রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও ঝিনাইদহে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন যুবক নিহত হয়েছেন। পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তারা নিহত হন।
রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোববার দিবাগত রাতে নিহত ব্যক্তির নাম রাজিব।
উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনূস আলী বলেন, রাজিবের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তার লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উত্তরখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাফফর হোসেন বলেন, পুলিশের অভিযানকালে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন রাজিব। কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ওই অভিযান চালায়। তাদের সহযোগিতা করে উত্তরখান থানা-পুলিশ।
গাজীপুরে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গাজীপুরের বনগ্রাম এলাকার রফিক (৩০) নিহত হয়েছেন। এসময় র্যাবের দুই সদস্য পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের এসআই নাসির (৩৫) ও নায়েক আবুল হোসেন (৪৫) আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে র্যাব। সোমবার ভোর রাত দেড়টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার কুমারখাদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের সিনিয়র সহকারি পরিচালক জিয়াউর রহমান জানান, রাত দেড়টার দিকে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যোনে কাছে র্যাবের একটি দল টহল দেয়ার সময় কুমারখাদা এলাকায় পৌঁছলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এসময় র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলে রফিকুল ইসলাম নামের ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অস্ত্র ও চাঁদাবাজির কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও জানায় র্যাব।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুস সালাম সরকার বলেন, নিহত যুবককে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার পেটের বামপাশে গুলির আঘাত রয়েছে।
অন্যদিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ফারাশপুরে গ্রামে ঘরে পেট্রল ঢেলে ঘুমন্ত শাশুড়ি তাছলিমা খাতুন (৪৫) ও শালিকা তাছমিয়া ওরফে তাছমিনকে (১৮মাস) পুড়িয়ে হত্যা মামলার আসামি জামাই কামাল হোসেন (৩৫) র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। নিহত কামাল যশোরের খাজুরা এলাকার লেবুতলা আগ্রাইল গ্রামের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে। সোমবার রাত ৩টার দিকে কালীগঞ্জ-যশোর মহাসড়কের বারবাজার কড়ই তলা নামকস্থানে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। র্যাব বলছে কামালের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১ রাউন্ড গুলি ও ১টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব ৬ এর কমান্ডার মেজর সুরুজ জানান, সোমবার ভোরে র্যাবের একটি দল বারবাজার এলাকায় টল দিচ্ছিল। এ সময় একদল সন্ত্রাসী র্যাবের গাড়িকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র্যাবও পাল্টা চালালে কামাল হোসেন গুলিবিদ্ধ হয় এবং অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। র্যাব আরো জানান, তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহত কামালের চাচা শ্বশুর সাইদুর রহমান মৃতদেহটি কামালের বলে নিশ্চিত করে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি জহির উদ্দিন জানান, পুলিশ কামালকে আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে। সে পলাতক ছিল।
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবার রাতে নিজের স্ত্রী উর্মি খাতুনকে পুড়িয়ে হত্যার উদ্যেশে কামাল হোসেন ও তার লোকজন কালীগঞ্জ উপজেলার ফারাশপুর গ্রামে নজরুল ইসলাম ওরফে চান আলীর ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে কামালের শ্বাশুড়ি তাছলিমা খাতুন ও ১৮ মাস বয়সী শালিকা তাছমিয়া ওরফে তাছমিন নিহত হয়। আহত হয় নজরুল ইসলাম ও উর্মি খাতুন। এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, পুলিশের খুলনা রেঞ্চের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকরামুল হাবিব, ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবার আলী শেখসহ পুলিশ র্যাবের উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা। তারা কামালকে আটকের প্রতিশ্রুতি দেন। ঐদিন রাতেই নিহত তাছলিমা খাতুনের ছেলে টনি বিশ্বাস বাদি হয়ে কামালকে প্রধান আসামি করে আরো ৩/৪জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে একটি হত্যা মামলা করেন।