স্বাধীনতা পরবর্তী ৪৪ বছর পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রাম মহানগরে পূর্ণাঙ্গ পরিসরে প্রতিষ্ঠা হয়নি সরকারি কোনো কলেজ। স্বাধীনতার আগের ৫টি এবং ২০০৮ সালে সরকারি কলেজিয়েট স্কুলকে কলেজে রূপ দেয়া ছাড়া নতুন করে আর কোনো কলেজকেও সরকারীকরণ করা হয়নি। এ ৬টি সরকারি কলেজে প্রয়োজনীয় আসন না থাকায় ভালো ফলাফল করেও মানসম্মত কলেজে ভর্তি হতে পারছে না মেধাবী শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে চট্টগ্রামের ৫টি সরকারি কলেজই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীনতার আগে। সর্বপ্রথম নগরীতে ১৮৬৯ সালে চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ এরপর ১৮৭৪ সালে হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ, ১৯৪৭ সালে সরকারী কমার্স কলেজ, ১৯৫৪ সালে সিটি কলেজ ও ১৯৫৭ সালে সরকারী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
আর সবশেষ ২০০৮ সালে সরকারী কলেজিয়েট স্কুলকে কলেজে রূপান্তর করা হয়। এই কলেজগুলোতে মোট আসন রয়েছে ৫ হাজার ৫০টি। অথচ এবার শুধুমাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ১শ’ ১৬ জন। এ অবস্থায় স্বল্প সংখ্যক আসন নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কলেজ কর্তৃপক্ষকে। চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের অনেক সন্তানতুল্য শিক্ষার্থী ভাল কলেজে ভর্তি পারবে না। এজন্য খারাপ লাগছে।’ চট্টগ্রাম সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সুবীর দাশ বলেন, ‘যারা মেধাবী, ভাল রেজাল্ট করেছে তাদেরকে কিভাবে একুমুডেট করা যায়- এ ব্যাপারে আমার মনে হয় আমাদের সবাইকে উদ্যোগ নেয়া দরকার।’
এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভাল ফলাফল করার পরও সরকারী কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের চরম প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে নতুন সরকারি কলেজ নির্মাণে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এ শিক্ষাবিদ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘সরকারী কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রচুর সুযোগ রয়েছে এবং আমাদের তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে শুধুমাত্র সরকারী কলেজগুলোর উপর চাপ বাড়বে তা নয়- শিক্ষার্থীরাও হতাশায় নিমজ্জিত হবে।’ শিক্ষাবিদদের মতে, নতুন কলেজ স্থাপন না হওয়া পর্যন্ত সরকারী কলেজগুলোতে ডাবল শিফট চালু করা হলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হত্তয়ার সুযোগ পাবে। একই সাথে বিদ্যমান বেসরকারি কলেজগুলোর মান যাচাই করে সরকারীকরণ করা গেলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে বলে তারা মনে করেন।