দাম্পত্য জীবন নিয়ে শঙ্কায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্ষিত সেই সহকারী শিক্ষিকা। গত ১৭ আগস্ট স্বামীকে আটকে রেখে তাকে গণধর্ষণ করে এলাকার বেশকয়েক বখাটে। ঘটনার পরদিনই ভিকটিমের স্বামী ভারত চলে যান, তিনি ওই দেশেরই নাগরিক। গতকাল পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়নি।
এদিকে শিক্ষিকার বাড়িতে পুলিশি পাহারা থাকলেও আতঙ্ক কাটেনি পরিবারটির। ঘটনার ১১ দিন অতিবাহিত হলেও অধরা রয়েছে মামলার তিন আসামি। তারা হলেন আবদুল হাকিমের ছেলে মো. রাসেল, মো. দুলালের ছেলে মো. রেজাউল ও কুদ্দুস কাজির ছেলে মো. সুমন কাজি। তবে প্রধান আসামি সুমন বিশ্বাসকে লক্ষ্মীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেতাগী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হুমায়ুন কবির জানান, গত বৃহস্পতিবার আসামি রবিউল ও জুয়েলের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। তবে এখনো তাদের থানায় আনা হয়নি।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন-অর-রশিদ বলেন, পলাতক বাকি তিন আসামিকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যেভাবেই হোক তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তার করব। তবে ভিকটিমের পরিবারের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। ঘটনার পরদিন থেকেই ওই বাড়িতে তিন পুলিশ সদস্য ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছেন।
মাদকসেবী সুমন থেকে রামদা সুমন
সুমন বিশ্বাস গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন এলাকাবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক এলাকাবাসী জানান, সুমনের চাচাতো ভাই মন্টু বিশ্বাস ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মেম্বার। তার ক্যাডার বাহিনী হিসেবে গড়ে ওঠা সুমন বাহিনী বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলায় এক আতঙ্কের নাম। তিনি কয়েক বছর আগেও মাদকাসক্ত ছিলেন। তবে থাকতেন লক্ষ্মীপুরে শ্বশুরবাড়িতে। ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন মন্টু বিশ্বাস।
সম্প্রতি একটি সালিশকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানকে হত্যার হুমকি দেন সুমন। একই এলাকার কলেজছাত্র ইমন জোমাদ্দারকেও বেদম মারধর করেন তিনি। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পথেঘাটে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ কারায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ছেলের ওপর মরিচের গুঁড়া ছুড়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন মোকামিয়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাস তিনেক আগে মো. ফোরকান হোসেনের ছেলে মো. সৌরভকে ঠুনকো অভিযোগে কুপিয়ে আহত করেন সুমন; কিন্তু এতোকিছুর পরও তার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলাটি ছাড়া মাত্র একটি মামলা রয়েছে। ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।