ঈদের এখনো ঢের দেরি থাকলেও যাত্রী-চাপ সামলাতে এ বছর আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন বাস মালিকরা। তাই বেশ কর্মব্যস্ত এখন পরিবহন কারখানা ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। কয়েক মাস আগের লাগাতার হরতাল-অবরোধে বিকল হওয়া বাসগুলোর বড় একটি অংশ ঈদে রাস্তায় নামতে যাওয়ায়, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার কাজের চাপও বেশি যাচ্ছে শ্রমিকদের। এদিকে, পরিবহনের ফিটনেস প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় হবে না জানিয়ে সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ‘বিআরটিএ’ বলছে, অবৈধ যান চলাচল বন্ধে ঈদের আগে চলানো হবে বিশেষ অভিযান।
আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে অবিরাম চলছে ঝালাই কাজ। টুকরো টুকরো লৌহপাত জোড়া দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে রাজপথ কাঁপানো একেকটি বাহন। অবয়বে পূর্ণতা দিতে সমান তালে চলছে রঙ-তুলি আর মখমল আবরণে তৈরি হচ্ছে আরামদায়ক সিট। এতোসব তোড়জোড়ের উপলক্ষ একটাই, ‘ঈদ’। ঈদে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের সিংহভাগেরই বাহন থাকে ‘বাস’। মালিক সমিতির আনুমানিক হিসেবে এই সংখ্যা ৫০ লাখেরও বেশি। বিপুল সংখ্যক এই যাত্রীর চাপ সামাল দিতে প্রতিবছরের মত এবারও নতুন-পুরাতনের সমন্বয়ে মাঠে নামবে ‘ঈদের বিশেষ বহর’।
গাড়ির সারাইয়ের কাজ করছেন এমন শ্রমিকেরা জানালেন, নির্ধারিত সময়ের আগে নূতনগুলো প্রস্তুতে চলছে জোর প্রচেষ্টা। পাশাপাশি সারানো হচ্ছে পুরাতনগুলোর টুকটাক সমস্যাগুলোও। তাদের একজন বলেন, ‘১৫ রোজার মধ্যেই এসবের কাজ শেষ করতে হবে।’
এ বছরের শুরুতে টানা হরতাল-অবরোধ চলাকালে ভাংচুর ও বোমা হামলায় যেসব পরিবহন অকেজো হয়ে পড়েছিলো, ঈদ উপলক্ষে তার একটি রাড় অংশ ঠিকঠাক করে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালিকপক্ষ। আর এ কারণে অন্যান্য বছর থেকে এবার কাজের চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। যাত্রী চাপ সামলাতে এবার ঈদে পর্যাপ্ত সংখ্যক গাড়ি থাকছে বলে জানিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন। তবে মহাসড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বাসের শিডিউল বিপর্যয় হতে পারে বলে আশঙ্কা নেতাদের।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. আবুল কালাম বলেন, ‘রাস্তার দু’পাশে যদি বাজার না বসে, তবে যানজট কম হবে। আর যানজট কম হলেই গাড়ির ট্রিপ বেশি হবে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তিও কমবে।’
এদিকে, যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পরিবহনের ফিটনেস প্রশ্নে আরও কঠোর হচ্ছে বিআরটিএ। অনুমোদনহীন যান চলাচল বন্ধে ঈদ মৌসুমে বিশেষ অভিযান চালানো হবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা। বিআরটিএ’র পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা অভিযান চালাবো। গাড়ির ফিটনেস ও রুট পারমিট আছে কি না- তা দেখা হবে, কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।’
এছাড়া এবার ঈদে বাস ভাড়া বাড়ছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।