পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস বা এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রেখে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রস্তাবিত এ খসড়া প্রকাশ করা হয়।
আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে। info@moedu.gov.bd এবং law_officer@moedu.gov.bd ই-মেইলে প্রস্তাবিত এ শিক্ষা আইনের খসড়ার উপর মতামত দেয়া যাবে।
আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করলে অথবা এই কাজে জড়িত থাকলে বা সহায়তা করলে তিনি সর্বোচ্চ চার বত্সরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
খসড়া আইনে গাইড বা নোটবই প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অনুমোদিত পাণ্ডুলিপির অনুমোদন নিয়ে কোনো প্রকাশক, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি সহায়ক শিক্ষা উপকরণ বা সহায়ক পুস্তক বা ডিজিটাল শিখন-শেখন সামগ্রী প্রকাশ করতে পারবেন।
সহায়ক শিক্ষা উপকরণ প্রকাশে কোনো ব্যক্তি নিয়ম অমান্য করলে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা ছয় মাসের কারদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এছাড়া নিবন্ধন ছাড়া কোনো বেসরকারি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা স্থাপন ও পরিচালনা করা যাবে না। কোনো এলাকা বা অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা না থাকলে সরকার সেগুলো একীভূত, স্থানান্তর বা বিলুপ্ত করতে পারবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় ভর্তি উপযোগী শিশুকে জন্ম নিবন্ধন সনদ বা সরকার অনুমোদিত প্রাক-প্রাথমিক বা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির সনদ দাখিল সাপেক্ষে উপযুক্ত শ্রেণিতে ভর্তি করা যাবে।
আইনে নবম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষা পাসের সনদ এবং একাদশ বা আলিম শ্রেণিতে ভর্তিতে এসএসসি বা সমমানের সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
খসড়া অনুযায়ী, প্রাথমিক ও ইবেতেদায়ী স্তরে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তিমূলক এবং তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত হবে। উচ্চশিক্ষায় বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার ব্যবহার অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় স্নাতক পর্যায়ে সকল কোর্সে ন্যূনতম নম্বর বা ক্রেডিট ইংরেজি বিষয় অধ্যয়ন বাধ্যতামূলক হবে। সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিকমানের কারিকুলামসহ কম্পিউটার বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক বিভাগ খুলতে উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
খসড়া অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা রাষ্ট্রের ব্যয়ে পরিচালিত হবে। জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখতে সরকার বিশেষ বাজেট বরাদ্দ দেবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক এবং মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ ও উপযুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়। ২৫ পৃষ্ঠার প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের পাঁচটি অধ্যায়ের ৬৯টি ধারা রয়েছে।