[english_date]

গাজীপুরে প্রথম শ্রেণীর ছাত্রীকে জবাইকরে হত্যা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে জবাইকরে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত নাজনীন আক্তার (৭) স্থানীয় চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী এবং আক্কাছ আলীর মেয়ে। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া (মোড়ল মার্কেট) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নানী মিনুজা বেগমের সঙ্গে বসতঘরে ঘুমিয়ে ছিল নাজনীন। রাত ২টার দিকে পুলিশের লোক পরিচয়ে দিয়ে কয়েকজন লোক দরজা খুলে দিতে ধাক্কা দেয়। এক পর্যায়ে নানী দরজা খুলে দিলে তিন জন লোক ঘরে ঢুকে এবং নাজনীনকে ঘুম থেকে তুলে টেনে হেঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। নানী তাদেরকে বাধা দিলে তাকে (নানীকে) ঘরে রেখে দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে দরজায় ছিটকানী আটকে দেয়। এসময় নানী ঘর থেকে ডাক চিৎকার করতে থাকেন। পরে ভোর চারটার দিকে তার ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশি এক মহিলা ঘরের দরজা খুলে দেয়। নানী তাকে সব ঘটনা খুলে বলে এবং নাতনীকে খুঁজতে থাকে। এসময় তিনি ঘরের সামনে বারান্দায় নাজনীনের জবাই করা লাশ দেখতে পান। পরে এলাকাবাসি পুলিশে খবর দিলে পুলিশ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
প্রায় সাড়ে তিনবছর আগে নিহতের বাবা আক্কাছ আলী দ্বিতীয় বিয়ে করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় বসবাস করছেন। পরবর্তীতে নাজনীনের মা আসমা বেগম অন্যকে বিয়ে করে স্থানীয় সলিং মোড় এলাকায় দ্বিতীয় স্বামীর কাছে চলে যান। চকপাড়া এলাকায় নাজনীনের নানা হাসমত আলী হাসু, নানী মিনুজা বেগম, মামা রিপন মিয়া ও নাজনীনকে নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার রাতে নানা হাসু টাঙ্গাইলে এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রিপন ছিলেন ঢাকায়। বাড়িতে শুধু নানী ও নাতনী ছিলেন।
নিহতের মামা রিপন মিয়া জানান, প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় আজগর আলীর ছেলে আব্দুল করিম ও আব্দুল কাদির এর মধ্যস্থতায় রিপনের বাবা হাসমত আলী ওরফে হাসুর চকপাড়ার প্রায় ১১শতাংশ জমি শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার ইয়াকুব আলী মেম্বারের ছেলে এমদাদুল হকের কাছে বিক্রি করে দেন। এসময় তারা তার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা নিয়ে অন্যত্র জমি কেনার আশ্বাস দেন এবং চকপাড়ায় তাদের জমিতে তিন কক্ষের একটি বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেন। টাকার বদলে ওই বাড়িসহ কিছু জমি হাসুর কাছে বিক্রিরও প্রতিশ্রুতি দেন তারা। পরে ওই বাড়িতেই বসবাস শুরু করেন তারা। কয়েকবছর পর ওই বাড়িসহ জমি রেজিস্ট্রির করার জন্য চাপ দিলে করিম ও তার ভাই কাদির নানা তালবাহানা শুরু করেন এবং ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেন। এ নিয়ে করিম ও কাদিরের সাথে রিপনদের বিরোধ চলছিল। দেড় বছর আগে ষড়যন্ত্র করে রিপনকে একটি মোটর সাইকেল চুরির মিথ্যা মামলায় আসামি করে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়। নাজনীন হত্যার ঘটনায় তাদের হাত রয়েছে। তাকে হত্যা করে আমাদের ওই বাড়ি ছাড়ার চক্রান্ত করছে তারা।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ