টাইগার নামটা যখন সামনে আসে তখন ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক,যদি বনের আতংকের জীব টাইগার হলে , বর্তমান যে জয়রথের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা, তাতে এক কথায় বলতে গেলে ক্রিকেট বিশ্বের নতুন আতংকের নাম বাংলাদেশ। যে ধীরে ধীরে জানান দিচ্ছে ভবিষ্যৎ ক্রিকেট বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে বাংলার টাইগাররা।
যদি বলি একটু বাড়িয়ে বলছি – একদম ও না কারণ একে একে পরাভূত করেছে ক্রিকেট বিশ্বের প্রায় সকল পরাশক্তিকে। অনেক পরাশক্তি আবার ভয় পেয়ে নিরপত্তা ইস্যুটি সামনে এনে লজ্জা থেকে নিজেকে কোনমতে বাচায়।
একথা কেন বলছি, তা বুঝতে হলে, একটু গল্পের আদলে বলতে হয়। এক পিতার দুই সন্তান, পিতা ঠিক করল ছেলেদের মিশনে পাঠাবে। তাই তিনি সবদিকে বিবেচনা করে ২য় পুত্রকে পাঠাবে, ১ম পুত্রকে নিরপত্তা ইস্যুতে পাঠাবেনা । এখন প্রশ্ন যেখানে এক পুত্রের নিরপত্তা জনিত সমস্যা থাকতে পারে, তাহলে অন্য জনের জন্য কেন নয় ? আসলে পিতা বিবেচনা করে দেখল ২য় পুত্রের বিরোদ্ধে যে প্রতিদন্ধীতা করবে সে অপেক্ষাকৃত দুর্বল আর ১ম পুত্রের বিরুদ্ধে যে প্রতিধন্ধিতা করবে তারা যেভাবে একের পর এক পরাশক্তিকে পরাভূত করে চলছে, তাহলে এই মুহুর্তে যদি মিশনে পাঠানো হয় নিশ্চিত লজ্জা নিয়ে ফিরতে হবে। তাহলে কি – এক কথায় বুঝা যায় স্রেফ লজ্জা ঢাকার কৌশল ছাড়া কিছুই না।
যদিও শেষ ম্যাচে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই শেষে ১-১ ড্র করল বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে । বাংলাদেশ ৩ উইকেটে পরাজয় করলেও ধারাবাহিকতায় কোন কমতি ছিল না। এক দুটি ম্যাচ হারলে সমালোচনা করা একদমই উচিত নয়।
অভিনন্দন বাংলার টাইগারদের, তোমাদের এই অধিপত্য বিস্তার আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব।
টাইগারদের বেঁধে দেয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে ১৯.৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।
এর আগে, জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুতে আল আমিনের জোড়া আঘাতে ফিরে যান সিকান্দার রাজা ও উইলিয়ামস। এরপর ২ ওভার বিরতি দিয়ে আবারও উল্লাসে মাতে দর্শক-সমর্থকরা। এবার কাটার-স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজের বলে বিভ্রান্ত চাকাব্বা ৪ রান করে সাব্বিরের ক্যাচে পরিণত হন। ব্যক্তিগত প্রথম ওভারেই সাফল্য পান মুস্তাফিজ।
৫ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের ইনিংস দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৭ রান।
এরপর দলীয় ৩৩ রানে আরভিন রানআউট ও ৩৯ রানে চিগুম্বুরা আরাফাত সানির বলে ফিরে গেলে বেশ বিপাকেই পড়ে সফরকারীরা। ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৫২ রান।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে জংউই-ওয়ালার ৫৫ রান যোগ করে টাইগার সমর্থকদের কপালে ভাঁজ ফেললেও আবারও দলের ত্রাতা হয়ে আসেন আল আমিন। জংউইকে ৩৪ রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। ১৬ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে পরিণত হয় ৬ উইকেটে ৯৯ -এ।
এর আগে, নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৫ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা পায় স্বাগতিকরা। লিটন দাসের জায়গায় দীর্ঘ চার বছর পর টি-টোয়েন্টি একাদশে সুযোগ পাওয়া ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবাল চড়াও হয়ে ব্যাট করেন প্রতিপক্ষের বোলারদের বিপক্ষে।
ইনিংসের প্রথম ৩ ওভারে ২৬ রান যোগ করেন তারা। পরের ওভারে মাদজিভার বলে চিগুম্বুরার হাতে ধরা পড়েন তামিম। দলীয় ৩৪ রানের মাথায় ১৫ বল খেলে ২১ রান করে ফিরে যান তিনি। তামিমের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন এনামুল হক বিজয়।
পরের ওভারের পঞ্চম বলে আবারও উইকেট হারায় টাইগাররা। এবার চিসোরোর বলে ইমরুলকে দুর্দান্তভাবে তালুবন্দি করেন উইলিয়ামস। ১০ রান করে ফিরে যান ইমরুল। ৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের ইনিংস দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৩৫ রান।
এরপর, ভালোই খেলতে থাকা মুশফিকও আউট হন ব্যক্তিগত ৯ রান করে।
এরপর এনামুল-সাব্বির জুটি ৩৯ রান যোগ করে দলকে কিছুটা এগিয়ে নেন। সাব্বির ১৭ করে আউট হওয়ার পর ৩ রানে ফিরে যান নাসিরও। ১৬.২ ওভারে টাইগারদের ইনিংস দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১১৩।
এরপর মাহমুদুল্লাহ ৮ ও মাশরাফি কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। একপ্রান্ত আগলে থাকা এনামুল ৪৭ রান করে দলের স্কোর বাড়িয়ে নিতে দারুণ অবদান রাখেন।
জিম্বাবুয়ের পানিয়াঙ্গারা ৩টি, মাদজিভা ও ক্রেমার ২টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে, দু’দলের ৪টি-টিয়োন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ৩টিতে বাকি একটি ম্যাচে জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।