আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সংক্রান্ত নীতি ও কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দিল্লিতে আজ শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী সাউথ এশিয়ান ইকোনমিক কনক্লেভ। সম্মেলন ও সেখানে আলোচ্য বিষয়ে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারক, সরকারি কর্মকর্তা, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, বহুজাতিক কোম্পানির প্রতিনিধি এবং কূটনীতিবিদরা।
সূত্র অনুযায়ী, সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মিনিস্টিরিয়াল রাউন্ডে তোফায়েল আহমেদসহ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বাণিজ্যমন্ত্রীরাও বক্তব্য রাখবেন। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সংক্রান্ত নীতি ও কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, শ্রীলংকাসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মন্ত্রীদেরও।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) আয়োজিত সাউথ এশিয়া ইকোনমিক সম্মেলনে সার্কভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্যমন্ত্রী, উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারক, সরকারি কর্মকর্তা, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, বহুজাতিক কোম্পানির প্রতিনিধি এবং কূটনীতিবিদরা অংশগ্রহণ করবেন। সম্মেলনে সাউথ এশিয়ান ফ্রি ট্রেড এরিয়া (সাফটা) চুক্তি বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি মূল্যায়ন হবে। এছাড়া অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ ও সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন।
জানা যায়, সাফটা চুক্তি হয় ২০০৬ সালে, যা ২০১১তে আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তির পর পূর্ণতা পায়। ২০১২ থেকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা বাণিজ্য শুল্ক কমিয়ে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ শুল্ক শূন্যে নামিয়ে নিয়ে আসতে তিন বছর সময় পায়। এ অঞ্চলের সাম্প্রতিক আমদানি বিশ্বের মোট আমদানির ১ দশমিক ৪ শতাংশ। আবার বিশ্বের মোট রফতানির ১ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৩ সাল পর্যন্ত সাফটার সদস্য দেশগুলোর মোট রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের সমীক্ষা অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য সম্ভাবনা ৫০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র অনুযায়ী, ২৯ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের প্লেনারি সেশন– ৪ এ ‘দ্য পাওয়ার অব ওয়ান পয়েন্ট সিক্স বিলিয়ন: এ ব্লুপ্রিন্ট ফর প্রোসপারিটি’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রীর যোগদান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য ফোরাম সাফটাতে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সম্মেলনটি এ অঞ্চলের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক নেটওয়ার্ক স্থাপনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘অ্যাচিভিং ইনক্লুসিভ গ্রোথ থ্রো ডিপার ইকোনমিক ইনটিগ্রেশন’। এ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃস্টি এবং দক্ষিণ এশিয়ার ইকোনমিক ইন্টিগ্রেশন ত্বরান্বিত হবে।
২৮–৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ ভারতের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সিতারামের আমন্ত্রণে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন তিনি। সফরকালে বাণিজ্যমন্ত্রী ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন।