২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কলম্বিয়ায় জিকা আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে

কলম্বিয়ার জাতীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান শনিবার জানিয়েছে- মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী নারীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে এই সংখ্যা প্রায় তিন হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস । বর্তমানে প্রায় ৩১,৫৫৫ জন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যা দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের এপিডেমিওলোজি বুলেটিনে বলা হয়েছ। এদের মধ্যে ৫,০১৩ জন গর্ভবতী নারী।  এক সপ্তাহে দেশটিতে ২৩ শতাংশ বেড়েছে জিকা আক্রান্তের হার । ক্ষেত্রে এই হার ৫৭ দশমিক ৮ শতাংশ গর্ভবতী নারীর ।

স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানটি আরো জানিয়েছে, জিকা আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের ২৯ দশমিক ৪ শতাংশই নর্তে দে সানতানদার প্রদেশের। প্রদেশটির সঙ্গে ভেনেজুয়েলা সীমান্ত রয়েছে। কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ সন্তান ধারণে ইচ্ছুক নারীদের ছয় থেকে আট মাস অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।  সম্প্রতি ছোটমাথা নিয়ে জন্মগ্রহণকারী ৪,০০০ শিশুর সঙ্গে জিকা ভাইরাসের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা এ বিষয়টি পরীক্ষা করছে ব্রাজিল। মেডিক্যাল পরিভাষায় শিশুদের ছোট মাথা বা ত্রুটিযুক্ত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মানোর সমস্যাটিকে বলা হয় ‘মাইক্রোসেফালি’।


zika-1চিকিৎসকেরা এরই মাঝে সদ্যোজাত শিশু কিংবা মায়ের দেহে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে এমন ১৭ ঘটনা শনাক্ত করেছেন। কিন্তু এরপরও জিকা ভাইরাসের কারণে ‘মাইক্রোসেফালি’ সমস্যা বা ছোট মাথার শিশুর জন্ম হচ্ছে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জিকা সম্পর্কে এখনো সম্পূর্ণরূপে জানা সম্ভব হয়নি। এ রোগের কোনো প্রতিষেধকও নেই। আক্রান্তদের ৮০ ভাগের মধ্যেই কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বরসহ সামান্য অসুস্থতা বোধ করেন, শরীরে ফুসকুড়ি ওঠে এবং চোখ লাল হয়ে যায়।

ক্যারিবীয় অঞ্চলের কলম্বিয়া পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় দেশ। দেশটির কার্তাগেনা এবং সান্তা মার্তা ভ্রমণপিয়াসীদের মূল আকর্ষণ। ওই দুটি অঞ্চলে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ মাসের শুরুতেই বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জিকার প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন অঞ্চল থেকে আসা ব্যক্তির দেওয়া রক্ত গ্রহণ না করার জন্যও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি রোগটি এত দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে যে দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকায় চলতি বছর ৪০ লাখের মতো মানুষ ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হতে পারেন বলে আশংকা করা হচ্ছে। এরমধ্যে শুধু কলাম্বিয়াতেই ছয় লাখ মানুষ জিকায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ব্যবহারের উপযোগী প্রতিষেধক তৈরি করে বাজারে ছাড়তে দশ বছর সময় লেগে যেতে পারে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। এরআগে যুক্তরাষ্ট্রে ‘যৌন সংসর্গের’ মাধ্যমে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের বিরল একটি ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সাধারণত এডিস মশার মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ছড়ায়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, যৌন সংসর্গের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানোর ঘটনা বিরল। রয়টার্স।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ