বাংলাদেশের ক্রিকেটে স্বার্থের সংঘাত নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক পদে থাকা অবস্থায় দিব্যি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কোচিং করিয়ে গেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। বেক্সিমকোর শীর্ষ পদে ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, সেই বেক্সিমকোর মালিকানায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা দলগুলো ঘরোয়া ক্রিকেটে পেত অন্যায্য সব সুযোগ-সুবিধা, আম্পায়ারদের আনুকূল্য।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পাপন এবং তার সহযোগীরা পালিয়ে গেলেও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা স্বার্থের সংঘাতের সংস্কৃতির বদল হয়নি। নতুন রূপে সেই কুৎসিত সংস্কৃতি ফিরে এসেছে। আগামীকাল থেকে শুরু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আবার একই লিগে অংশ নিচ্ছে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব, যে ক্লাবের অর্থায়নেও আছেন তামিম। এটা স্বার্থের সংঘাত কি না এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি সিসিডিএম প্রধান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ক্রিকেট প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হতে চাচ্ছেন, এমন আভাস ইঙ্গিত দিয়েছেন একাধিকবার। সংবাদ সম্মেলনে নানান সময়ে তাকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে ইতিবাচক সুরই শোনা গেছে। অবসর ঘোষণার পরদিন তামিম চট্টগ্রাম বিভাগের ক্রিকেটারস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর সভাপতি মনোনীত হয়েছেন। এরপর এবারই প্রথম বিভাগে উন্নীত হওয়া গুলশান ক্রিকেট ক্লাবে বিনিয়োগ করেছেন, যেখানে তার সঙ্গী তামিমের বিপিএল দল ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান।
গুলশান ক্রিকেট ক্লাবে আর্থিক বিনিয়োগের ব্যাপারে তামিম একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘আসলে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে এখনই কিছু চূড়ান্ত হয়নি। তবে অর্থনৈতিক দিক থেকে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে সাপোর্ট দিতে চাই। ক্লাবটির অর্থায়নে ভূমিকা রাখতে যাচ্ছি। আসলে কাউন্সিলর নিয়ে এখনই ভাবছি না। আমি ও ফরচুন বরিশালের ফ্র্যাঞ্চাইজির মিজান (মিজানুর রহমান) ভাই দুজন মিলে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবে অর্থায়ন করব বা করতে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে কে কাউন্সিলর হবেন, তা এখনই চূড়ান্ত করিনি। সেটা নিয়ে এখন ভাবছিও না। সেটা পরে দেখা যাবে। এ মুহূর্তে আমি আর মিজান ভাই (ফরচুন বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি মিজানুর রহমান) গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। ক্লাবটিকে আর্থিক সহায়তা করতে রাজি হয়েছি।’
তবে ব্যাপারটি এখনো কর্ণগোচর হয়নি সিসিডিএম প্রধানের। শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানে সালাউদ্দিনের কাছে দেশ রূপান্তরের পক্ষ থেকে স্বার্থের সংঘাত সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে উত্তরে মেলে, ‘(তামিম) গুলশান ক্লাবের মালিকানার সঙ্গে জড়িত এ রকম কিছু আমাদের কাছে আসেনি। এ রকম কোনো কাগজ আমাদের কাছে আসেনি। মালিকানার কাগজটা এলে আমরা বলতে পারব কোন পদ বা কী ভূমিকায় সে জড়িত, এরপর আমরা মন্তব্য করতে পারি।’
শনিবার একই মঞ্চে ছিলেন গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম ও মোহামেডান অধিনায়ক তামিম ইকবাল।