ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক হত্যার দায় স্বীকার করেছে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ পর্যবেক্ষক সংগঠন এসআইটিই (সাইট) ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।
গ্রুপটির ওয়েবসাইটে গুলশানে ইতালীয় নাগরিক ট্যাভেলা সিজারের হত্যার দায় আইএস স্বীকার করেছে বলে জানানো হয়েছে।
ওয়েবসাইটটির ‘জিহাদিস্ট নিউজ’ সেকশনে এই শিরোনামে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া আরবিতে লেখাসহ বিবৃতি সদৃশ একটি গ্রাফিক নির্ভর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে আইএস এর প্রচলিত প্রতীকটি ছবিতে নেই।
পৃথিবীর অনেক দেশেই ইতালিয়ান স্থাপনা আইএসের টার্গেট হয়েছে। মিশরে গত জুলাই মাসে ইতালির কনস্যুলেট ভবনে হামলাকারীদের ৯ জন গত শুক্রবার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে।
রাজধানীর গুলশান–২ এ সোমবার সন্ধ্যায় জগিং করার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন ইতালীয় নাগরিক ট্যাভেলা সিজার। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ প্রথমে তাকে অামেরিকার নাগরিক উল্লেখ করলেও পরে ইতালির নাগরিক বলে জানায়।
নিরাপত্তার শঙ্কায় থাকা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে থাকা অবস্থায়ই এ ঘটনা ঘটলো।
এর আগে ২০১২ সালের ৬ মার্চ রাজধানী সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকা বলে পরিচিত কূটনীতিক পাড়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলি। তাকেও জগিং করার সময় গুলি করা হয়েছিলো। তিনি ছিলেন সৌদি দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব। থাকতেন গুলশানের কূটনীতিক পাড়ায়।
বিদেশী নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন সংবাদ শুনেই পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। পুরো এলাকা ঘিরে রাখে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে উদ্ধার করে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম।
তিনি জানান, নিহত ব্যক্তির কাছে গুলশানের আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের একটি পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।
তবে তিনি নেদারল্যান্ডস উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার পেছন পেছন থাকা দুইজন তাকে তিন রাউন্ড গুলি করে কাছেই অপেক্ষমান একটি মোটরবাইকে চলে যায়। তাদের মতে, এটা ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা না বলে মনে হয় কারণ তারা নিহতের কাছ থেকে কিছু নেয়নি। আর কাছেই তৃতীয় একজন মোটর সাইকেলে অপেক্ষা করছিলো।
টি–শার্ট আর থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরা ব্যক্তিটির কাছে মূল্যবান কিছু ছিলো না বলেও মনে করছেন তারা।
এর আগেও দেশে বিদেশী নাগরিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের চাপাতির কোপে নিহত হন ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়। তিনি ছিলেন অামেরিকার নাগরিক।