আব্দুল্লাহ আল মামুন,ঝিনাইদহ॥ নাম আব্দুল মজিদ পেশায় কৃষক। স্বপ্ন দেখেন একটি ইউনিয়নের প্রতিটি রাস্তায় থাকবে সারি সারি তালগাছ, গাছে থাকবে পাখির বাসা, তালগাছ থেকে গ্রামের মানুষ সংগ্রহ করবে তালের রস, ফল, তালের পাতা সংগ্রহ করে তৈরি করবে তালের পাখা, রাস্তায় থাকবে ছায়া যা পথচারীদের রোদ থেকে রক্ষা করবে। আর তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ইতিমধ্যে তিনি কাজ শুরু করেছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নে ইতিমধ্যে প্রায় ৫ হাজার তালের চারা রোপন করেছেন। গাছ গুলো বড় হতে শুরু করেছে। এ বছর তিনি আরো প্রায় ৩ হাজার তালের চারা রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছেন। বৃক্ষপ্রেমি আব্দুল মজিদ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরচাদা গ্রামের মৃত আব্দুস সবুর মন্ডলের ছেলে।
আব্দুল মজিদ জানান, আমাদের দেশ থেকে তাল গাছ ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে। কারনে অকারনে মানুষ তালগাছ কেটে ফেলাচ্ছে। তালগাছ প্রকৃতি ও মানুষের পরম বন্ধু। আগে বজ্রপাতে মানুষ বেশি মারা যেতো না। কারন তখন বাড়ির আশে পাশে, মাঠে, রাস্তায় প্রচুর তালগাছ ছিল। এখন বজ্রপাতে প্রতিদিনই মানুষ মারা যাচ্ছে। এই তালগাছ বজ্রপাত প্রতিরোধ করে। তিনি জানান, পেশায় একজন কৃষক। তার লক্ষ্য উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের প্রতিটি রাস্তায় থাকবে সারি সারি তালগাছ থাকবে। সেই আলোকে গত ৩ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন রাস্তায় প্রায় ৫ হাজার তালগাছ রোপন করেছেন। এ বছর তিনি প্রায় ৩ হাজার তালের চারা রোপন করেবেন। মজিদ আরো জানান, তাল গাছ থেকে সুস্বাদু রস,গুড়, পাকা তালের রস, তাল পাকার উপকরন এবং তাল গাছ থেকে ঘরের আড়া তৈরি করা যায়। এ কথায় তাল গাছের সবকিছু ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও রাস্তায় তালগাছ থাকলে রাস্তায় ছায়া থাকে। তালগাছ বেশি যায়গা নষ্ট করে না। এবং ফসলের কোন ক্ষতিও হয় না। কোথা থেকে তালের চারা সংগ্রহ করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, নিজের পকেটের টাকা দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি তালের চারা কিনেন, বিভিন্ন মাঠে যেখানে তালগাছ আছে সেখানে গিয়ে তালের বীজ সংগ্রহ করেন। আব্দুল মজিদ জানান, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে তিনি নিয়ামতপুর ইউনিয়নের প্রতিটি রাস্তায় তালের চারা রোপন করতে চান। তালের চারার পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন বটের নার্সারী। বিনামুল্যে বট গাছে চারাগুলো বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে, বিভিন্ন স্কুল কলেজের মাঠে, মাঠে লাগানোর জন্য বিতারন করছেন। তিনি বলেন যদি বেচে থাকি তবে তার স্বপ্ন পুরণ করবেনই।
কালীগঞ্জ উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা(নিয়ামতপুর ইউনিয়ন) শাহিন আলম জানান, আব্দুল মজিদ গত ৩/৪ বছর ধরে নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দাপনা-মোস্তবাপুর,মহেশ্বরচাদা-বলরামপুর,মহেশপুরচাদা-কালীগঞ্জ, ঘোষনগর- নিয়ামতপুর, নরেন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন রাস্তার পাশে তালের চারা রোপন করছেন। আব্দুল মজিদ যে কার্যক্রম চালাচ্ছে তাতে তিনি এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হবে।
নিয়ামতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি জানান, আব্দুল মজিদ তার ইউনিয়নের বিভিনন রাস্তার পাশে পরিবেশ বান্ধব ও উপকারী তালগাছ রোপন করছেন তার জন্য ধন্যবাদ দিলে ছোট করা হবে। তিনি বড় মনের মানুষ। তার সব কাছে আমি সহযোগিতা করবো।