আজ বিশ্ব নারী দিবস। প্রতি বছর এই নারী দিবস এলেই হই হই রব উঠে আবার নিবেও যায়। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এখনও নারীরা নিগৃহীত। নারীরা এখন রাতে বাইরে চলাফেরা করতে পারে না। নারীরা রাস্তায়, উন্মুক্ত স্থানে নিরাপদ নয়। নারীদের প্রতি সমস্থ কু-দৃষ্টি যেন তাক করে রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের হয়রানি। রাস্তায় নারীদের হয়রানী, কোন অনুষ্ঠানে নারীদের হয়রানী, এখন চলছে হরদম। বিগত রেকর্ডগুলো তাই বলে। কিন্তু আমরা যদি একটু ফিরে থাকায় দেখব- আমাদের নারীরা অনেক এগিয়েছে, শিক্ষায়, কর্মক্ষেত্রে, সব জায়গায় তাদের অবাদ বিচরণ। নারীরা এখন আর ফেলনা কিছুই নয়। নারীরা লড়তে শিখেছে।
নারীরা এখন আর ফেলনা নয়। সমস্ত বিশ্বে নারীদের দাফট সবাইনিজ চোখে দেখছে। ক্রিকেট, সেনাবাহিনী , নৌবাহিনী , বিমান বাহিনী , সব কাজে এখন নারীরা সমান তালে পারদর্শী। নারীদের অবস্থান এখন অনেক বিশাল উঁচু জায়গায়। নারীরা এভারেস্ট জয় করে, নারীরা দেশ চালায়, নারীরা বিশ্বের মধ্য লড়ে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনে। তবুও সেই নারীরা আবার পদদলিত হয় বিভিওন্ন কারণে। জয়তু নারী ।
কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তবুও ভাবায়, ভাবতে হয়- নারীদের উন্নতি কল্পে যদিও অনেক দেশি বিদেশি সংস্থা কাজে নেমেছে অনেক আগে থেকেই। এই ব্যাপারে অনেক এনজিও কাজ করছে। কিন্তু সার্বজনীন উন্নতি এখনও হয়নি। এখনও আমরা একটা শক্ত সামাজিক অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারিনি। এখনও আমাদের সমাজে রাহেলা, ইয়াসমিনের মত মেয়েরা অহরহ ধর্ষিত হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে তারা নানা রকম বৈষম্যের মুখে পড়ছে। শারীরিক ভাবে দুর্বল বলে পরিবারে স্বামীর অকথ্য নির্যাতনও নারীরা মুখ বুজে সহ্য করে যায় নিজের সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে। সব থেকে বড় সমস্যা হয় গ্রামে। গ্রামের বখাটে ছেলেদের উপাতে এখনও অনেক মেয়েরা লেখা পড়া করতে পারে না। মেয়েদের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত অবৈতনিক করে দেওয়া হয়েছে। তবুও শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা, পুরনো ধ্যান ধারণা ক্রমশ তাদের মস্তিষ্কের কল্পনার বীজকে নষ্ট করে দিচ্ছে।
আমাদের দেশের দুইজন প্রধানমন্ত্রী নারী ছিলেন। তারা ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যে তারা শুধু নামে ছিলেন তা কিন্তু নয়। বেগম খালেদা জিয়া ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপ অনুযায়ী ৩৩তম ক্ষমতাধর নারী ছিলেন। কিন্তু তবুও আজ এদেশে নারীদের সামাজিক অবস্থান দেখে আমাদের আঁতকে উঠতে হয়। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কথা কি বলব। সবাই তার প্রমাণ দেখছে এবং ভোগ করছে। সামাজিক কুসংস্কার, যৌতুক প্রথা, এসিড নিক্ষেপের মত নির্মম সব ঘটনার শিকার হতে হয় নারীদের। বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ এখনও আমাদের দেশে আছে। এগুলোর উচ্ছেদ ও নারীদের সঠিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা কতটা জরুরী আমরা উপলব্ধি করছি না। কোন দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে পঙ্গু করে দিয়ে সামনে আগানো যায় না।
বেগম রোকেয়া আমাদের নারী জাগরণের পথিকৃত। নবাব ফয়জুন্নেসার অবদানও অনস্বীকার্য। তবু তাদের আদর্শের কিছুই আমরা ধারণ করতে পারিনি। সেই আদর্শে উজ্জীবিত হবার দিন আবার এসেছে। আমাদের সংকল্প হোক সকল নারীর অধিকার সুনিশ্চিত করা। তাদের সুশিক্ষিত করা। একটা শিক্ষিত মা ই পারেন একটা শিক্ষিত জাতি দিতে।