দীর্ঘ টালবাহানার পর গত ১৪ জুলাই অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করেছে আমেরিকা সহ বিশ্বের পাঁচটি পরমাণু শক্তিধর দেশ। পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর হলেও নিজের দেশের কংগ্রেস ওই চুক্তিকে কীভাবে নেয় সেটাই ছিল ওবামার মূল মাথা ব্যথার কারণ। এই অবস্থায় বুধবারই প্রথম মার্কিন কংগ্রেসে নিজের ও ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির স্বপক্ষে বক্তব্য রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বক্তব্যের শুরুতেই ওবামা বলেন, “এই চুক্তি ঐতিহাসিক। আমরা ইরান নয় একটা প্রজন্মকে সুযোগ দিয়েছি। আমরা এই সুযোগ না দিলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ঘৃণার চোখে দেখত।” এর পরই ওবামা যুক্তি দেন, নয়া পরমাণু চুক্তি কেবল ইরানকে নিরস্ত্র করবে তাই নয়, পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমশ বেড়ে চলা আইএসআইএস ও আইএসআইলের মতো ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনকে কড়া বার্তা দেবে। একই সঙ্গে খুলে যাবে বিশ্ব বাণিজ্যের এক নয়া দরজা।
তবে ওবামার এদিনের বক্তব্যের সঙ্গে বিরোধী সংখ্যাগরিষ্ঠ মার্কিন কংগ্রেস কতটা একমত হল তার উত্তর মিলবে দু’মাস পরে। কারণ আগামী দু’মাস ধরে চুক্তির খসড়া নিয়ে পর্যালোচনা হবে মার্কিন কংগ্রেসে। অবশ্য তার পরের ২২ দিন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম অনুযায়ী, মার্কিন কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত যাই হোক সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরের ২২ দিনে ভেটো প্রয়োগ করতে পারবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, ১৪ জুলাই ভিয়েনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চিনের মতো পরমাণু শক্তিধর দেশ। এই চুক্তির ফলে নিজেদের দেশে পরমাণু অস্ত্র তৈরি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়েছে ইরান। বদলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাষ্ট্রসংঘ ইরানের উপর জারি করা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। ২০০৬ থেকে শুরু হওয়া প্রচেষ্টা রোহানি-ওবামার উদ্যোগে বাস্তব হলেও তা টিকে থাকে কি না সেটাই এখন দেখার।