১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কাকরাইল মসজিদে তাবলীগ কার্যক্রম চালাতে পারবেন না সাদপন্থিরা

রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে রাত যাপনসহ তাবলীগ জামাতের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারীদের শুধুমাত্র শুক্রবার কাকরাইল মসজিদ ঘিরে বড় ধরনের জমায়েত থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধে সংঘর্ষের পর আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখার ওই আদেশে বলা হয়েছে, ‘শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদে মাওলানা সাদ গ্রুপের অনুসারীদের শবগুজারিসহ (রাত্রিযাপন) তাবলীগ জামাতের সকল কার্যক্রম হতে বিরত থাকার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একই শাখা থেকে জারি করা আরেকটি আদেশে বলা হয়েছে, শুক্রবার কাকরাইল মসজিদের আশেপাশে মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের- এর অনুসারীদের কোনো রকমের বড় জমায়েত হতে বিরত থাকার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
দুই সপ্তাহের জন্য কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ১৫ নভেম্বর থেকে ঢাকায় তাবলীগ জামায়াতের এই মারকাজে (কেন্দ্রে) জড়ো হন সাদপন্থিরা। অন্যদিকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাকরাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন জুবায়েরপন্থিরা। একইসঙ্গে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ এবং তাবলীগের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের কোনো কার্যক্রম চালাতে না দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।
এ বিষয়ে মাওলানা সাদের অনুসারী রেজা অরিফ বলেন, আমরা শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। আশা করি, পরবর্তীতে সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা করার সুযোগ করে দেবে।
১৭ ডিসেম্বর গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের আহমেদ ও মাওলানা সাদ কান্দলভি অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সংঘর্ষে চারজন নিহতের পাশাপাশি ৫০ জন আহত হয়েছেন।
তাবলীগ জামাতের সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে জুবায়েরপন্থিরা (শুরায়ে নেজামী)। মঙ্গলবার দুপুরে কাকরাইল মসজিদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাবলিগ জামাতের জুবায়েরপন্থি আলেম উত্তরা জামিয়াতুল মানহালের প্রিন্সিপাল কেফায়েতুল্লাহ আজহারী।
তিনি বলেন, কাকরাইল মারকাজ ও টঙ্গী ইজতেমার মাঠসহ তাবলীগের সব কার্যক্রম শুরায়ে নেজামীর অধীনে পরিচালিত হওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এসব দাবি বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাকরাইল ও তার আশপাশের এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করা হবে।
আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্ব এবং ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ