[english_date]

কারিগরি ত্রুটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত

এ বছর রমজানে বিদ্যুতের পর্যাপ্ত উৎপাদন থাকলেও কারিগরি ত্রুটি, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার নানা সীমাবদ্ধতায় বার বার হোঁচট খাচ্ছে ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা’। ফলে রাজধানীসহ প্রায় পুরো দেশ-ই আবারও লোডশেডিং- এর কবলে পড়ছে। তীব্র দাবদাহের মধ্যেই এবার চলছে পবিত্র রমজান, তার ওপর ঘন-ঘন বিদ্যুৎ বিপর্যয়; সবমিলে নাগরিক ভোগান্তি যেনো চরমে উঠেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিতরণ সংস্থাগুলো’র আশা- বিকল হয়ে পড়া সাব-স্টেশন ও সঞ্চালন লাইনগুলোর মেরামত প্রক্রিয়া শেষ হলে, আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। ঋতু হিসেবে সময়টা বর্ষাকাল হলেও, এ-বছর দাবদাহের তীব্রতা যেনো কমছে না কিছুতেই। আর এর মাঝেই চলছে সিয়াম-সাধনার মাস রমজান।

তীব্র দাবদাহের পাশাপাশি এবারের রমজানে নাগরিক ভোগান্তিকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে বিদ্যুতের নিত্য যাওয়া-আসা। কখনও মধ্যরাত্রি, কখনওবা সন্ধ্যার লোডশেডিং এর ফলে শারমিন আক্তারের মতো অনেক গৃহিণীকেই দিনভর রোজা রেখে ইফতার তৈরি করতে হচ্ছে মোমের আলোয়।

তিনি বলেন, ‘খাবার-দাবার তৈরি করতে খুবই সমস্যা হয়। রমজানে কাজের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে কাজ তো আর ফেলে রাখা যায় না, বাধ্য হয়েই মোমবাতি বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।’ আবাসিক ভবনের একজন কেয়ারটেকার বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় আমি ঠিকমতো পানি ওঠাতে পারি না, ভবনের বাসিন্দারা এতে আমাদের ওপর বিরক্ত হন।’ বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসির দাবি, সঞ্চালন লাইনে জটিলতাসহ ধানমন্ডিতে সাব-স্টেশনে ত্রুটির ফলেই এমন অবস্থা; যা হয়তো স্থায়ী হতে পারে এক সপ্তাহ পর্যন্ত।

ডিপিডিসি’র এমডি নজরুল হাসান বলেন, ‘কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্টে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে, একটি বন্ধ আছে। এর কারণেই হয়তো কিছুটা উৎপাদন কম হয়েছে। ধানমন্ডিতে সাব-স্টেশনে ত্রুটির কারণে আমাদের আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।’ অন্যদিকে সঞ্চালনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পিজিসিবি বলছে- চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

পিজিসিবি’র নির্বাহী পরিচালক তপন কুমার রায় বলেন, ‘সঠিক বিদ্যুৎ সঞ্চালন তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার ওপরও নির্ভর করে। আবহাওয়া পরিবর্তন হলে কিছুটা উন্নতি হতে পারে। এছাড়া, ভোলা পাওয়ার স্টেশন চালু হতে যাচ্ছে, এটিসহ আমাদের অন্যান্য প্রকল্প চালু হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ তবে, বিদ্যুৎ খাতের অন্যতম পরিকল্পনাকারী বিভাগ ‘পাওয়ার সেল’ আশা করছে- দু’তিন দিনের মধ্যেই সঞ্চালন লাইনের জটিলতা নিরসন হলে দুর্ভোগ কমবে গ্রাহক পর্যায়ে।

পাওয়ার সেলের ডিজি মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা উৎপাদনের ওপর যতটা জোর দিতে পেরেছি, সঞ্চালন ও বিতরণে ততটা জোর দিতে পারিনি; এ কারণে কোনো কোনো জায়গায় উৎপাদন পর্যাপ্ত হলেও মাঝে মাঝে গ্রাহক পর্যায়ে পেতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই এসবের সমাধান হবে।’ এছাড়া, বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ব্যবহারে গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ