১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এপ্রিলে জাপান সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নতুন করে জাপান সফরের প্রস্তাব দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি। আগামী এপ্রিলে এ সফর হতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

 

বুধবার (১১ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাতের পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, জাপানি রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী মার্চ-এপ্রিলে জাপান সফরের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এপ্রিলে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সাক্ষাতে দুই দেশের সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে নবনিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধন রয়েছে। এ সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যেতে রাষ্ট্রদূত কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন।

কিমিনোরি বলেন, ভবিষ্যৎ সম্পর্ক হবে কৌশলগত সম্পর্ক। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে জাপান সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ আনতে কাজ করবেন জানিয়ে কিমিনোরি জানান, তিনি দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য জাপান বাংলাদেশের কাঠামোকে শক্তিশালী করতে কাজ করবেন। বাংলাদেশে কোর জাপানি বিনিয়োগ আনতে এবং দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে কাজ করবেন বলেও জানান।

রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ চায় এ রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক। জাপান বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক এবং আসিয়ান ফোরামে তুলবে।

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কক্সবাজার ও ভাষানচরে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করতে জাইকা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করছে। এ ছাড়াও, জাপানের কিছু এনজিও এসব এলাকায় কাজ করছে।

মেট্রোরেল নির্মাণে সহায়তার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মেট্রোরেল জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মেট্রোরেলের অন্য লাইনগুলো নির্মাণেও জাপান সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশা করছি।

সাবরাং পর্যটন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি বিনিয়োগ আহ্বান করেন শেখ হাসিনা। তিনি জাপানকে এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়ারও আমন্ত্রণ জানান।

আগামী বছর উদ্বোধন হতে যাওয়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ওই টার্মিনালের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও একটি জাপানি কোম্পানিকে দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ এশিয়ার বিনিয়োগকারী দেশগুলোর জন্য সেরা বিনিয়োগ প্যাকেজ অফার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগ আহ্বান করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক সুবিধার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে তাদের পণ্য রপ্তানি করে মুনাফা অর্জন করতে পারে।

জাপানের সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশের পরম বন্ধু। জাপানের অবস্থান তার (প্রধানমন্ত্রী) এবং তার পরিবারের সদস্যদের হৃদয়ে।

উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরের শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের কথা ছিল। তবে আনুষ্ঠানিক দিন-তারিখ তখন ঠিক হয়নি। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয় জাপানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সফর হচ্ছে না।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ