স্ক্রিপ্ট যেন তৈরী করাই ছিল। সেই স্ক্রিপ্ট ধরে নাটক মঞ্চায়িত করাটাই ছিল বাকি। অবশেষে সেই ঘটনার হুবহু মিল রেখে নাটকটাও শেষ করে দিল প্যারাগুয়ে। চার বছর পর আবারও একইভাবে ব্রাজিলকে ট্রাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উন্নীত হয়ে গেলো প্যারাগুইয়ানরা।
খেলার নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র। এরপরই বিজয়ী দল নির্ধারনে খেলা গড়ায় টাইব্রেকার নামক ভাগ্যের খেলা লটারীতে। আর এখানে এসেই ভূলগুলো করে ফেললো দুঙ্গার অনভিজ্ঞ ব্রাজিল। স্নায়ুর চাপেই সম্ভবত নিজেদের আসল কাজটি করতে ভূলে গেলেন এভার্টন রিবেইরো এবং ডগলাস কস্তা। এ দু’জনের পেনাল্টি মিসের খেসারই শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলকে দিতে হলো ছিটকে পড়ে।
ডেরিল গঞ্জালেজের শট ব্রাজিলের জালে জড়িয়ে যেতেই আনন্দে মেতে ওঠে প্যারাগুয়ের ফুটবলাররা। ঠিক চার বছর আগে এভাবেই কোয়ার্টার ফাইনালে প্যারাগুয়ের সাথে নির্ধারিত সময় গোলশুন্য ড্র থাকার পর টাইব্রেকারের পোনাল্টি শ্যুটআউটে ২-০ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। সেবার পেনাল্টি শ্যুটে চারটি শটই মিস করেছিল এলানো, থিয়াগো সিলভা, আন্দ্রে সান্তোস এবং ফ্রেড।
প্যরাগুয়ের বিপক্ষে নেইমারহীন ব্রাজিলের শুরুটা ছিল চমৎকার। খেলার ১৫ মিনিটেই ডান পায়ের অসাধারণ এক গোলে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে প্যারাগুয়ের জালে বল জড়ান রবিনহো। গোলের যোগানদাতা ছিলেন দানি আলভেজ। গোল হজম করে পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে প্যারাগুয়ে। যে কারণে খেলার বাকিটা সময় মুহূর্মুহু আক্রমণে যায় তারা।
শেষ পর্যন্ত ৭২ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নেয় তারা। ডি বক্সের মধ্যে হাত দিয়ে বল থামিয়েছিলেন থিয়াগো সিলভা। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে স্পট কিক নেন ডেলিল গঞ্জালেজ।
১-১-এ অসমাপ্ত থাকলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথম শট নেন ফার্নান্দিনহো। তার শট জালে জড়ায়। প্যারাগুয়ের প্রথম শট নেন ওসভালদো মার্টিনেজ। সেটাও জালে জড়ায়। দ্বিতীয় শটে এসে মিস করেন ব্রাজিলের এভার্টন রিবেইরো। চতুর্থ শটটিও মিস করেন ডগলাস কস্তা। প্যারাগুয়ের চতুর্থ শটটি মিস করেন রক সান্তাক্রুজ। তার আগে গোল করেন ভিক্টর সেসেরাস, রাউল বোবাদিলা। সর্বশেষ ডেরিল গঞ্জালেজের শট ব্রাজিলের জালে জড়াতেই জয়ের আনন্দে নেচে ওঠে তারা।
প্যারাগুয়ের এই জয়ে সেমিতে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হওয়ার যে সুযোগ সেটি আর হচ্ছে না। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বরং মেসিদের মুখোমুখি হবে প্যারাগুইয়ানরা। কোয়ার্টারে মেসিরাও টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে হারিয়ে উঠে এসেছে সেমিফাইনালে।