লালমনিরহাটে চাঁদা না পেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে পিটিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা
আজিনুর রহমান আজিম,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির নিকট দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে শনিবার(১৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের স্থানীয় কালমাটি আনন্দবাজার এলাকায় প্রকাশ্য বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জেলার কালমাটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শূন্য ও নবসৃষ্ট পদে ৫জন ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ প্রদান করা হয়। স্থানীয় একটি পক্ষ ওই বিদ্যালয়ে ‘সামাজিক বিজ্ঞান’ পদে নিয়োগ দাবী করে অপর একটি পক্ষ শিক্ষক নিয়োগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইরশাদুল হক বকুল ও প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী মিয়ার বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের ডোনেশন নেয়ার অভিযোগ তুলে সভাপতির কাছে ৪/৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইরশাদুল হক বকুলকে(৫২) স্থানীয় সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসী চক্র বেদম মারপিট করে আহত করে। বর্তমানে তিনি লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ইরশাদুল হক বকুলের শরীরের আঘাত আশঙ্কামুক্ত হলেও দুই চোখের পরীক্ষা- নিরীক্ষা না করা পর্যন্ত কিছু বোঝা যাচ্ছে না।’
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইরশাদুল হক বকুল সাংবাদিকদের জানান, ‘কমিটির সভাপতি হিসেবে স্বচ্ছতার সাথে ৫জন মেধাবী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। একটি পক্ষ নিয়ম- নীতির তোয়াক্কা না করে সামাজিক বিজ্ঞান পদে একজন শিক্ষক নিতে দাবী করে। অপর একটি পক্ষ শিক্ষক নিয়োগে মোটা অঙ্কের ডোনেশন নিয়েছি দাবী করে আমার কাছে ৪/৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছে। এসবে সায় না দেয়ায় স্থানীয় নেল্লাহ মাহমুদের ছেলে শহিদার রহমান, তার ছেলে, আব্দুর রাজ্জাক বুদু, আব্দুল মজিদ ভোলা, আব্দুর রহমান, ওয়াহেদ আলীর ছেলে সফিকুল ইসলাম বেঙা, জোনাব আলীর ছেলে আসাদুল হক বাদলসহ অজ্ঞাত ১৮/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র অত্যন্ত নির্দয়ভাবে আমার উপর হামলা চালায়।’
বিদ্যালয়ের গিয়ে প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী মিয়া বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা অবৈধ সুবিধা না পাওয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইরশাদুল হক বকুলকে অন্যায়ভাবে বেদম মারপিট করে আহত করেছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে চাঁদার টাকা দাবীর কথা অস্বীকার করে শহিদার রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে আব্দুল মজিদ ভোলাকে সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইরশাদুল হক বকুল ও প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী মিয়া ১০ লাখ টাকা ডোনেশন নেয়। তারা টাকা ফেরত দিচ্ছেন না, ছেলেকে নিয়োগও দিচ্ছেন না। টালবাহানা করছেন।’
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এএইচএম মাহফুজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’