[review]বিবাহের মত চিরবন্ধনের সম্পর্ক আজকাল ঠুনকো হয়ে যাচ্ছ। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ছোট-খাটো বিষয়ে মতের অমিল হলেই সেই চিরবন্ধনটি ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত্ম নিচ্ছেন অনেকই। এসব বিষয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। কাজেই বিয়ের মত একটি গুরম্নত্বপূর্ণ সম্পর্ককেও এক মুহূর্তেই ভেঙে দিচ্ছেন অনেকে। এছাড়া যারা এই বন্ধনটি ছিন্ন করতে পারছেনন না কিংবা করতে চাচ্ছেন না তাদের মধ্যে অনেকেই আবার পরকীয়ার মত অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। ‘পরকীয়ার’ একটি বিষাক্ত সম্পর্ক। এই সম্পর্ক একটি সুখের সংসারকে নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে। কেউ নিজের ইচ্ছায় এই বিষাক্ত সম্পর্কের পথে পা বাড়ান আবার কেউ মনের অজান্ত্মেই জড়িয়ে পড়েন। মনের মত স্বামী কিংবা স্ত্রী না পেলে অনেকে সচেতন ভাবেই পরকীয়া করেন। আবার অনেকে একে অপরের কাছ থেকে অবহেলার শিকার হয়ে মনের অজান্ত্মেই অন্য কারো সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তবে যে কারণেই হোউক না কেন পরকীয়ার বিষ সংসারে ঢুকলে সুখ শান্ত্মি কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না। তখন বিয়ের মত একটি পবিত্র বন্ধনকেও বিষাক্ত মনে হয়। স্বামী কিংবা স্ত্রী কেউ কোনো পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়েছেন কিনা কয়েকটি লক্ষনেই তা বুঝা যায়। আসুন জেনে নেয়া যাক কি কি লক্ষনে স্বামী-স্ত্রী পরকীয়া সমন্ধে জানা যায়।
১। সঙ্গী যদি ফোন বা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েন আপনার প্রিয় সঙ্গীটি ফোনের পেছনে কতটা সময় ব্যয় করছেন সেদিকে নজর রাখুন। আপনারা একসাথে থাকলে কিংবা ঘুরতে গেলে যদি তিনি ফোন নিয়েই ব্যস্ত্ম থাকেন, মেসেজ বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং করেন- তাহলে তা নিশ্চিতভাবে অন্য একটি সম্পর্কেরই ইঙ্গিত। এছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময়ে তাকে যদি ফোনালাপে ব্যস্ত্ম পাওয়া যায় তাহলেও বিষয়টি লক্ষণীয়। অনেকে বলতে পারেন কাজের প্রয়োজনে মানুষ ফোন বেশি ব্যবহার করতেই পারে। কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখবেন, কাজের প্রয়োজনে ফোনালাপ এবং কারো সাথে প্রেমময় ফোনালাপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আর এই পার্থক্য বোঝার মত ক্ষমতাও বিবাহিত প্রত্যেক মানুষের হওয়া উচিত। শুধুমাত্র ফোন নয়, ফেসবুক কিংবা অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যমের প্রতি আসক্তির মাত্রার ওপরও নজর দেবেন।
২। তিনি যদি আপনার ও পরিবারের পেছনে কম সময় ব্যয় করেন তিনি যদি আপনাকে আগের চাইতে কম সময় দেয়া শুরম্ন করেন, তাহলে এটিও একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। খুব ভালো করে আপনার সঙ্গীর প্রতিদিনকার কাজকর্ম লক্ষ্য করম্নন। যদি বুঝতে পারেন যে আগের চাইতে কম সময় পাচ্ছেন, তাহলে বোঝার চেষ্টা করম্নন সেই বাড়তি সময়টা তিনি কীভাবে ব্যয় করছেন। আপনি তাকে সময় দেয়ার কথা বলে দেখুন, একসাথে বসে টিভি দেখার কথা বলুন, তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার আমন্ত্রন জানান, আত্মীয় স্বজনদের ও পারিবারিক বন্ধুদের সময় দেয়ার কথা বলুন। তিনি যদি আপনাকে অজুহাত দেখিয়ে না বলেন তাহলে জানার চেষ্টা করম্নন অজুহাতটি সত্যি কিনা। সঙ্গী যদি পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরম্ন করে বিনা কারণে, তাহলে ধরে নিতে পারেন তিনি পরকীয়ায় লিপ্ত।
৩। নতুন কোন নাম আপনার সঙ্গীটির মুখে যদি নতুন কোন একটি নাম ঘন ঘন শুনতে পান, তবে একেও পরকীয়ার লক্ষণ হিসেবে নিতে পারেন। সঙ্গীর যে বন্ধুটির কথা আগে কখনো শোনেননি, এমন কারো কথা ঘনঘন শুনলে তাকে জিজ্ঞেস করম্নন এবং তার মুখের ভাব লক্ষ্য করম্নন। যদি তিনি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান, কিংবা তার মুখের অভিব্যক্তি বদলে যায় তবে বিষয়টি অবশসই চিন্ত্মার।
৪। অকারণে রেগে যাওয়া আরও একটি বিষয় আছে যা বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। তা হল আপনার সঙ্গীর কথায় রাগের সুর। খেয়াল করে দেখুন তো, আগে যে বিষয়গুলো আপনার সঙ্গীর রাগের উদ্রেক করতো না সেসব বিষয়ে কি তিনি রেগে যাচ্ছেন? কিংবা কথায় কথায় আপনাদের দাম্পত্য জীবনকে অভিশাপ হিসেবে অভিহিত করছেন? তার এসব কথার কোন যুক্তি আছে কিনা এইসব ব্যাপারগুলো লক্ষ্য করম্নন। বিনা কারণে অযৌক্তিক রাগ করা, কিংবা সব সময় খিটখিট করা পরকীয়ার অন্যতম লক্ষণ।
৫। আপনার সাথে যৌনসম্পর্কে উদাসীনতা সঙ্গী যদি আপনার সাথে যৌনসম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেন তাহলে আপনি এটি পরকীয়ার নিশ্চিত লক্ষন হিসেবে ধরতে পারেন। যিনি অন্যের সাথে সময় কাটিয়ে আপনার প্রতি উদাসীন, তার মুখের অভিব্যক্তিই আপনাকে সব কথা বলে দেবে। আপনার সাথে সম্পর্ক স্থাপনে সঙ্গী আগ্রহী নন, অর্থাৎ তার চাহিদাটি পূরণ হচ্ছে অন্য কারো মাধ্যমে। এছাড়াও অভ্যাস বশত যৌন সম্পর্ক করছেন কিনা স্রেফ আপনাকে খুশি করতে, সেটিও লক্ষ্য করম্নন।
৬। আপনার প্রতিদিনের রম্নটিন খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করা এছাড়া খেয়াল করে দেখুন তিনি আপনার প্রতিদিনকার রম্নটিন সম্পর্কে হঠাৎ অতিরিক্ত নজর দিচ্ছেন কিনা অর্থাৎ আপনি কটায় বাড়ি ফিরবেন বা কোন কোন জায়গায় কখন যাবেন এই ধরনের প্রশ্ন করছেন কিনা। তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার চোখ এড়িয়ে নিরাপদে সম্পর্ক চালিয়ে যেতেই তার এত জিজ্ঞাসা।
৭। তিনি যদি হঠাৎ নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে অতিরিক্ত সচেতন হয়ে উঠেন আপনার স্বামী-স্ত্রী যদি হঠাৎ নিজের ত্বক, সাজগোজ, শারীরিক গঠন কিংবা পরিহিত পোশাক আশাকের দিকে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে শুরম্ন করেন, তাহলে আপনি একে পরকীয়ার একটি লক্ষণ হিসেবে ধরে নিতে পারেন। এখানে একটি বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া দরকার যে সঙ্গী আপনার জন্যই নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করছেন কিনা। কারন অনেক স্বামী-স্ত্রীই আছেন যারা দাম্পত্য জীবনে পুনরায় রোমান্স ফিরিয়ে আনতে এই পন্থা বেছে নেন। কিন্তু আপনি এই দ্বিধাবোধের অবসান করতে পারেন নিজেকে দুই থেকে তিনটি প্রশ্ন করে। আর তা হল, আপানার সঙ্গী কি আপনার পছন্দ অনুযায়ী নিজেকে উপস্থাপন করছেন? তিনি কি শুধুমাত্র আপনাকে দেখানর জন্যই বিশেষ পোশাক ও সাজগোজ করেন? আমাকে কেমন দেখাচ্ছে এই ধরনের প্রশ্ন আপনাকে করা হচ্ছে কিনা সেটাও লক্ষ্য করম্নন। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি “না” হয়, তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন আপনার সঙ্গী পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িত আছেন[review]