[english_date]

জয় হোক তারুণ্যের

আকাশ ইকবাল:
চলতি বছর পাহাড় ধস ট্রাজেডির সময় আমরা দেখেছি, কিভাবে আমাদের দেশের তরুণ সমাজ পাহাড়ী ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে! এর আগে হাওড় এলাকায় বন্যার সময় ও আমরা দেখেছি কিভাবে আমাদের দেশের তরুণ সমাজ হাওড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ত্রান নিয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ও বর্তমানে সময়ে সব চেয়ে আলোচিত ঘটনা উত্তরবঙ্গে বন্যায় কবলিত হয়ে ৩২টি জেলার প্রায় ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছিল। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী এখন পর্যন্ত আরো কয়েকটি এলাকা পানির নিচে তলিয়ে আছে। এই ঘটনায়ও আমাদের তরুণ সমাজ যে যার অবস্থান থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিভিন্ন রকমের ত্রান নিয়ে হাজির হচ্ছে। যেখানে দেশের সরকার নিরব সেখানে তারুণ্যের বুকে মানবতার উচ্ছাস বয়ে যাচ্ছে। যেখানে দেশের সরকার সবার আগে ত্রান নিয়ে হাজির হওয়া দরকার সেখানে তরুণ সমাজ আগেই পৌঁছে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজপথে ভিক্ষা করে জীবন চলা সেই মানুষটিও বন্যায় কবলিত মানুষের জন্য তাঁর অবস্থান থেকে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি সময়ের সব চেয়ে আলোচিত ঘটনা রোহিঙ্গা সংকট। হাওড়ে বন্যা, পাহাড় ধস, উত্তর বঙ্গে বন্যা এই তিন সমস্যা আমাদের দেশের। কিন্তু রোহিঙ্গা সমস্যা তো আমাদের দেশের না। মিয়াননারের। কিন্তু তার পরও আমার দেশের তরুণ সমাজ মানবতার মূল্যে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যেখানে পুরো বিশ্ব রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরব সেখানে আমার দেশের তরুণ সমাজ সোচ্ছার। রোহিঙ্গারা আমাদের দেশের নাগরিক না হলেও তারা আমাদের মতো রক্ত মাংশে গড়া মানুষ। সব চেয়ে বড় কথা হলো তাদের উপর অন্যায় করা হচ্ছে, নিজেদের ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, গণহত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, লুটপাট কিনা করছে? রোহিঙ্গারা পড়ছে খাদ্য সংকটে, পড়ছে আশ্রয়হীনতায়, এছাড়া বিভিন্ন রোগ ভালাই আক্রমণ করছে। নাফ নদীতে ভেসে আসছে রোহিঙ্গার লাশ। যেখানে বিশ্ব বিবেকহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে সেখানে আমার দেশের তরুর তাদের রক্ষায় ছুঠছে। বন্যা, পাহাড় ধস, হাওড়ে ক্ষয়ক্ষতির সময় যেমন ত্রান সংগ্রহ করেছে ঠিক একই ভাবে রোঙ্গিাদের জন্যও ত্রান সংগ্রহ করে যে যার অবস্থান থেকে পাঠাচ্ছে। তরুণ সমাজের একটাই কথা, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের উপর আক্রমণ চালায়, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ অত্যাচারসহ গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছিলো তখন আমাদের পাশের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত মানবতার মূল্যে আমাদের এক কোটি জনগণকে আশ্রয় দেয়। আজ রোহিঙ্গা সহজ, সরল মানুষদেরও অন্যায় ভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। তুলে দিচ্ছে নিজস্ব ভিটে থেকে। আজ আমরা যদি বিবেকহীন ভাবে চুপ করে থাকি, আমাদের দরজা যদি বন্ধ করে রাখি, সাহায্যে এগিয়ে না যাই তাহলে আমরা তো বিবেকহীনদের কাতারে পড়ে যাবো। আমরা চাইনা সেই কাতারে পড়তে। মানুষের কোন নিদিষ্ট রাষ্ট্র থাকলেও বাঁচার প্রশ্নে কোন রাষ্ট্র নেই। মানুষ বিপদে পড়ছে আমরা তাদের আশ্রয় দিবো। মানুষের জন্যই এই পৃথিবী।

আমার দেশের তরুণ সমাজ শুধু এই সব কিছুতে সীমাবদ্ধ নয়। হাসপাতালে আমার মা-বোনের অপারেশনে জরুরি রক্ত প্রয়োজন, কোন সমস্যা নেই। রাত যতটাই হোক সেচ্চায় রক্তের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। তরুণদের সমাজ সেবা মূলক কাজ আমরা প্রায় দেখতে পাই। বিশেষ করে ঈদ, পুজো কিংবা বড় দিনের উৎসবের সময়। দুঃস্থ, গরিব, অসহায় মানুষের পাশে কিভাবে দাঁড়াচ্ছে। শিক্ষার অধিকার কোটিপতি বাপের সন্তানের যেমন আছে ঠিক একই ভাবে রিক্সাচালক কিংবা মা-বাবা মরা সন্তানেরও আছে। কিন্তু অর্থের অভাবে স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না। সচেতন তরুণ সমাজ তার পাশে দাঁড়াচ্ছে। জয় হোক তারুণ্যের। জয় হোক বাংলাদেশের।
লেখক : শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ