জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি ও সরবরাহের কাজ ছিল নির্বাচন কমিশনের। তবে এই দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগকে দিতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’- এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (১২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নির্বাচন কমিশন কেবল ভোটার সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অন্যদিকে আইনের অধীনে সুরক্ষা বিভাগের একটি নিবন্ধক অফিস থাকবে, তারা নিবন্ধনের কাজ করবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছিল। উভয়পক্ষই জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রমকে নিজেদের আওতায় নিতে চেয়েছিলেন।
সর্বপ্রথম ২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি করে এটিএম শামছুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এরপর সেটির নাম দেয়া হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। এনআইডি সুরক্ষা সেবা হস্তান্তর নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের টানাপোড়েন প্রায় ১৪ বছরের।
গত বছরের শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নিজেদের কোনো মতামত না থাকলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপের বিষয়ে কর্মকর্তাদের আপত্তির বিষয়টি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছিলেন।
অন্যদিকে জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার যৌক্তিকতা তুলে ধরে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম শুধুমাত্র ভোটার বা ১৮ বছরের বেশি বয়সি নাগরিকের জন্য নয়, বরং সব নাগরিকের জন্য প্রাসঙ্গিক। এছাড়া ব্যাংক হিসাব খোলা, চাকরির আবেদন, ইউটিলিটি সংযোগ, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীন বিভিন্ন ভাতার আবেদন, খাস জমিপ্রাপ্তির আবেদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে ভোটার হওয়ার বিষয় মাত্র একটি। অন্যান্য ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বিষয়ে ইসির কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।’
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রমটি পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নির্বাহী বিভাগের অধীনে হয়ে থাকে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এটি নির্বাহী বিভাগের অধীনে হওয়া উচিত এবং এ কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’