বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া দেশে ফিরলেও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখে তাঁর মাথা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তখন তাঁকে পাবনার হাসপাতালে পাঠানো হতে পারে।
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান আজ শুক্রবার বিকেলে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নলমুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি
আজ শুক্রবার বিকেলে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নলমুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় নৌমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নৌমন্ত্রী আজ বরিশাল ও শরীয়তপুরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য মেঘনা নদীতে আবুপুর-মৃধারহাট ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন। ফেরি সার্ভিস চালুর ফলে শরীয়তপুরের মানুষ হিজলা ও মুলাদী হয়ে সহজেই বরিশাল যেতে পারবে।
এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরা কী উন্নয়ন করলাম, উনি নাকি দেখেন না, মানুষ নাকি দেখে না। আমি আগেও বহুবার বলেছি, আজকেও বলছি, মানুষ শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে। খালেদা জিয়া দেখে না কেন জানেন? বুড়া বয়সে মানুষের যখন চোখে ছানি পড়ে, তখন কিছু দেখে না। খালেদা জিয়ার চোখে ছানি পড়েছে। সেই কারণে আমাদের উন্নয়ন দেখে নাই। আমার কথার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। খালেদা জিয়া লন্ডন গেছেন কেন বলেন তো। চোখের অপারেশন করতে। তাঁর চোখে ছানি পড়েছিল। এ কথা সত্য। সেই কারণে উনি চোখের অপারেশন করতে লন্ডন গেছেন। আর লন্ডন গিয়ে চোখের অপারেশন করে যখন ভালো হয়ে যাবে, আমার সন্দেহ উনি বাংলাদেশে ফিরে আসবেন না। যদি আসেনও, শেখ হাসিনার বর্তমান সময়ের উন্নয়ন দেখে ওনার মাথা খারাপ হয়ে যাবে। মাথা খারাপ হলে কিন্তু বিপদ আছে। ওনাকে কিন্তু পাবনা হসপিটালে ভর্তি করা হতে পারে। কারণ এই লোক যখন বাংলাদেশে এত উন্নয়ন দেখবে তখন ওনার মাথা খারাপ হওয়া স্বাভাবিক।’
নৌমন্ত্রী আরো বলেন, ‘অনেক দিন পরে খালেদা জিয়া উপলব্ধি করতে পেরেছেন হিংসা-বিদ্বেষ দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। তাহলে আপনি এতদিন হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন কেন? কেন পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছেন। সম্পদ পুড়িয়েছেন। দেড় হাজারের মতো মানুষ পুড়িয়েছেন, ট্রাক পুড়িয়েছেন, গাড়ি পুড়িয়েছেন, লঞ্চ পুড়িয়েছেন, স্টিমারে আপনারা পেট্রলবোমা মেরেছেন, রেল পুড়িয়েছেন। কেন পুড়িয়েছেন। তার জবাব দিতে হবে। বাংলাদেশে এই ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারী, আমার দেশের এই সম্পদ যাঁরা পুড়িয়েছেন, তাঁদের বিচার ইনশাল্লাহ আমরা করব। যে পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, সে বিচারের মুখোমুখি বেগম খালেদা জিয়া আপনাকে হতেই হবে। ক্ষমা পাওয়ার কোনো উপায় নাই। অন্যায় যে করবে তার বিচার হবেই।’
শাজাহান খান অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়া দেশে থাকার সময় এ দেশের মানুষকে হত্যা করেছেন। আর এখন লন্ডনে তারেক রহমানের বাসায় বসে বাংলাদেশে থাকা বিদেশি নাগরিকদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন।
একই অনুষ্ঠানে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অভিযোগ করেন, দেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে খালেদা জিয়া ধৈর্যহারা হয়ে পড়েছেন। তাঁর ছেলে তারেক রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করছেন। তাঁরা নতুন করে বাংলা ভাই, শায়খ রহমান তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বরিশাল-৩ আসনের সংসদ সদস্য টিপু সুলতান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান, শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রামচন্দ্র দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রব মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে প্রমুখ