২রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তৈরি হল ‘পার্সোনাল জিএসএম নেটওয়ার্ক’

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাজিব হাসান ও হাবিবুর রহমান তৈরি করেছেন ‘পার্সোনাল জিএসএম নেটওয়ার্ক’। উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তির সাহায্যে মোবাইলের যোগাযোগ ও ল্যাব উপকরণ ব্যয় কমবে। তৈরি হবে কমিউনিটি মোবাইল যোগাযোগ। প্রচলিত পিএবিএক্স পদ্ধতি সহজ,ঝামেলাহীন ও তারবিহীন হবে।

সম্পূর্ণ জিএসএম নির্ভর বেস ট্রান্সিভার স্টেশন (বিটিএস) এবং নিয়ন্ত্রক তৈরি করে নতুন এই প্রযুক্তির উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে কম্পিউটারে সার্ভার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে লিনাক্সভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম উবন্টু। বিটিএসের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সফটওয়্যারভিত্তিক রেডিওসিস্টেম। মোবাইল ফোনে সংযোগের জন্য রয়েছে আর-এক্স এবং টি-এক্স এন্টেনা। ইতোমধ্যে ৩০টি মোবাইল ফোনে সংযোগ দিয়ে একসঙ্গে ১০টি ফোন কল দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। রেডিও পাওয়ার অ্যাম্লিফাইয়ের সাহায্যে ইচ্ছে মতো রেঞ্জ পরিবর্তন এবং হাজারের বেশি মোবাইলে খুব সহজেই সংযোগ করা সম্ভব। তারবিহীন ইন্টাকম হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে এই প্রযুক্তি। প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্যও বিশেষ সুবিধা দেবে এই প্রযুক্তি। এটি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে। ইচ্ছেমতো যোগাযোগ পদ্ধতিপরিবর্তনের সুবিধা রয়েছে।

রাজিব হাসান জানান, ‘পার্সোনাল জিএসএম নেটওয়ার্ক’ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অল্প খরচে মোবাইল নেটওয়ার্ক তৈরি করা সম্ভব। এ জন্য তৈরি করা হয়েছে জিএসএম (গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল) প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল বেইজ স্টেশন। এ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিনা মূল্যে কমিউনিটি মোবাইল যোগাযোগ গড়ে তোলা যাবে। অর্থাৎ একাধিক ব্যক্তি কোনো মোবাইল অপারেটরের সংযোগ ছাড়াই কথা বলার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি তারবিহীন পিএবিএক্স সুবিধাও পাওয়া যাবে। লিনাক্সভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম উবুন্টুতে চলা সার্ভার কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এ নেটওয়ার্কে ইতিমধ্যে একসঙ্গে ১০টি ফোন কল করা সম্ভব হয়েছে। সর্বোচ্চ এক হাজার মোবাইল ডিভাইসে এ সুবিধা পাওয়া যাবে।

 

রাজু ও হাবিব বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল যোগাযোগ অনেক এগিয়েছে। স্বল্প ব্যয়ে এমন মোবাইল বেইজ স্টেশন বিশ্বের আরকোথাও নেয়। বর্তমান সেবাদানকারী জিএসএম পদ্ধতির দুর্বলতার বিষয়গুলো চিহ্নিত করে এর উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা এই প্রজেক্ট হাতে নিই। তারা বলেন, বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালগুলোতে টেলিযোগাযোগ বিভাগ থাকলেও এক্ষেত্রে ব্যবহারিক জ্ঞানের প্রসার তেমন হয়নি। এই নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের সময়ে সঙ্গে তাল মেলাতে সাহায্য করবে। এখন জিএসএমের রেডিও ডিভাইস, ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড, এন্টেনা, প্রটোকল, সার্ভার পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে হাতে-কলমে শিখতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকল্পটি প্রদর্শিত হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলরপ্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ইইই বিভাগের প্রধান ও প্রফেসর ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া, ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন। দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রজেক্টের অংশ হিসেবে এই প্রোটোটাইপটি তৈরি এবং বাস্তবায়ন করেছে রাজু ও হাবিব। যেকোন অফিস প্রথাগত পিএবিএক্স পদ্ধতির পরিবর্তে পার্সোনাল জিএসএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ