আর্থনিউজ২৪: এই মাসের ১০ তারিখে লন্ডন সফর থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওইদিন বিকাল ৫টায় তার বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সোমবার বিএনপির প্রেসউইং সূত্র থেকে এই তথ্য প্রদান করা হয়। একই সাথে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের দফতর সম্পাদক মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র থেকে জানা যায়, লন্ডন সফরে থাকা খালেদা জিয়ার প্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিএনপিতে। দৃশ্যত দলীয় নেতারা তার সফরকে ‘একান্ত ব্যক্তিগত ও চিকিৎসাকেন্দ্রীক’ হিসেবে দেখাতে চাইলেও কার্যত গভীর রাজনৈতিক কারণ নিহিত ছিল বিএনপি নেতার এই লন্ডন সফরে।
তবে এ সফরে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান ও বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সম্মতি এবং সক্রিয়তা আদায়ের বিষয়টিও প্রত্যাশিতভাবে পূরণ হয়নি। যদিও ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিগত দিনের সম্পর্ক আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে বলেই মনে করছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলের সূত্রগুলো।
জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার বড় সন্তান ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন প্রায় ৭ বছর ধরে। ধারণা করা হচ্ছে দল পুর্নগঠনসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে পরামর্শ করছেন বেগম জিয়া। যা দেশের রাজনীতিতে কোনঠাসা হয়ে পড়া বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।
তবে সরকারি দলের পক্ষ থেকে তার লন্ডন অবস্থানকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিভিন্নভাবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বেগম জিয়াকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও ওই ঘটনায় তাকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য রেখেছেন। যদিও বিএনপির তরফ থেকে বরাবরই এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া সে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের বরাতে কোন কোন সংবাদমাধ্যম এরইমধ্যে বলেছে চিকিৎসা শুধু নয় বরং রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই দেশে ফিরতে দেরি করেছেন খালেদা জিয়া। তাদের মতে, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ‘রোডম্যাপ’ তৈরি ছাড়াও দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি আদায়ে বিদেশিদের মধ্যে ‘ইতিবাচক মনোভাব তৈরি’র চেষ্টাও থাকতে পারে তার এই সফরে।
বিএনপির বিভিন্ন সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, এখন দেখার বিষয় খালেদা জিয়া দেশে ফিরে বিএনপির রাজনীতিকে আবার নতুন করে সাজাবেন না তাদের কোণঠাসা অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
প্রসঙ্গত, ১৫ সেপ্টেম্বর দেশ ত্যাগের ১৫ দিন পর তার দেশে ফেরার কথা ছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে ৩ অক্টোবর, ৮ অক্টোবর, ১৬ অক্টোবর, ২০ অক্টোবর এবং সর্বশেষ ২ নভেম্বর খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার কথা থাকলেও তিনি দেশে ফেরেননি।