ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে জঙ্গিবাদ দমনে আরো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ব্রিটিশ জঙ্গিরা যে বাংলাদেশেও জঙ্গিবাদ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
ইসলামিক স্টেট আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা দমনে ক্যামেরনসহ লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের কাছে সহযোগিতাও চেয়েছেন শেখ হাসিনা।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বা অন্যদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ রপ্তানির যে চেষ্টা চলছে সে বিষয়ে প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতকার প্রকাশ করেছে।
বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর শুরুর দিন এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো। একইদিন আল-কায়েদার সঙ্গে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কেরর ইঙ্গিত নিয়ে সজীব ওয়াজেদের কলাম প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন টাইমস।
নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ান জনিয়েছে, আইএসসহ বিভিন্ন জঙ্গি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ধর্মের নাম ব্যবহার করে তরুণ সমাজকে উদ্ধুদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, পূর্ব লন্ডনে জামায়াতে ইসলামীর শক্ত অবস্থান রয়েছে। সেখান থেকে তারা অর্থ সংগ্রহ করে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জঙ্গি তৎপরতা বাড়ার পেছনে কোন দেশের ইন্ধন রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ, অর্থিক সহযোগিতা ও বোমা বানানোর সরঞ্জাম সরবরাহের পেছনে ওই প্রভাবশালী দেশের হাত রয়েছে কি না, এমন বিষয়ও অনুসন্ধান করা দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে। মৌলবাদী গোষ্ঠী মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া উগ্রবাদ রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরী বলেও মনে করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সব দেশের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে। যাতে করে সব দেশই অবৈধ অর্থ ও অস্ত্র অথবা সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকে। কোনো গোষ্ঠী যেনো সমস্যা তৈরির কোনো সুযোগ না পায়।
এ বিষয়ে ডেভিড ক্যামেরন গ্রীষ্মের আগেই একটা বড় বক্তৃতা দেওয়ার কথা ভাবছেন বলে জানিয়েছেন তার একজন মুখপাত্র।
গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করা দরকার বলেও বিশ্বাস করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
প্রতিবেদনটিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরেরও সাক্ষাৎকার নিয়েছে গার্ডিয়ান।
তিনি জামায়াতকে সন্ত্রাসের গডফাদার হিসেবে উল্লেখ করেন। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য সবচে বড় হুমকি বলেও মন্তব্য তার।
শাহরিয়ার কবির বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে জয়ী হলে বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আইএস এবং আল-কায়দা বাংলাদেশকে টার্গেট করেছে। ব্রিটেনসহ বিদেশ থেকে জিহাদীরা আসছে। ব্রিটেন, সৌদি আরব এবং পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন ইসলামী এনজিও’র মাধ্যমে টাকাও আসছে।
হিযবুত তাহরির উত্থানের কথাও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। আইএস এর মতো ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হিযবুতও বাংলাদেশে কর্মী সংগ্রহ করছে। তাদের টার্গেট মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের।