জনদুর্ভোগ লাঘব, প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা আনায়নের তাগিদ দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর দেয়া চিঠির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুচ ছালাম চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে এক বৈঠকে বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে চট্টগ্রামের উন্নয়নে বরাদ্দকৃত মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে আমাকে তাগিদ দেয়ায় আলহাজ্ব এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী তাঁর রাজনৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছেন। এ জন্য আমি কৃতার্থ এবং তাঁর চিঠির আলোকে আমার কার্যক্রমের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নিতে পারবো বলে আশা করি। তিনি আরো বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ-কে দেয়া প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আকাক্সক্ষা অনুযায়ী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ সকল সরকারী সেবা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি স্বীকার করেন যে, অতীতে নানা কারণে চট্টগ্রামে পরিকল্পিত নগরায়ন সম্ভব হয়নি। এর প্রধান কারণ ছিল সরকারী সেবা সংস্থারগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বড় অংকের বরাদ্দ দিয়েছেন। আমি আমার কাজের মধ্য দিয়ে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে বদ্ধপরিকর। তবে এটাও ঠিক যে, চট্টগ্রাম নগরীতে প্রথম ফ্লাইওভারগুলো নির্মাণ করতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু ত্রুটি থাকতেও পারে এবং নগরবাসীকে বেশ দুর্ভোগও পোহাতে হয়েছে। ফ্লাইওভারের নীচে দু’পাশের সড়কগুলো প্রকল্পের বরাদ্দের অংশ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। শুধুমাত্র ২নং গেইট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত সড়কটিতে ওয়াসার পানির লাইন বসানোর জন্যে রোড কাটিং বিল হিসেবে তাদের কাছ থেকে সিটি কর্পোরেশন প্রয়োজনীয় অর্থ বুঝে পেয়েছে। অতএব, সে রাস্তাটি মেরামতের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের উপরই বর্তায়। তিনি প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদেরকে আমার মনের কথা জানাবার সুযোগ পেয়ে প্রকৃত সত্য-তথ্য-উপাত্ত এবং দালিলিক প্রমাণ পেশ করতে চাই। আমি আপনাদের মাধ্যমে নগরবাসীকে জানাতে চাই যে, দলিলমূলে চট্টগ্রাম নগরীর সড়কগুলোর মালিক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং সিটি কর্পোরেশন এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করবে মাত্র। এই বিষয়টি এতদিন পর্যন্ত অমীমাংসিত ছিল। তাই সড়কগুলোর এই এবড়ো-থেবড়ো অবস্থা। তিনি এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী’র চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী দুর্নীতি-অনিয়ম এবং অদক্ষতার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, তাঁর এই অভিযোগ অমূলক নয়। আমি দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করতে মহিউদ্দিন ভাইসহ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা প্রার্থনা করি। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ সিডিএ চেয়ারম্যানকে অভিহিত করেন যে, চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিপুল অংকের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। তা যদি নয়-ছয় হয় তাহলে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। আমাদের এও অভিজ্ঞতা রয়েছে যে, ক্ষেত্র বিশেষে উন্নয়নের জন্য সরকারী বরাদ্দের বড় অংশ লোপাট হয় বা পরিকল্পনা হীনতার কারণে প্রকল্পের ইতিবাচক সুফল জনগণ ভোগ করতে পারে না। এই বিষয়টির দিকে যদি লক্ষ্য রেখে সিডিএ কর্তৃপক্ষ সতর্ক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণঅসন্তোষের সৃষ্টি হবে এবং এ জন্য সিডিএ-কে অবশ্যই দায়ী হতে হবে। বৈঠকে সøাইডে ডিস-úেøর মাধ্যমে সিডিএ’র অতীত কার্যক্রম এবং বর্তমানে গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলোর ডিজাইন উপস্থাপন করা হয়। ডিস-úেøতে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, আকতারুজ্জামান ফ্লাইওভার, কদমতলী ও দেওয়ানহাট ফ্লাইওভার, পতেঙ্গা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত লিং রোড, লালখান বাজার থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সেস রোড, ফৌজদারহাট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত ফোর লেন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও খাল পুন:রুদ্ধার প্রকল্পের কারিগরী অবকাঠামো তুলে ধরে নেতৃবৃন্দকে সিডিএ-এর কার্যক্রম সমূহ অবহিত করা হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, সিডিএ-র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বোর্ড সদস্য কে.বি.এম. শাহজাহান, জসিম উদ্দিন শাহ্, সিডিএ-র সচিব মিসেস তাহেরা ফেরদৌস, প্রধান প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন চৌধুরী, উপ সচিব অমল গুহ, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহিনুল ইসলাম খান, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আহমেদ মাঈন উদ্দিন, অর্থ ও হিসাব অফিসার মো: নাজের, সিস্টেম এনালাইসিস্ট মো: মোস্তফা জামান প্রমুখ।
