[english_date]

ওয়ার্নারকে জীবন দান করে বাংলাদেশের সর্বনাশ ডেকে আনেন মুমিনুল

উড়ন্ত মুশফিকের দূর্দান্ত ক্যাচের প্রশংসা করা উচিত নাকি তারই সহজতম স্ট্যাম্পিং মিসের সমালোচনা করা উচিত? ক্রিকেট কখনও কখনও নিষ্ঠুর তার আরেকটি প্রমাণ পাওয়া গেল চট্টগ্রামের সাগরিকায়! নয়তো দিনের প্রথমার্ধের নায়ক কি দিনের শেষে খলনায়কে পরিণত হবেন? সাগরের বিশাল জলরাশির মত মন নেই ক্রিকেটপ্রেমিদের। তাই নায়ককে খলনায়কে পরিণত করতেও দ্বিধা নেই!

স্টিভেন স্মিথকে আউট করার দশ ওভার পরই ওয়ার্নারকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ স্বাগতিকরা। ৫২ রানে থাকা ওয়ার্নারকে জীবন দান করে বাংলাদেশের সর্বনাশ ডেকে আনেন মুমিনুল হক! পরবর্তীতে দিন শেষ হওয়ার ৮ ওভার আগে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে দ্বিতীয় জীবন পান ওয়ার্নার। মেহেদীর বলে স্ট্যাম্পিং মিস করেন মুশফিকুর রহিম। অথচ মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে মুশফিক যেভাবে ম্যাট রেনশর ক্যাচ নিয়েছিলেন তাতে শুধু চোখ জুড়ায়নি, মনকেও দিয়েছিল প্রশান্তি। কিন্তু সেই স্বস্তির পরশ শেষ বিকেলে উধাও হয়ে যায় ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্বের অবিচ্ছিন্ন ১২৭ রানের জুটিতে।

দিন শেষে ওয়ার্নারকে জীবন দেওয়ার দুটি চিত্রই বাংলাদেশের আক্ষেপ বাড়িয়েছে। সেই ওয়ার্নার দিন শেষে অপরাজিত ৮৮ রানে। সঙ্গীহ্যান্ডসকম্বের ব্যাটে৬৯ রান। অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ উইকেটে ২২৫। মাত্র ৮০ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা।
প্রথম দিনের ২৫৩ রানের সঙ্গে আরও ৫২ রান যোগ করে ৩০৫ রানে প্রথম ইনিংস থামে বাংলাদেশের। জবাবে শুরুতে মুস্তাফিজুর রহমানের আক্রমণ। ম্যাট রেনশ তার লেগ স্ট্যাম্পের উপরের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে মুশফিকের গ্লাভসে বল যেতেই পুরো বাংলাদেশের গগনবিদারী উল্লাস। মনে হচ্ছিল চট্টগ্রামে ফিরে এসেছিল মিরপুর।

কিন্তু প্রতিদিনই যে ‘সানডে’ নয় তা মনে করিয়ে দিলেন ওয়ার্নার-স্মিথ। দ্বিতীয় উইকেটে ৯৩ রানের জুটি গড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। মুশফিকের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন তারা। কারণ, স্মিথ ই ততক্ষণে তুলে নিয়েছিলেন ফিফটি এবং ওয়ার্নার ছিলেন সেই পথেই। ওই সময়ে ব্রেক থ্রু ছিল বাংলাদেশের একমাত্র চাওয়া। দায়িত্বটা নিজ কাঁধে তুলে নেন তাইজুল ইসলাম। নিজের প্রথম বলেই বোকা বানিয়ে আউট করেন অসি অধিনায়ককে। বাঁহাতি স্পিনারের সোজা ডেলিভারি স্মিথের ব্যাট-প্যাড ফাঁকি দিয়ে স্ট্যাম্পে আঘাত করে।

তখন অস্ট্রেলিয়ার ৯৮ রানে ২ উইকেট। দিন শেষে রান ২২৫, ২ উইকেটে। তৃতীয় উইকেটে ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্ব ৩৫.৫ ওভারে তুলেছেন ১২৭ রান। বিশেষ করে শুধু শেষ সেশনে দু্ই ব্যাটসম্যান ওভারপ্রতি৩.৮ গড়ে১১৪ রান করেছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং অনেকটাই উপকারে এসেছে তাদের! আক্রমণাত্মক ফিল্ডিংয়ের পরিবর্তে মুশফিকের ফিল্ডিং ছিল অনেকটাই রক্ষণাত্মক। ক্লোজ ইন ফিল্ডার ছিল সামান্যই। তীব্র গরমে হাসফাস করলেও ব্যাটিংয়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্ব। ঢাকা টেস্টের পর এশিয়ায় তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার অপেক্ষায় ওয়ার্নার। অন্যদিকে হ্যান্ডসকম্ব ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির অপেক্ষায়!
দিনের শেষটার মতো বাংলাদেশের দিনের শুরুটাও ভালো হয়নি। আগের দিন ৬২ রানের সঙ্গে দলপতি মুশফিক যোগ করেন মাত্র ৬ রান। ১৯ রানে দিন শুরু করা নাসির ৫ রানের জন্য মিস করেন ফিফটি। তবুও তার ৪৫ রানের দৃঢ়তায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। আগের দিনের ৫ উইকেটের সঙ্গে আজ আরও ২টি উইকেট নেন নাথান লায়ন। সব মিলিয়ে ৭ উইকেট নিয়ে হেরাথ, ম্যাকগিল এবং কানেরিয়ার পাশে বসলেন লায়ন। কারণ তারা চার স্পিনারই বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এক ইনিংসে নিয়েছেন ৭টি উইকেট।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ