আজকের মুসলিমবিশ্বে নতুন করে দাওয়াত ও তাবলীগের তৎপরতার ভীষণ প্রয়োজন । এক্ষেত্রে দ্বীনের দায়ী ও সংশ্লিষ্টদের শ্লোগান এবং লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হবে—‘আসুন! নতুন ভাবে, নতুন করে ঈমান আনি’। এটি কেবলমাত্র মুখে বুলি আওড়ানো ও শ্লোগান তোলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবেনা। এ নিয়ে কাজ শুরু করার পূর্বে বুদ্ধিদীপ্ত ও কৌশলপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহন করা অবশ্য কর্তব্য। গভীর মনোনিবেশ ও শান্ত-সমাহিত মস্তিষ্কে ভাবতে হবেযে- ‘যারা আধুনিক শিক্ষিত শ্রেণী হওয়ার সুবাধে জীবন ও জীবন সংশ্লিষ্ট সবকিছুকে একঘরে করে রেখেছে এবং ক্ষমতার লাগাম নিজেদের করায়ত্ব করে রেখেছে। তাদের কিভাবে নতুন ভাবে ইসলামের পথে অগ্রসর করা যায়। কিভাবে তাদের হৃদয়ের মনিকোঠায় ঈমান-আমল, ইসলামী মূল্যবোধ ও আল্লাহ্রর প্রতিআস্থা-বিশ্বাসের প্রাণ বায়ু সঞ্চার করা যায়। এবংকিভাবে পাশ্চাত্যের দর্শন-তত্ত্ব, অধুনা সভ্যতা-সংস্কৃতিও ধর্মহীন চিন্তা ধারার বলয় থেকে তাদের মুক্ত রাখা যায়।’এসব কিছু হতে হবে দাওয়াতের কর্মীদের সকাল-সন্ধ্যার ভাবনা-কল্পনা। প্রতি মূহূর্তের চিন্তা-চেতনা ও হৃদয়ের তপ্ত ব্যথা।
এজন্যে এমনকিছু ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন,যারা চরম একাগ্রতা ও ঐকান্তিকভাবে দাওয়াত এবং তাবলীগের ময়দানে আত্মনিয়োগ করবে। নিজেদের মেধা-যোগ্যতা, জ্ঞান-প্রতিভা ও শক্তি-সামর্থকে এ কাজের পথে অকাতরে বিলিয়ে দিবে। কোন ধরনের সুনাম-সুখ্যাতি ও পদ-মর্যদা কিংবা সরকারী-বেসরকারী কোনসাহায্য-সহযোগিতার লালসাক্রান্ত হবেনা। কারো প্রতিহিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃন্য মনোভাব প্রকাশ করবেনা। তারা শুধুমাত্র অন্যের উপকারে ব্রতী হবে। কারো দ্বারা উপকৃত হওয়ার সামান্য চেষ্টা টুকু করবেনা। দান-বদান্যতায় তাঁরা প্রাগ্রসর হবে। অন্যের কাছ থেকে কিছু গ্রহনে তাঁরা যোজন যোজন দূরত্বে অবস্থান করবে। তাঁরাঅন্য কোন শ্রেণী-গোষ্ঠির সাথে এমন কোন বিষয়ে মতানৈক্যে লিপ্তহবেনা, যে বিষয়টি জানতে ঐ শ্রেণী বা গোষ্ঠি প্রবল আগ্রহী ও আকাঙ্খিত। এমনকি এর জন্যে জীবনউৎস্বর্গ করতেও প্রস্তুত। দাওয়াত ও তাবলীগের কর্মীরা এমন হতেবলার নিগূঢ় রহস্য এই যে- দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে নিয়োজিত এসকল নিষ্ঠাবানদের বিরুদ্ধে যাতে কেউ কোন ধরনের অভিযোগ তুলতে নাপারে। কিংবা কুচক্রী শয়তানও যেন কোন সমস্যা সৃষ্টির সুযোগ না পায়। দাওয়াতের কাজে আত্মসমর্পিত এ সব পূণ্যবানদের প্রতীক হবে কেবল- পরম ইখলাস ও নিরেট একনিষ্ঠতা। সর্বকমের পার্থিব কামনা-বাসনা ও অনর্থক গোঁড়ামি, জিদ এবং আত্মতৃপ্তি ও আত্মগরিমা থেকে মুক্ত থাকা হবে তাঁদের অনন্য অসাধারণ বৈশিষ্ট্য।
‘রিদ্দাতুন ওলা আবাবাকরিনলাহা’নামকবইটি থেকে অনূদিত।
**অনুবাদক :- মুহাম্মদ মিনহাজউদ্দিন , শিক্ষার্থী জামেয়া দারুল মা‘আরিফ আল-ইসলামিয়া,চট্টগ্রাম।