[english_date]

তিন তালাকের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি তিন তালাকের ওপর ৬ মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও তার বিরোধিতা করেছে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে সংগঠনটি বলছে, প্রায় দেড় হাজার বছর থেকে ইসলামে বিশেষ করে সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে তিন তালাক প্রথা চালু রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় শরিয়া আইনের বিরোধী।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় প্রধান মাওলানা মাহমুদ মাদানি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কিছু পরিবর্তন হবে না। ইসলামী রীতি অনুসারে তিন তালাক প্রথা সম্পূর্ণ বৈধ।’ দিল্লির এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে তিনি তিন তালাকের মাধ্যমে এখনো বিবাহবিচ্ছেদ করা যাবে বলে মন্তব্য করেন।

মাওলানা মাদানি বলেন, ‘আপনারা সাজা দিতে চাইলে দিতে পারেন। কিন্তু এ ধরণের তালাক গৃহীত হবে। আমরা আদালতের ওই রায়ে একমত নই। আমরা মনে করি এটি ধর্ম পালনের মৌলিক অধিকারের ওপরে আক্রমণ। বিয়ে, হালালা এবং বহুবিবাহ প্রসঙ্গ বারবার উত্থাপিত হওয়ায় মনে হচ্ছে আরো অন্য ইস্যুকে টার্গেট করা হবে।’

তিনি অবশ্য বলেন, জমিয়ত তিন তালাক থেকে মানুষজনকে বিরত থাকতে বলেছে যাতে অন্যরা শরীয়তে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ না পায়।

অন্যদিকে, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘এ নিয়ে আইন নয়,  আদালত অভিমত ব্যক্ত করেছে। তিনজন বিচারপতি বলেছেন, তিন তালাক বাতিল, তিন তালাক নেই। কিন্তু তিন তালাক ১৪শ’বছর ধরে আছে। সেকথা তারা এড়িয়ে গেছেন। তালাক ইস্যু নিয়ে আইন তৈরি করার তাদের অধিকার নেই। তিন তালাক পদ্ধতি শরীয়তে আছে, আছে এবং আছে। মুসলিমরা পার্সোনাল ল’ নিয়ে বাঁচতে ও মরতে চায়।’

সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘কোনো নারী যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন, আমরা তাদের পাশে আছি। তিন তালাকের অপব্যবহার বন্ধ হোক, পরিবেশ তৈরি হোক। মা-বোনেরা যাতে নিপীড়িত না হন, সেটা আমরা নিশ্চয়ই চাইব।’

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করায় সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। তিনি দাবি করেন- সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সংবিধান, আইন এবং সুপ্রিম কোর্টকে অমর্যাদা করেছেন। তাকে গ্রেফতার করা উচিত।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ মন্তব্য করেন, এই রায়ের পর থেকে তিন তালাক অবৈধ। সুতরাং তা কার্যকর হবে না। সেক্ষেত্রে মুসলিম নারীরা তাদের স্বামীকে আদালতে টেনে আনতে পারবেন। সেখানে পারিবারিক হিংসা আইনে বিচার হবে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ