[english_date]

দিনে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে নিষেধাজ্ঞা ডিএমপির, না মানলে ব্যবস্থা

ঢাকা মহানগরীতে ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করার পরিণতি হিসেবে যানজট বৃদ্ধি ও জনভোগান্তি সৃষ্টি হওয়ায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এক নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এই নির্দেশনায় রাস্তা কাটার সময়ের নির্দিষ্ট শর্তাবলি প্রতিপালন করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও ঠিকাদারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ হয়, যার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তাগুলি অপরিকল্পিতভাবে খোলা রেখে যানবাহনের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যার প্রতিকার হিসেবে ডিএমপি নির্দিষ্ট কিছু নিয়মের আওতায় রাস্তায় কাজ করতে বলেছে।

নতুন নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মতি ব্যতীত রাস্তা কাটাকাটি/খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু না করা।
২. সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ না করা। এ ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করে সকালে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
৩. রাস্তা কাটার পূর্বে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে:
ক) কাজ শুরু এবং শেষ করার সময় (অর্থাৎ কোন তারিখে কাজ শুরু এবং শেষ হবে তা) পূর্বেই ঘোষণা করতে হবে এবং ঐ সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে;
খ) রাস্তা খননের স্থান ও এর আগে/পরে ২০০ মিটার পর্যন্ত যথাযথ ট্রাফিক নির্দেশনা এবং ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট লাগাতে হবে;
গ) নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে;
ঘ) পথচারী এবং যানবাহন চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে;
ঙ) কাটা রাস্তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য লোহার শিট রাস্তা কাটার পূর্বেই সেখানে আনতে হবে;
চ) রাস্তার একটা লেন রাতের বেলা কাটা যেতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই সূর্যোদয়ের পূর্বেই ব্যবহার উপযোগী করতে হবে;
ছ) কোন অবস্থাতেই একই রাস্তার উভয় পাশে একসাথে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না;
জ) ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধিসহ রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করতে হবে;
বা) কোন রাস্তা রাত্রিকালে সর্বোচ্চ ৭ (সাত) দিন খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা যাবে এবং পরবর্তী তিন রাতের মধ্যে মেরামত করে দিতে হবে, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক/টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগরীতে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় যে, কিছু কিছু সংস্থা/ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনের বেলা বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে, যা পুন: মেরামত করতে অনেক সময় ৭/৮ মাস লেগে যায়।

প্রায় সকল ক্ষেত্রে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। সকল খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জায়গা কর্তন করা হয়। খোঁড়াখুঁড়ির সময় ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য দিকনির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানোর বিধান থাকলেও তা করা হয় না।

এক লেনে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি/আবর্জনা অন্য লেনে ফেলে রাখার ফলে দুই লেনের যান চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রে একই সাথে রাস্তার উভয় পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা হয়, ফলে রাস্তা উভয় দিক থেকে সরু হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলেও কাটা অংশ সঠিকভাবে ভরাট বা লোহার শিট না দেয়ার ফলে দিনের বেলায় সে রাস্তায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।

অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন-ক্যাবল/পাইপ ইত্যাদি) সংগ্রহ করার পূর্বেই রাস্তা খনন করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বা ডাইভারশনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয় না।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ