১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এক বছরের মধ্যে দুবার হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

আগুন ঝরালেন কাটার স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজুর রহমান। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে সান্ত্বনার জয়টাও মিলল না এল্টন চিগুম্বুরার জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের দেয়া ২৭৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২১৫ রানে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৬১ রানের পরাজয়ে আবারো বাংলাওয়াশের লজ্জায় লাল জিম্বাবুইয়ানরা।
২৭৭ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সফরকারীদের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। চারের মার দিয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করেন চামু শিভাভা। কিন্তু বোলার যে কাটার স্পেশালিস্ট মুস্তাফিজুর রহমান। পরের বলেই বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন শিভাভাকে। এরপর নিজেদের ইনিংস গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে থাকেন রেগিস চাকাবভা এবং ক্রেইগ আরভিন। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় চাকাবভার বিদায়ের পরপরই বিদায় নেন আরভিনও। ৪৭ রানে তিন উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক চিগুম্বুরা ও শন উইলিয়ামস। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৮০ রান যোগ করে জয়ের দিকেই এগোতে থাকে সফরকারীরা। দলীয় ১২৭ রানে চিগুম্বুরাকে ফিরিয়ে প্রথম বিপদ দূর করেন সাব্বির রহমান। ৪৭ বলে ৪৫ রানে আসে চিগুম্বুরার ব্যাট থেকে।
তবে অপরপ্রান্ত থেকে আক্রমণ চালাতে থাকেন শন উইলিয়ামস। ২ রানের ব্যবধানে ওয়েলার ও উইলিয়ামসকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করেন আল আমিন হোসেন ও মাশরাফি। ৮৪ বলে ৬৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা উইলিয়ামস মাশরাফির বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
তার বিদায়ে এখন জয়ের সুবাস পেতে শুরু করে টাইগাররা। বাকি কাজটুকু সারতে খুব বেশি সময় নেননি মুস্তাফিজ। পরপর দুই বলে সিকান্দার রাজা ও লুক জঙ্গেকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন সাতক্ষীরার এই তরুণ। হ্যাটট্রিক না হলেও এর পরের ওভারেই নিজের বলে ক্যাচ নিয়ে সাজঘরে ফেরান তিনাশে পানিয়াঙ্গারাকে। জিম্বাবুয়ের রান তখন ২১৪-৯। এর পরের ওভারেই শেষ আনুষ্ঠানিকতাটুকু সারেন আরাফাত সানি। মুজারাবানিকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে ২১৫ রানে গুটিয়ে দেন সফরকারীদের ইনিংস। সফলতম বোলার মুস্তাফিজ ৩৪ রান খরচায় তুলে নেন ৫টি উইকেট। বাকি ৫টি উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন মাশরাফি, নাসির, আল আমিন, আরাফাত সানি ও সাব্বির রহমান।
এর আগে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত শুরুর পরও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে জিম্বাবুয়েকে  ২৭৭ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। তামিম ও ইমরুলের সমান ৭৩ রানের সুবাদে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।
মিরপুরে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে দুর্দান্ত শুরু করে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। তাদের ১৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটির উপর ভর করে বিশাল সংগ্রহেরই স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। ৯৫ বলে ৭৩ রান করে সিকান্দার রাজার বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান ইমরুল। এর একটু পরেই ফিরে যান আরেক ওপেনার তামিমও। তিনিও ৭৩ রান করে স্ট্যাম্পিং হন। বোলার এবার ওয়েলার।
এরপর মুশফিক-সাব্বিররা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহ আর সম্ভব হয়ে ওঠে নি। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে আক্রমণ চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ম্যাচের শেষ ওভারে রিয়াদ ৪০ বলে ৫২ রান করে রান আউটের শিকার হন। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৭৬ রান সংগ্রহ করতে পারে টাইগাররা। মুশফিকের ব্যাট থেকে ২৫ বলে আসে ২৮ রান। আর শেষের দিকে মাশরাফি খেলেন ১১ বলের ১৬ রানের ছোট একটি ক্যামিও। জিম্বাবুয়ের লুক জঙ্গে ও গ্রায়েম ক্রেমার ২টি করে উইকেট নেন।
টানা পঞ্চম সিরিজ জয়টা হোয়াইট ওয়াশ দিয়েই শেষ করল টাইগাররা। বল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন মুস্তাফিজ।

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ