আদালত প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবীদের জন্য নির্মিত ভবনে চেম্বার বরাদ্দ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন কুমার রায় ও সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফের অনুসারীদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। তবে এ ঘটনার পর সমিতির আসন্ন নির্বাচনে সমমনা পরিষদের পূর্ব ঘোষিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবু হানিফের পরিবর্তে সাবেক জেলা পিপি অ্যাড. আবুল হাসেমকে স্থলাভিষিক্ত করা হয় বলে জানা যায়।
আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, আইনজীবীদের জন্য শাপলা ও দোয়েল নামে দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনে চেম্বার বরাদ্দ, বিনিময় এবং স্থানান্তর চলছে। কিন্তু শাপলা ভবনে টেন্ডার ছাড়া ৭৩টি চেম্বার বরাদ্দ নিয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। গত ২০ ডিসেম্বর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গঠনতন্ত্রের ৪২ (১) বিধি অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদককে ওই বিষয়ে আলোচনার জন্য সাধারণ সভা আহ্বানের নির্দেশ দেন। সাধারণ সম্পাদক ২১ জানুয়ারি সভা আহ্বান করলে সভাপতি আপত্তি করেন। এরই মধ্যে সাধারণ সম্পাদক ভারতে গেলে সভাপতি তার নির্দেশ প্রতিপালিত হয়নি কারণ দেখিয়ে সোমবার দুপুরে সমিতির ৩ নম্বর মিলনায়তনে সাধারণ সভা আহ্বান করেন। ইতোমধ্যে ‘আইনজীবী চেম্বার স্বার্থ রক্ষা কমিটি’ নামে গড়ে উঠা সাধারণ আইনজীবীদের সংগঠনও সভাপতির অবস্থানের বিরোধিতা করে। তারাও একই স্থানে সভা আহ্বান করে। দুপুরে চেম্বার স্বার্থ রক্ষা কমিটি এবং আইনজীবী সমিতির সভাপতির সমর্থক অংশটি একই সময়ে সভা করতে ৩ নম্বর মিলনায়তনে যায়। এ সময় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। তবে জেষ্ঠ্য আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. রতন কুমার রায় বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে চেম্বার বরাদ্দ ও পরিবর্তন করেছেন। তাই সাধারণ আইনজীবীদের দাবিতে এগুলো পুনরায় টেন্ডারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ বলেন, ‘১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত আইনজীবী সমিতির বার্ষিক বিভিন্ন কর্মসূচি থাকায় ২১ জানুয়ারি সভা আহ্বান করেছি। কিন্তু সভাপতি আমার অবর্তমানে ৮ জানুয়ারি সভা ডেকে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন। তাছাড়া চেম্বারগুলো তৈরিতে প্রায় দুই কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সমিতিতে ছিল মাত্র ৩৩ লাখ টাকা। বাকি টাকার যোগান দিয়েছেন চেম্বার গ্রহীতা আইনজীবীরা। তারা নিজেরাই সরাসরি বারের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়েছেন। সভাপতি হঠাৎ বলছেন বরাদ্দ বাতিল করে টেন্ডার আহ্বান করতে। তাছাড়া গত মাসে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ভোটে সভাপতি পান ২ ভোট, আমি পাই ১৭ ভোট।’
চেম্বার স্বার্থ রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, সমিতি চেম্বার বরাদ্দ দিয়েছে। আমরা নিয়েছি। অথচ সভাপতি এখন টেন্ডারের কথা বলে সেই বরাদ্দ বাতিল চাচ্ছেন। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের জন্য তো আমরা দায়ী হতে পারি না। আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে সভাপতির লোকজন আমাদের উপর হামলা করেছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।