
হ্যাঁ, তেলাপোকা বাঁচাতে পারে আপনার জীবন। যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দল এ কথা জানায়। তাদের মতে পঙ্গপাল ও তেলাপোকার মগজের শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতা রয়েছে। এ ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে মানুষের কোষের কোনো ক্ষতি না করেই ৯০ শতাংশ অনুপ্রবেশকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা যায়।
এসব ব্যাকটেরিয়া মানুষের জন্য খুবই বিপজ্জনক। এসব ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে রয়েছে : এমআরএসএ মেথিসিলিন রেজিস্ট্যান্ট স্টেফলকোকাস অরিয়াস এবং এশ্চেরিচিয়া কোলি ব্যাকটেরিয়া। এ গবেষণা থেকে পাওয়া ফলাফল গত বছর নটিংহ্যামে অনুষ্ঠিত ‘সোসাইটি ফর জেনারেল মাইক্রোবায়োলজি’র সভায় উপস্থাপিত হয়।
এতে বলা হয়, গবেষণায় পাওয়া তথ্য কাজে লাগিয়ে মাল্টি-ড্রাগ-রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। বর্তমানে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে মানুষ এ চিকিৎসার সুযোগ পাবে। ছাপা যাবে নতুন চামড়া। ধরুন আপনার হাতের চামড়া কতটা পুড়ে গেছে। সেই পুড়ে যাওয়া চামড়া বদলে সে জায়গায় নতুন চামড়া বসিয়ে দেয়া যাবে।
আর এ কাজটি করা হবে এই পুড়ে যাওয়া জায়গায় চামড়ার কোষ স্প্রে মেশিনের সাহায্যে ছিটিয়ে দিয়ে। এ কাজটি চলে এভাবে ঠিক যে ভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি ডেস্কটপ প্রিন্টার সম্পন্ন করে আজকের লেখা ছাপার কাজ। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ওয়েইক ফরেস্ট ইনস্টিটিউট অব রিজেনারিটিভ মেডিসিনের একটি টিম এ কাজটি করতে সক্ষম হয়েছে একটি বায়োপ্রিন্টার ব্যবহার করে।
এ যন্ত্রটিতে আছে একটি লেজার, যা রোগীর ক্ষত স্থানটি স্ক্যান করে এর দিক পরিমাপ করার জন্য। এর পর একটি কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এই ক্ষত স্থানে চামড়ার কোষ কতটুকু ছিটানো হবে না হবে। এই বায়োপ্রিন্টার এ পর্যন্ত প্রয়োগ করা হয়েছে ইঁদুরের ওপর।
দেখা গেছে এ ক্ষেত্রে পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থান সেরে ওঠে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দুই সপ্তাহ কম সময়ে। বায়োপ্রিন্টার এখন স্কিন গ্রাফটিংয়ের স্থান দখল করবে। স্কিন গ্রাফটিংয়ের সময় রোগীকে বেশ ব্যথা সহ্য করতে হয়। স্কিন গ্রাফটিংয়ের সময় শরীরের এক অংশ থেকে চামড়া তুলে নিয়ে ক্ষতস্থানটিতে বসানো হয়।
বায়োপ্রিন্টার দিয়ে রোগীর নিজস্ব চামড়ার কোষ তৈরি করা যাবে এবং ল্যাবরেটরিতে তা বহু গুণে বাড়িয়ে তোলা যাবে প্রিন্টারে রিফিল করার জন্য। উল্লিখিত ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. অ্যান্থনি অ্যাটালা বলেন, এই বায়োপ্রিন্টার দিয়ে আপনি আপনার পুরো শরীরে নতুন চামড়া বসাতে লাগবে। বর্তমানে মানুষ এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে।