[english_date]

জালটাকার দৌরাত্ম্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা পদক্ষেপ

ঈদ মানেই যেন কেনাকাটার ধুম, কোটি কোটি টাকার লেনদেন। আর সেই টাকার ভিড়ে বাড়ে জালটাকার দৌরাত্ম্যও। তাই নকল টাকার বিস্তার ঠেকাতে অন্যান্য বারের মত এবার ঈদেও ‘শনাক্তকরণ যন্ত্র’ বসানোসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর জালটাকার সঙ্গে জড়িতদের ধরার পর এবারই প্রথম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শাস্তি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব তৎপরতার ফলে নকল টাকার বিস্তার অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

ঈদ মৌসুমে বাড়ে বেচাকেনা, হাত বদল হয় কোটি-কোটি টাকা। বিশেষ করে ঈদের আগের সপ্তাহে লেনদেনের এই চাপ থাকে সবচেয়ে বেশি। জালটাকার বিস্তারে তাই এই সময়টাকেই সুযোগ হিসেবে নেয় চক্রের সদস্যরা। গরুর হাট না থাকায় রোজার ঈদে নকল টাকার ব্যবসায়ীদের প্রধান লক্ষ্য থাকে বিপণীবিতানগুলো। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করতে তাই এসব স্থানে প্রচারণা শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। লাগানো হয়েছে ব্যানার-পোস্টার। পাশাপাশি মার্কেটগুলোতে বসানো হচ্ছে জালটাকা সনাক্তকরণ মেশিন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এফবিসিআইকে আমরা দুই’শটি জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন সরবরাহ করেছি। যেসব মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা হচ্ছে সেসব মার্কেটে প্রকাশ্যে একটা করে মেশিন তারা রেখেছেন। যাতে করে যেকেউ সন্দেহ হলে টাকা পরীক্ষা করতে পারে।’

জালটাকা তৈরি ও বিস্তারে জড়িত চক্র দমনে এবছর রমজানের আগ থেকেই তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি চালানো হচ্ছে বিশেষ অভিযান। জড়িতদের ধরার পর দেয়া হচ্ছে তাৎক্ষণিক জেল-জরিমানা। ডিএমপির উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘জাল টাকার যে অপরাধ তা অন্যান্য বছরের তুলানয় এ বছর সহনীয়। আমরা চার-পাঁচটি চক্রের চল্লিশ জন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত আমরা সাজা দিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করি এ অবস্থা আরও ভালো হবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত এসব কর্মকাণ্ডের ফলে নকল টাকার বিস্তার ক্রমেই কমে আসছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতারা। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর যখন এই মেশিনটা দেওয়া হয়েছিল তখন প্রথম দিকে কিছু জাল টাকা ধরা পড়েছিল। সেই জিনিসটা এবার কমে এসেছে।’

আর এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আশা করছি যারা জাল টাকার সঙ্গে জড়িত তারা এ কাজ থেকে সরে আসবে।’ জালটাকা সনাক্তকরণ প্রতিটি মেশিনের দাম মাত্র দু’হাজার টাকা। তাই ব্যবসায়ীদের নিজেদের স্বার্থেই প্রতিটি দোকানে অন্তত একটি করে এই যন্ত্র রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ