১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কোন কারন ছাড়াই পুজি বাজারে দরপতন অব্যাহত

দেশের উভয় পুঁজিবাজারে বিগত পাঁচ কার্যদিবস ধরে ক্রমাগত দর পতন চলছে। এ সময়ের মধ্যে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমছে আশঙ্কাজনক হারে।

রোববার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টাকার অংকে লেনদেন ২ কোটির ঘরে নেমেছে। তবে এমন দর পতনের পেছনে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ নেই বলে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রোববার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪৫১৪ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩১৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৮টির, কমেছে ২৪২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ২৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। বৃহস্পতিবার  লেনদেন হয়েছিল ৪৫৬ কোটি ৪ লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার। সে হিসেবে রোববার ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৮৮ কোটি ২০ লাখ ৩২ হাজার টাকা বা ৪১.২৬ শতাংশ।

গত ২৫ অক্টোবর থেকে একটানা দর পতন চলছে। এ সময়ের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১৩৪ পয়েন্ট।

 অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক আগের দিনের চেয়ে ১০৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮৩৮৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৯৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৭টির, কমেছে ১৮৬টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টি কোম্পানির। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার। বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ২৬ কোটি ৫৯ লাখ ৪ হাজার টাকা। সে হিসেবে রোববার সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৩৬.২৫ শতাংশ।  ডিএসইতে এদিন দর বাড়ার শীর্ষ-২০ কোম্পানির মোট ১২২ কোটি ১৭ লাখ ১৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে প্রথমস্থানে উঠে এসেছে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। এর পর যথাক্রমে লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৩৩ লাখ, ইফাদ অটোসের ৯ কোটি ৬২ লাখ, সমরিতা হাসপাতালের ৮ কোটি ১৮ লাখ, কেডিএস এক্সেরসরিজের ৭ কোটি ৬৯ লাখ, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির ৬ কোটি ৩৬ লাখ, বেক্সিমকো ফার্মার ৫ কোটি ৯০ লাখ, আমান ফিডের ৫ কোটি ৮৭ লাখ, সিএন্ডএ টেক্সটাইলের ৫ কোটি ৮০ লাখ এবং সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।  ডিএসইতে এদিন দর বাড়ার শীর্ষ-১০ কোম্পানির তালিকার প্রথমস্থানে উঠে এসেছে মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজ।

এদিন এ শেয়ারের দর কমেছে ৯.৬ শতাংশ বা ২.৪ টাকা, সমরিতা হাসপাতালের ৬.০৫ শতাংশ বা ৫.৪ টাকা, জাহিন স্পিনিংয়ের ৪.৮৯ শতাংশ বা ১.২ টাকা, দেশ গার্মেন্টসের ৩.৬০ শতাংশ বা ৪.৬ টাকা, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৩.৪২ শতাংশ বা ০.৬ টাকা, জেমিনি সী ফুডের ৩.৩২ শতাংশ বা ১৪.৮ টাকা, এপেক্স স্পিনিংয়ের ২.৯৫ শতাংশ বা ২.২ টাকা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২.৫৮ শতাংশ বা ০.৩ টাকা, জিএসপি ফাইন্যান্সের ২.৩৮ শতাংশ বা ০.৩ টাকা এবং ইফাদ অটোসের শেয়ার দর বেড়েছে ২.১৯ শতাংশ বা ২.৪ টাকা।  দর কমার শীর্ষ-১০ কোম্পানির তালিকার প্রথম স্থানে উঠে এসেছে সমতা লেদার। এদিন এ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ২৩.৭৭ শতাংশ বা ৬.৮ টাকা। এরপর যথাক্রমে হাক্কানী পাল্পের ১৪.৫২ শতাংশ বা ৬.৯ টাকা, কোহিনূর কেমিক্যালেরর ১১.৩৫ শতাংশ বা ৪৪.৯ টাকা, ফাইনফুডসের ১০.৩০ শতাংশ বা ১ টাকা, বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ৯.৮৯ শতাংশ বা ১.৯ টাকা, জিল বাংলা সুগারের ৯.৬৭ শতাংশ বা ০.৯ টাকা, আজিজ পাইপসের ৯.৫৯ শতাংশ বা ৩.৩ টাকা, কেঅ্যান্ডকিউয়ের ৯.৪২ শতাংশ বা ১.৮ টাকা, ইমাম বাটনের ৮.৭৯ শতাংশ বা ০.৮ টাকা এবং শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ার দর কমেছে ৮.৭৭ শতাংশ বা ১ টাকা।

 বর্তমান বাজার তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ ছাড়াই ধীর গতিতে চলছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি প্রিয়.কমকে বলেন, বাজারে এমন দর পতনের পিছনে তেমন কোনো কারণ পাইনা। তবে কিছুদিন আগে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিদেশি বিনিয়োগে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ ছাড়া তেমন কোনো কারণ আমি দেখি না।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ