৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উপদেষ্টা পরিষদে ফারুকী, হেফাজতের ‘তীব্র নিন্দা’

“নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন, সমর্থন যুগিয়েছেন। এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ট সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ট ছিলেন ফারুকী,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অন্তর্ভুক্ত করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
সোমবার সংগঠনের ঢাকা মহানগর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আফসার মাহমুদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিবৃতির বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতা জুনায়েদ ও মামুনুল বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে অন্তর্ভুক্ত করায় আমরা হতবাক হয়েছি। তিনি শাহবাগী নাস্তিক্যবাদীদের দোসর।
“দেশের আধ্যাত্মিক রাহবার, হেফাজত আমীর শায়খূল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. কে তেঁতুল হুজুর বলে ব্যঙ্গ করে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, যা ক্ষমা করা যায় না। তাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের তিন মাসের মাথায় রোববার উপদেষ্টা পরিষদ আরেক দফায় বাড়ানো হয়।
নতুন শপথ নেওয়া তিন উপদেষ্টার একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা ফারুকী। পরে রাতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালিয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।
এই চলচ্চিত্র নির্মাতাকে উপদেষ্টা করার সমালোচনা করে বিবৃতিতে হেফাজতের ঢাকা মহানগরের দুই নেতা বলেন, “বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই জালেম শাসকগোষ্ঠীর পতন নিশ্চিত হয়।
“মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ একাধিক উপদেষ্টা সেই পতিত আওয়ামী সরকারের দোসর। বিভিন্ন সময়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা উপায়ে শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করেছেন, সমর্থন যুগিয়েছেন। এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ট সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের একাধিক নেতার ঘনিষ্ট ছিলেন ফারুকী।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “ফারুকী গণঅভ্যুত্থানের পর সেই শাসনের প্রতীক সংস্কারের পক্ষে আওয়াজ তুলে, এক প্রকার ফ্যাসিবাদীদের পক্ষে নিজের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন, যা দেশবাসীর দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”
অন্তর্বর্তী সরকারও ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে হেফাজত নেতারা বলেন, “যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করেছিল, তাদের বিচার এখনও হয়নি। এর বদলে তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
”অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আমাদের সন্তানরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছে। ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে, এদেশের আপামর তৌহিদী জনতা আপনাদেরকেও ক্ষমা করবে না।
দেশে যোগ্যতাসম্পন্ন লোকের অভাব পড়েছে কি না, এমন প্রশ্ন রেখে বিবৃতিতে বলা হয়, “ফারুকীর মত একজন নাট্যকারকে কোন যুক্তিতে উপদেষ্টায় যোগ দেওয়া হয়েছে তা দেশবাসী জানতে চায়।’

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp
Share on print

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ সংবাদ