই। তাই একটি সমৃদ্ধ তথ্যভান্ডার জরুরি হয়ে পড়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ